এল মনমাতানো ইলিশ। ছবি: দিলীপ নস্কর।
অবশেষে কাটল হা-হুতাশ। হাত খুলে ইলিশ খাওয়ার সুযোগ মিলতে চলেছে বাঙালির। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ১২০ টন ইলিশ এসেছে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারে। এই মরসুমে তো বটেই, গত কয়েক বছরে এত ইলিশ এক সঙ্গে আসেনি বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু পরিমাণেই নয়, গায়েগতরেও বড়সড় ইলিশ ধরা পড়েছে জালে। এক ব্যবসায়ী জানালেন, এত দিন ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ আসছিল। বড় মাছ তেমন ওঠেনি। তবে এ বার ৫০০-৭০০ গ্রাম তো বটেই, এক কেজি বা তারও বেশি ওজনের মাছ মিলেছে। ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের মাছের দাম পড়ছে কেজি প্রতি হাজার টাকা।
স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরে কার্যত ইলিশের আকাল চলছিল। অধিকাংশ সময়ে প্রায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছিল ট্রলারগুলিকে। বছর তিনেক আগেও ভাল মাপের প্রচুর ইলিশ নিয়ে সমুদ্র থেকে ফিরত ট্রলার। কিন্তু সেই ছবি দেখা যাচ্ছিল না অনেকদিন। ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন ট্রলার মালিকেরা। অনেক ট্রলার ক্ষতি এড়াতে মাছ ধরতে যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিল। অবশেষে ইলিশের সেই খরা কেটেছে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীদের একাংশ।
মঙ্গলবার মাছ ধরে ডায়মন্ড হারবার মৎস্যবন্দরে ফিরেছেন মৎস্যজীবী তপন জানা, বিমল দাসেরা জানালেন, এতদিন পরে ভাল মাছ ওঠায় তাঁরা খুশি। ইলিশের পাশাপাশি অন্যান্য মাছও উঠছে বলেও জানালেন তাঁরা।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, “দু’দিনে প্রায় ২০০টি ট্রলার বিভিন্ন ঘাটে ফিরেছে। সকলেই ভাল ওজনের মাছ পেয়েছে। সমুদ্রে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও পূবালি বাতাস থাকায় পরিস্থিতি বদলেছে। এই মাছের স্বাদও ভাল।” তিনি আরও বলেন, “কয়েক বছর ধরে সমুদ্রে মাছ পাওয়া যাচ্ছিল না। এক একটি ট্রলার সমুদ্র যেতে জ্বালানি, তেল, বরফ, খাওয়া-দাওয়া মিলিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। মাছ না মেলায় দিনের পর দিন লোকসানের বহর বাড়ছিল।”