Nabanna Rally for R G Kar Protest

নবান্ন অভিযান অশান্ত! গ্রেফতার ২২০, বুধবার বন্‌ধ ডাকল বিজেপি, ‘ছাত্র সমাজ’ ঘিরে নানান প্রশ্ন

আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। ‘অরাজনৈতিক’ এই কর্মসূচিকে ঘিরে তর্কবিতর্ক চলছে রাজনৈতিক মহলে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ২৩:০৭
Share:

আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নবান্ন অভিযান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযানে তুলকালাম পরিস্থিতি দেখা গেল মঙ্গলবার। ব্যারিকেড ভাঙা, ভাঙচুর, বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া ছাড়াও আন্দোলনকারী এবং পুলিশের মধ্যে জায়গায় জায়গায় সংঘর্ষ জখম হলেন দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন। নবান্ন অভিযানে গিয়ে গ্রেফতার হতে হয়েছে মোট ২২০ জনকে। শুধু কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ১২৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১০৩ জন পুরুষ এবং ২৩ জন মহিলা। রাজ্য পুলিশের হাতে ধৃতের সংখ্যা ৯৪। নবান্ন অভিযানে মোট ১৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই আন্দোলনের নেপথ্যে যে চক্রান্ত করা হয়েছিল সে সম্পর্কে তাঁদের কাছে ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য’ রয়েছে। পাশাপাশি, নবান্ন আন্দোলন ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ব্যানারে হলেও ‘প্রকৃত ছাত্র সমাজ’ এই অভিযানে ছিল না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘হিংসাত্মক আন্দোলন’ বাংলার ছাত্র সমাজ করবে না বলেই তাঁর বিশ্বাস। অন্য দিকে, রাতেই পুলিশ-প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর দাবি, বিচারের দাবিকে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস আর জলকামান দিয়ে দমিয়ে দিতে চেয়েছে পুলিশ। প্রশাসনের এই ভূমিকায় দেশের ভাবাবেগ ‘অপমানিত’ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। নবান্ন অভিযান কর্মসূচি যখন শেষের দিকে তখন বিজেপির তরফে ঘোষণা করা হয়, বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধের ডাক দিচ্ছে তারা। তার বিরোধিতা করে শাসকদল থেকে রাজ্য প্রশাসন আবার জানিয়ে দিয়েছে, বুধবার স্বাভাবিকই থাকবে বাংলার জনজীবন। সরকারি অফিস খোলা থাকবে। দোকানপাট খোলা রাখার পাশাপাশি বেসরকারি যান চলাচলও স্বাভাবিক রাখার আবেদন করা হয়েছে।

Advertisement

এত সব ঘটনার মধ্যেই দানা বাঁধছে ‘অন্য বিতর্ক’। আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছাত্র কত জন ছিলেন এবং কত জন রাজনৈতিক কর্মী এবং সমর্থক ছিলেন, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। বস্তুত, নবান্ন অভিযানের আগের দিন একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের তিন মুখ। তাঁদের মধ্যে নবদ্বীপের বাসিন্দা শুভঙ্কর হালদারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের পক্ষে একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল শ্লীলতাহানির মামলাও। তা নিয়ে প্রশ্ন শুনেই মেজাজ হারান শুভঙ্কর। আঙুল তুলে ‘চোপ’ বলে প্রশ্নকারীকে থামাতে চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশিই, চাপের মুখে স্বীকার করে নেন যে, তিনি আরএসএস-এর সদস্য। শুভঙ্কর বলেন, ‘‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক সংগঠন আরএসএস। আর সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক হিসাবে আমি গর্বিত।’’ শুভঙ্করের সঙ্গী সায়ন লাহিড়িও মেনে নেন যে, এক সময়ে তিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং পরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন শিক্ষকতা করলেও তিনি ছাত্র সমাজের মুখ। বস্তুত, কিছু দিন আগে থেকেই সমাজমাধ্যমে এমন প্রচার শুরু হয়েছিল যে, সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ না-করলে নবান্ন অভিযান হবে মঙ্গলবার। আর মঙ্গলবার সেই অভিযানের শুরুতেই যে বয়সি লোকজনকে নবান্নের অভিমুখে দেখা গিয়েছে, তাঁদের নিয়ে রাজনৈতিক মহল থেকে সমাজমাধ্যমে শুরু হয় টিপ্পনী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেউ বলছেন তিনি সায়েন্সের ছাত্র। তবে কমার্স নিয়ে পড়াশোনা করেন! আবার এক বৃদ্ধকে ছাত্র আন্দোলনে দেখে বাংলার ‘অ্যাডাল্ট এডুকেশন’ কত উন্নতি করেছে, তা নিয়েও সমাজমাধ্যমে মিমের স্রোত দেখা গিয়েছে।

