ধর্না মঞ্চেই ‘লক্ষ্মীপুজো’ ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের। এক প্রতিবাদী চাকরিপ্রার্থী সেজেছেন লক্ষ্মী ঠাকুর। পুরোহিতও এক চাকরিপ্রার্থী। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ
পুজো পেরোলেই প্রাথমিক শিক্ষকের ১১ হাজার শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দিয়েছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে চাইছেন না ২০১৪ সালে টেট পাশ করেও মেধা তালিকায় ঠাঁই না-পাওয়া চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৭ সালের টেট পাশ করা প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁরা কেন ওই নিয়োগের প্রতিযোগিতায় নামবেন? সরাসরি চাকরি না-দিলে ফের আইনি লড়াইয়ে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, ২০১৪ সালের টেট দুর্নীতি আদালতে স্পষ্ট হয়েছে। তা হলে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত প্রার্থীদের কেন ফের প্রতিযোগিতায় নামতে হবে সেই প্রশ্ন তুলেছে তাঁরা।
পুজোর আগেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক টেট পাশ প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীরা ২১ অক্টোবর থেকে পর্ষদের ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারবেন। সেই নিয়োগের ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়ে কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর বক্তব্য, ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৪ সালের ২০ হাজার টেট পাশ করা এবং শিক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের ধাপে ধাপে নিয়োগ হবে। প্রথম ধাপে ১৬ হাজার ৫০০ পদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল।
অচিন্ত্য সামন্ত নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “আমরা আরটিআই করে জানতে পেরেছি, ১৬৫০০-র মধ্যে ৩৯০০ পদে নিয়োগ বাকি আছে। তা হলে এই ৩৯০০ প্রার্থীকে নিয়োগ করা হোক। এবং বাকি যে প্রার্থীরা পড়ে থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো তাদেরও সিট বাড়িয়ে নিয়োগ করা হোক।”
চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের মতে, চাকরির দাবিতে আন্দোলন করতে করতে ৪০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তাঁরা তো আবেদনই করতে পারবেন না! অথচ তাঁদের কোনও দোষ ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা কেন তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত হবেন?
চাকরিপ্রার্থীরা আরও জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি অন্যতম বিষয় হল অ্যাকাডেমিক স্কোর। চূড়ান্ত নিয়োগ তালিকায় ঠাঁই পাওয়ার ক্ষেত্রে এই নম্বর গুরুত্বপূর্ণ। সে দিক থেকে ২০১৭ সালের প্রার্থীদের তুলনায় ২০১৪ সালের প্রার্থীরা অ্যাকাডেমিক স্কোরে পিছিয়ে পড়বেন। কারণ, ২০১৭ সালে যে ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছে তাতে নম্বর তোলা সহজ ছিল।
তবে ১১ হাজার শূন্য পদ বলা হলেও তার সব পদই ইন্টারভিউয়ের জন্য বরাদ্দ থাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ, আদালতের নির্দেশে যাঁরা চাকরি পাচ্ছেন তাঁদের এই ১১ হাজার শূন্য পদ থেকেই চাকরি দেওয়া হচ্ছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে। তা হলে বাস্তবে তো শূন্য পদ কমতে থাকবে? এ বিষয়ে পর্ষদকে প্রশ্ন করা হলে তাদের তরফ থেকে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।