প্রতীকী ছবি
করোনায় আক্রান্ত হলেন একই হাসপাতালের এক চিকিৎসক সহ চারজন স্বাস্থ্যকর্মী। এখনও পর্যন্ত ভাঙড় ১ ব্লকের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালের একজন নার্স, একজন চিকিৎসক সহ মোট ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। এঁদের মধ্যে সম্প্রতি একজন নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
একের পর এক নার্স, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালের অন্য কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওই হাসপাতালে একজন নার্স করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন ওই চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। সকলের লালারস পরীক্ষা করা হয়। যদিও কারও কোনও উপসর্গ ছিল না।
রবিবার রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তাঁরা করোনায় আক্রান্ত। আপাতত করোনা আক্রান্ত তিন স্বাস্থ্যকর্মীকে ভাঙড় ২ ব্লকের ভোগালি সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসক ও একজন স্বাস্থ্যকর্মী নিভৃতবাসে রয়েছেন। ওই হাসপাতালের চারজন চিকিৎসকের মধ্যে একজন করোনায় আক্রান্ত। ৬ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মধ্যে ৪ জন আক্রান্ত।
এ ভাবে যদি করোনা-যোদ্ধারা আক্রান্ত হতে থাকেন, তা হলে হাসপাতালের পরিষেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে স্থানীয় মানুষের মনে। হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘‘সামান্য কয়েকজন কর্মী এখানে। তার মধ্যে একে একে স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের পরিষেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অথচ স্বাস্থ্য দফতর থেকে কর্মী দেওয়া হচ্ছে না। আগামী দিনে যদি অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন, তা হলে এই ব্লক এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা একেবারেই ভেঙে পড়বে।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি জেলায় জানান হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চার দিকেই কর্মী সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আপাতত এলাকার কয়েকজন গ্রামীণ চিকিৎসককে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাজাহান মোল্লা বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেনেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ওই হাসপাতালের কর্মী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি আমরা জেলাকে জানিয়েছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপাতত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রামীণ চিকিৎসকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’’
এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কর্মী সঙ্কটের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’