অপরাধ: ফাঁদ পেতে ও তির মেরে শিকার করা হয়েছে এই বন্যপ্রাণীগুলিকে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
তির-ধনুক ও জাল নিয়ে প্রচুর বনবেড়াল, বেজি, কাঠবিড়ালি এবং পাখি হত্যা করার অভিযোগ উঠেছিল একটি দলের বিরুদ্ধে। শেষমেশ স্থানীয় মানুষ ও উত্তর ২৪ পরগনা বন দফতরের তৎপরতায় রবিবার অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বন্যপ্রাণী ও পাখি শিকার করে খেত তারা। বন্যপ্রাণ হত্যার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করেছে বন দফতর।
ধৃত ১০ জনকে সোমবার বসিরহাট আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। জেলা বনাধিকারিক অংশুমান মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতদের থেকে অস্ত্র ছাড়াও প্রচুর বিরল বন্যপ্রাণী ও পাখির দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে আর কারা এই কারবারে যুক্ত, তাদের খোঁজ করা হবে।’’
স্বরূপনগর থানার তেঁপুল মির্জাপুর পঞ্চায়েতের মেদিয়া ও পাড়ুই এলাকায় প্রচুর জলাশয় ও গাছ থাকায় সেখানে ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও দেশি পাখি। আসে পরিযায়ী পাখিরাও। স্থানীয় মানুষেরাই তাদের রক্ষা করেন, খেতে দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জলাশয় ও গাছের নীচে জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে, তির মেরে বন্যপ্রাণী ও পাখি শিকার করে দুষ্কৃতীরা। তাদের সঙ্গে কিছু নাবালক ও কিশোরও ছিল।
ধরা পড়ার পরে অভিযুক্তেরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই একজোট হন এলাকাবাসী। ঘটনাস্থলে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে অস্ত্র এবং এত প্রাণী ও পাখির দেহ দেখে উত্তেজনা ছড়ায়। বাসিন্দারাই অপরাধীদের আটকে রেখে স্বরূপনগর থানা ও বন দফতরে খবর দেন। জেলা বনাধিকারিকের হস্তক্ষেপে পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে।
মেদিয়ার বাসিন্দা মৃণাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এমনিতেই আমাদের এখানে বন্যপ্রাণী ও পাখির সংখ্যা দিন দিন কমছে। তাদের রক্ষা করতে আমরা যখন ঝাঁপিয়ে পড়েছি, তখন এত প্রাণী-হত্যা দেখে সকলে খেপে যান। কিন্তু আমরা আইন হাতে তুলে নিইনি। বন দফতর সহযোগিতা না করলে হয়তো অপরাধীরা পার পেয়ে যেত।’’
জেলা বনাধিকারিক অংশুমানবাবুর কথায়, ‘‘স্থানীয় মানুষ এ ভাবে প্রতিরোধ না করলে অপরাধীদের ধরা যেত না। আরও বহু প্রাণের ক্ষতি হয়ে যেত।’’