গ্রেফতারের পর ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র
এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠল চারজনের বিরুদ্ধে। গাইঘাটা থানার শিমুলপুর হাজরাতলা এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পঙ্কজ শিকারি (৪২)। রবিবার সকালে হাজরাতলা এলাকায় একটি জবাবাগানে তাঁর দেহ মেলে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, শনিবার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মদের আসরে তাঁকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় রবিবার রাতে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম কমল বিশ্বাস ও বাবু বিশ্বাস। কমল সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে গাইঘাটা থানায় কর্মরত। ২৪ অক্টোবর থেকে সে কাজে অনুপস্থিত ছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ধৃতদের সোমবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। নিহতের মেয়ে জয়িতা শিকারির অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পঙ্কজের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশের দাবি, ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে, মদের আসরে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিলেন পঙ্কজ। তাতেই মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। ভোরের দিকে পঙ্কজের দেহে কোনও সাড় ছিল না। ভয় পেয়ে তারা দেহ জবা বাগানে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল। সিঁড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার পর কেন তাঁকে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হল না? পুলিশকে ধৃতরা জানিয়েছে, সকলে নেশা করে থাকায় হুঁশ ছিল না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিমুলপুরের বাসিন্দা পঙ্কজ পেশায় কাঠমিস্ত্রি। তিনি বিবাহিত। কিন্তু স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁদের দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট মেয়ে জয়িতা একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বাবার সঙ্গেই থাকত। পঙ্কজের দাদা পরিমল বলেন, “শনিবার দুপুরে এলাকার তিন জন ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যেতে এসেছিল। আমি নিষেধ করেছিলাম। ওদের হাতজোড় করে বলেছিলাম, ভাই অসুস্থ।” পঙ্কজের বৌদি সন্ধ্যা বলেন, “আমি রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম যাতে দেওরকে ওরা নিয়ে যেতে না পারে। কিন্তু ওরা পিছনের দরজা দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। কাছেই একটি বাড়িতে বসে মদ খাচ্ছিল ওরা।” পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বাবুর বাড়ির দোতলায় মদের আসর বসেছিল। পরিমলের দাবি, “ভাইকে খুন করা হয়েছে। বাড়িতে খুন করে জবা বাগানে ফেলে রাখা হয়েছিল।” তবে কী কারণে পঙ্কজকে খুন করা হয়েছে, তা জানা নেই পরিবারের লোকজনের। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পঙ্কজ মদের নেশা করলেও তিনি এলাকায় কখনও ঝগড়া অশান্তি করতেন না। তাঁর কাছে টাকা থাকত। টাকার লোভে তাঁকে খুন করা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।