নবান্ন অভিযানের শুরু এবং শেষ

Advertisement

অভিযানের শুরু থেকেই উত্তপ্ত হচ্ছিল পরিস্থিতি। পরে সাঁতরাগাছি, হাওড়া সেতু— সর্বত্র শুরু হয় গন্ডগোল। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। কয়েকটি জায়গায় পুলিশের ব্যারিকেড উপড়ে ফেলেন তাঁরা। পাল্টা তাঁদের বাধা দিতে গিয়ে জলকামান ছোড়ে পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। কয়েক জন আন্দোলনকারীর হাতে দেখা যায় জাতীয় পতাকা। কোনও কোনও জায়গায় আন্দোলনকারীদের জমায়েত হটিয়ে দিতে সমর্থ হয় পুলিশ। ক্রমশ হিংসাত্মক হতে শুরু করে আন্দোলন। হাওড়া সেতুর উপরে ইটের ঘায়ে মাথা ফাটে এক পুলিশকর্মীর। মাটিতে ফেলে লাঠিপেটা করা হয় এক পুলিশকর্মীকে। লাথিও মারা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যে আক্রান্ত পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করতে আন্দোলনকারীরাই এগিয়ে এসেছেন, এমন ছবিও দেখা গিয়েছে। অভিযান রুখতে হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থেকে নবান্নের উত্তর গেটের মধ্যে অনেক ছোট ছোট ব্যারিকেড করেছিল পুলিশ। কিন্তু সেগুলি ভেঙে দেন আন্দোলনকারীরা। নবান্নের খানিক দূরে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের একটি অংশের খণ্ডযুদ্ধও বাধে।

লালবাজারের সামনে বিজেপির পতাকা হাতে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

ধর্মঘটের ঘোষণা বিজেপির

মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র’দের বিক্ষোভে লাঠি চালায় পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস, জলকামান। এই অভিযোগ তুলে ‘ছাত্র সমাজ’-এর পাশে দাঁড়ায় বিজেপি। তাদের তরফে ঘোষণা করা হয়, ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ’ মিছিলে পুলিশের ‘দমনপীড়ন’-এর প্রতিবাদে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা বন্‌ধ পালন করবে তারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘আগামী পরশু (বৃহস্পতিবার) থেকে আমরা ধর্না শুরু করব। এ ছাড়াও ছাত্রসমাজকে সব রকম আইনি এবং মেডিক্যাল সাহায্য দেওয়ার জন্য আজ (মঙ্গলবার) থেকে হেল্পলাইন নম্বর চালু করছি আমরা। এখানে ফোন করে আপনারা আইনি সহায়তা কিংবা পরামর্শ চাইতে পারেন। আসুন, আগামী ৩০ অগস্ট আমাদের মহিলা মোর্চার ডাকে সকল মহিলা, সকল মানুষ পথে নামুন। এই আন্দোলন বিজেপির নয়, এটা সমাজের আন্দোলন।’’ নবান্ন অভিযান নিয়ে দুপুরের দিকে বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বহু জায়গা থেকে অত্যাচারের খবর আসছে।” রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমনপীড়ন না-চালানোর আর্জিও জানান তিনি। অন্যথায়, বুধবার ‘রাজ্য স্তব্ধ করে দেওয়ার’ হুঁশিয়ারিও দেন বিরোধী দলনেতা।

