প্রতীকী ছবি
আক্রান্তের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। মহকুমায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ জনের। সংক্রমিতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কোনও কোনও দিন আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়াচ্ছে। কিন্তু রোগের সঙ্গে লড়ার পরিকাঠামো কি আদৌ আছে বসিরহাট মহকুমায়?
একটি কোভিড হাসপাতাল থাকলেও, সেখানে শয্যা-সংখ্যা মাত্র ২৮। ফলে হাসপাতালে বেড না পেয়ে রোগীদের ঠিকানা হচ্ছে হয় বারাসত, না হলে কলকাতা। এর ফলে কলকাতায় রোগীর ভিড় বাড়ছে।
অথচ, সেখানেও কোভিড হাসপাতালগুলিতে শয্যার টানাটানি। বেড না পেয়ে রোগীদের হয়রানি বাড়ছে। বসিরহাটের সর্বস্তরের মানুষের দাবি, এলাকায় কোভিড চিকিৎসার পরিকাঠামোর উন্নতি হলে রোগীদের হয়রানি কমবে। বসিরহাট শহরে একটি কোভিড হাসপাতালের দাবিও উঠছে গত কয়েক মাস ধরে।
বসিরহাট পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তপন সরকার বলেন, “মহকুমা তথা পুর-এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের পক্ষে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে, বসিরহাটের বদরতলার দু’টি হাসপাতালের একটি অথবা কোনও একটি বড় নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হোক। সেখানে যেন উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকে। স্যানিটাইজ় করার যন্ত্রও চাওয়া হয়েছে।”
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “গোপালপুরের কোভিড হাসপাতালে একটি এবং বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে দু’টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। বসিরহাটের মেরুদণ্ডি, হাসনাবাদ, হাড়োয়া এবং স্বরূপনগরে মোট চারটি সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে। আরও কয়েকটি করার পরিকল্পনা আছে। কোভিড রোগীদের জন্য ১১টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে।”
যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, বসিরহাট শহরের অদূরে গোপালপুরের কোভিড হাসপাতাল এবং বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন মিলিয়ে তিনটি ভেন্টিলেটর থাকলেও, তা পরিচালনা করার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স এবং টেকনিশিয়ান না থাকায় সেগুলির ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বসিরহাট জেলা হাসপাতালটিতে যেহেতু ভেন্টিলেটর চালানোর টেকনিশিয়ান রয়েছেন, সেই জন্য ওই হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হলে মানুষ উপকৃত হবেন। তবে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বলছেন, সাধারণ হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করা হলে অন্য রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হবে।
কংগ্রেস নেতা অমিত মজুমদার বলেন, “শহরে বেশ কয়েকটি বেসরকারি নার্সিংহোম আছে। হাড়োয়ার গোপালপুরে যদি একটি বেসরকারি নার্সিংহোম নিয়ে ২৮ শয্যার কোভিড হাসপাতাল করা যায়, তা হলে বসিরহাট শহরেও কোভিড হাসপাতাল হতে পারে।”
বিজেপি নেতা তারক ঘোষ এবং সিপিএম নেতা শ্রীদীপ রায়চৌধুরীরও বক্তব্য একই। তাঁদের কথায়, ‘‘বসিরহাটের মানুষের জন্য অবিলম্বে শহরে একটা কোভিড হাসপাতাল অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। গোপালপুরের মতো বসিরহাট শহরেও তো বেসরকারি নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতাল করা যায়। বসিরহাটের বদরতলায় তিনশো বেডের বসিরহাট মহকুমা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মধ্যে একটিতে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা করা যেতে পারে।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)