প্রতীকী ছবি।
মাস আটেকের এক শিশুপুত্রকে কুড়ি হাজার টাকায় কিনেছিলেন এক দম্পতি। কিন্তু পড়শিদের থেকে খবর পেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাইল্ডলাইন উদ্ধার করে ওই শিশুটিকে। শিশু কেনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে। ধৃতের নাম সমর ঘোষ। তবে তাঁর স্ত্রী সুলেখা মণ্ডল পলাতক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাইল্ডলাইন সূত্রের খবর, বুধবার নরেন্দ্রপুর থানার শ্রীখণ্ডের সর্দারপাড়া থেকে একটি ফোন আসে। জানানো হয়, তাঁদের পড়শি দম্পতি সমর ঘোষ ও সুলেখা মণ্ডল মাস আটেকের একটি শিশুকে মারধর করছেন। তাঁদের সন্দেহ, শিশুটি ওই দম্পতির নয়। পড়শিরা আরও জানান, ওই দম্পতি মাস দুই আগে এলাকায় ভাড়া এসেছেন। কিন্তু দিন ১৫ আগে হঠাৎই তাঁদের বাড়িতে ওই শিশুটিকে দেখা যায়। তাঁরা তাকে নিজেদের সন্তান বলে দাবি করেন। অথচ, এর আগে ওই দম্পতির সঙ্গে কোনও শিশু ছিল না।
খবর পেয়েই জেলার চাইল্ডলাইনের তরফে সুলগ্না মণ্ডল ভৌমিক ও নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কিন্তু তত ক্ষণে সুলেখা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। কারণ, আগেই পড়শিরা শিশুটিকে মারধর করা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। পুলিশ সমরকে গ্রেফতার করে এবং উদ্ধার করে শিশুটিকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাইল্ডলাইনের কোঅর্ডিনেটর অভিজিৎ বসু জানান, গ্রেফতারের পরে সমর জানিয়েছেন, তিনি আদতে হাওড়ার নাওদার বাসিন্দা। একটি মিষ্টির দোকানে কাজের জন্য নরেন্দ্রপুরে ভাড়া থাকেন। সারা দিন বাড়ি থাকেন না। ১৫ দিন আগে বাড়ি এসে দেখেন, স্ত্রী একটি বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন। সমর পুলিশকে জানান, আশ্রম থেকে বাচ্চাটিকে কুড়ি হাজার টাকায় কিনেছেন বলে স্ত্রী তাঁকে জানান। যদিও কোন আশ্রম থেকে, তা তিনি পুলিশকে বলতে পারেননি।
পুলিশ শিশু কেনার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রশ্ন, কোন আশ্রম কুড়ি হাজার টাকায় ওই শিশুকে বিক্রি করল? তা হলে কি ওই আশ্রমে শিশু কেনাবেচা চলে? পাশাপাশি সুলেখার গতিবিধিও পুলিশকে ভাবাচ্ছে। সত্যিই যদি তিনি শিশুটিকে কিনে এনে থাকেন, তা হলে তিনি কি জানতেন না যে, শিশু কেনা অপরাধ? নাকি ওই শিশুটিকে বেশি দামে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলেন? তাই পুলিশ আসার খবর পেয়েই পালালেন? আপাতত পুলিশ সুলেখাকে ধরার চেষ্টা করছে। তাঁকে ধরে ফেলতে পারলেই সব উত্তর এবং আশ্রমের খোঁজ মিলবে বলেই ধারণা পুলিশের।