বিজেপির সমালোচনায় তৃণমূল

বিজেপির ধর্মঘট ঘোষণার অব্যবহিত পরেই কটাক্ষ করে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা ছাত্রদের আন্দোলন না সমাজবিরোধীদের আন্দোলন! এঁরা ছাত্র? সবাই দেখেছে কারা ব্যারিকেড ভাঙতে গিয়েছে।’’ তিনি পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘‘উন্মত্ত জনতাকে আটকাতে যেটুকু করা দরকার সেটুকুই করা হয়েছে। পুলিশ কোনও দমনপীড়ন চালায়নি। আবার এর পর পরই বাংলা বন্‌‌ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি! ওদের মুখোশ খুলে গিয়েছে।’’ পাশাপাশি, বন্‌ধের বিরোধিতা করে কুণাল জানান, ২৮ অগস্ট পশ্চিমবঙ্গের বুকে কোনও বন্‌ধ হবে না। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি চক্রান্তমূলক ভাবে বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। এই বন্‌ধের ডাক মানুষ ব্যর্থ করুন। সাধারণ মানুষ দেখেছেন বাংলা শান্ত। আরজি করে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এক জন গ্রেফতার হয়েছে। সেটাও করেছে কলকাতা পুলিশ। তদন্ত এখন সিবিআইয়ের হাতে। সেই ছুতোয় শকুনেরা অরাজকতা তৈরি করছে। অনেক বড় প্লট (পটভূমি) হয়েছে। এতে পা দেবেন না।”

নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশ

নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি শেষ হলে সাংবাদিক বৈঠক করেন এডিজি ( দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। সুপ্রতিম বলেন, ‘‘ছাত্র সমাজের আন্দোলনের নামে তাণ্ডব হয়েছে। তাণ্ডব ছাড়া আর কী বিশেষণ ব্যবহার করা যায় জানি না। তাণ্ডবও বোধহয় নরম বিশেষণ।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আজ (মঙ্গলবার) প্রচুর মানুষ কাজে বেরিয়েছেন। কর্মব্যস্ত দিন। পুলিশ কোনও ফাঁদে পা দেয়নি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বজায় রাখতে বলপ্রয়োগ করেছে। ১১ থেকে ১২ জন সহকর্মী (পুলিশ) আহত হয়েছেন। প্রকৃত ছাত্রসমাজ এই অসভ্যতা করবে বলে মনে হয় না। নেপথ্য কোনও শক্তির ইন্ধনে এই অশান্তির ঘটনা ঘটল।’’ নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও বন্‌ধ মানা হবে না। আলাপনের পর মমতার মন্ত্রিসভার চার সদস্য আরও একটি সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের নামে অশান্তি পাকানোর পর বুধবার বন্‌ধের নামে আরও একটি অরাজকতা তৈরির ছক কষেছে বিজেপি।

নবান্ন অভিযানে উত্তেজনা।

বিজেপির ধর্মঘট, তৃণমূলের কর্মসূচি

বুধবার বিজেপি বন্‌ধ ডেকেছে। বুধবারই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর প্রতিষ্ঠা দিবস। বস্তুত, শাসকদলের ওই কর্মসূচি হতে চলেছে রাজনৈতিক সংঘাতের আবহে। আরজি কর-কাণ্ডের পরে বুধবার প্রথম বার একই মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি বছর ২৮ অগস্ট টিএমসিপি-র সমাবেশ হয় মেয়ো রোডে। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে রাজ্যের যে পরিস্থিতি, তাতে মমতা এবং অভিষেক ছাত্র সংগঠনের মঞ্চ থেকে কী সাংগঠনিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক বার্তা দেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মহল।

নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্যপাল

মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের আগে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস একটি বার্তায় জানান, সাধারণ মানুষের সম্মিলিত এই প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে তাঁর সমর্থন থাকবে। অভিযান শেষে রাজ্যপাল জানান, মঙ্গলবার কলকাতায় যে চিত্র তিনি দেখলেন, তা আশা করেননি। তিনি বলেন, ‘‘বিচারের দাবিতে আন্দোলনে কোনও দলীয় পতাকা ছিল না। বরং অনেকের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা।’’ পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘জাতীয় ভাবাবেগ, জাতীয় পতাকা এবং দেশ অপামানিত হয়েছে। বিচারের দাবিকে দমিয়ে রাখতে পুলিশ ব্যবহার করেছে লাঠি এবং জলকামান।’’

নবান্ন অভিযানে আহত পুলিশ।

এবং আরজি কর

আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের বাইক আগেই বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই সেই তদন্তভার হাতে নিলে তাদের হাতে সেই বাইক তুলে দেওয়া হয়। কলকাতা পুলিশ এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট দিয়ে দাবি করে, এই বাইক নিয়ে সমাজমাধ্যমে কয়েক জন ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা পুলিশ যে সব সরকারি যানবাহন ব্যবহার করে, তা সবই নথিভুক্ত থাকে পুলিশ কমিশনারের নামে। তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছিল, আরজি কর হাসপাতালে যে দিন চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে, সে দিন ওই বাইকে চেপেই গিয়েছিলেন ধৃত। অন্য দিকে, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে মঙ্গলবারও সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ নিয়ে টানা ১১ দিন।

নবান্ন আন্দোলনের খোঁজ নিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা

তখন নবান্ন অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা এবং হাওড়ার প্রায় সব রাস্তাতেই নেমে পড়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেই সময় বাড়িতেই ছিলেন আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজের ধর্ষিতা এবং মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা। মেয়ের মৃত্যুর ১৭ দিন পরেও বাবা-মা জানতে পারেননি ধর্ষক এবং খুনি ঠিক কে বা কারা। তদন্তের গতিপ্রক্রিয়া সম্পর্কেও সন্দিহান তাঁরা। তার মধ্যেই নবান্ন অভিযানের খোঁজখবর রেখেছেন প্রৌঢ় দম্পতি। আনন্দবাজার অনলাইনকে নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা ফোনে বলেন, ‘‘গতকাল (সোমবার) স্টুডেন্টরা (পড়ুয়ারা) আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। যা বলার ওঁদের বলে দিয়েছি।’’তাঁদের মেয়েকে নিয়ে যাতে রাজনীতি না হয়, তা নিয়েও চিন্তায় প্রৌঢ় ওই দম্পতি। ছাত্র এবং নাগরিক আন্দোলনের মাধ্যমে মেয়ের ধর্ষণ এবং খুনের বিচার আদায় করা যাবে বলেও আশাবাদী তাঁরা। নির্যাতিতার মা আগেই জানিয়েছিলেন, মেয়েকে হারানোর পর যে ভাবে জুনিয়র চিকিৎসক থেকে ছাত্র-যুবরা পথে নেমেছেন, তাতে আস্থাশীল তাঁরা। রাজ্য প্রশাসনের হাত থেকে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা আশাবাদী হলেও নিশ্চিন্ত নন। পাশাপাশি তাঁদের মেয়েকে নিয়ে যাতে রাজনীতি না হয়, তা নিয়েও চিন্তায় প্রৌঢ় ওই দম্পতি। ছাত্র এবং নাগরিক আন্দোলনের মাধ্যমে মেয়ের ধর্ষণ এবং খুনের বিচার আদায় করা যাবে বলেও আশাবাদী তাঁরা।

ছবি: পিটিআই এবং সারমিন বেগম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement