বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল সমর্থক মুক্তার আহমেদের। নিজস্ব চিত্র।
রাজনীতি থেকে তাঁদের অবস্থান শত যোজন দূরে। বোমার ঘায়ে তেমন দুই ব্যক্তির প্রাণ গেল ভাটপাড়ার বারুইপাড়ায়। সোমবার রাতের ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও চার জন।
তৃণমূলের দাবি, মৃতেরা তাঁদের দলের সমর্থক ছিলেন। যদিও তাঁদের পরিবারের লোকেরা সে কথা স্বীকার করেননি। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির গুন্ডাবাহিনী তাঁদের খুন করেছে। বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জগদ্দল থানার পুলিশ এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মহম্মদ হালিম (৬২) এবং মহম্মদ মোক্তার (৪৫)। জখম হয়েছেন হালিমের স্ত্রী রুবি পারভিন এবং দুই ছেলে পারভেজ আলম, তারভেজ আলম এবং প্রিন্স নামের এক তরুণ।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মৃত দু’জনের পরিবারের এক জন করে সদস্যকে চাকরির আশ্বাস দিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে তাঁদের পরিবারের হাতে ১ লক্ষ টাকা করে তুলে দিয়েছি।’’
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজনৈতিক হানাহানিতে অশান্ত ভাটপাড়া-সহ ব্যারাকপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। সোমবারের ঘটনার পর আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে বাড়ির বাইরে বসেছিলেন হালিম ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। সঙ্গে ছিলেন পড়শি মোক্তার এবং প্রিন্স। হালিমের পড়শি জামিল আনসারি বলেন, ‘‘আচমকা পিছন থেকে কয়েক জন দুষ্কৃতী হামলা চালায়। একটি বোমা লাগে হালিমের মাথায়। আর একটি বোমা তার পাশেই ফাটে। তাতে জখম হন বাকিরা। বোমার আঘাতে তারভেজের ডান চোখ উড়ে গিয়েছে।’’ তারভেজ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, জখমদের প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পারভেজ তাঁর মা এবং প্রিন্সকে সেখান থেকে মঙ্গলবার ছেড়ে দেওয়া হয়। মোক্তারকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
কেন এই হামলা? হালিমের ছেলে পারভেজ বলেন, ‘‘আমরা রাজনীতি করি না। যে দলকে পছন্দ তাদের ভোট দিই। কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা নেই। সমাজবিরোধীরা রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’’ তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যামের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা সকলেই বিজেপির আশ্রয়ে রয়েছে।
ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। ব্যক্তিগত সংঘাত থেকে ঘটতে পারে। দিন কয়েক আগে ওই এলাকায় বোমাবাজি হয়েছিল বলে শুনেছিলাম। এটা তার পাল্টা হতে পারে।’’
মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মন্ত্রী সুজিত বসু, পূর্ণেন্দু বসু, তাপস রায়, বিধায়ক পার্থ ভৌমিক তৃণমূল নেতা মদন মিত্র মৃতদেহ নিয়ে এলাকায় যান।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।