Accident

পোলবার দুর্ঘটনায় ২ পড়ুয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক

হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রচুর পাঁক ঢোকায় দু’জনেরই ফুসফুস প্রায় কাজ করছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পোলবা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৯
Share:

কলকাতার পথে ঋষভ। নিজস্ব চিত্র

একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে উল্টে গেল পুলকার। জখম হল ১৬ জন খুদে পড়ুয়া। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর। পুলকার-চালকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে হুগলির পোলবায়, দিল্লি রোডে। পরে বছর আটেকের দুই পড়ুয়া ঋষভ সিংহ, দিব্যাংশু ভগতকে ‘গ্রিন করিডর’ তৈরি করে হুগলি থেকে এসএসকেএম ট্রমা সেন্টারে পাঠানো হয়।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রচুর পাঁক ঢোকায় দু’জনেরই ফুসফুস প্রায় কাজ করছে না। তাদের চিকিৎসার জন্য চেস্ট মেডিসিন, কার্ডিয়ো-থোরাসিক, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, নিউরো সার্জারি, সিসিইউ-সহ সাত বিভাগের চিকিৎসককে নিয়ে সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ড জানাচ্ছে, দু’জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিশেষত ঋষভের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। এ জন্য রাতে ‘এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন’ পদ্ধতি (বাইরে থেকে পাম্পের সাহায্যে, কৃত্রিম ফুসফুসের মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা ঠিক রাখা, গ্রাফিক পৃঃ ৩) চালু করা হয়েছে। এর আগে এসএসকেএমে কোনও শিশুর উপরে এই চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়নি। দুই বালকের খোঁজ নিতে এসএসকেএম সুপারকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার সকালে স্কুলগাড়িটি শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটী-সহ নানা জায়গা থেকে পড়ুয়াদের নিয়ে চুঁচুড়ার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল। গাড়িতে ১৬ জ‌ন পড়ুয়া ছিল। পোলবার সুগন্ধ্যার কামদেবপুরে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

Advertisement

গ্রিন করিডর

• চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম
• দূরত্ব: ৫৮ কিলোমিটার
• সময়: শুক্রবার সকাল ১১টা ৬মিনিটে ঋষভকে নিয়ে রওনা হয় অ্যাম্বুল্যান্স ১১টা ৫৮-য় এসএসকেএমে পৌঁছয়
• দিব্যাংশুকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ১১টা ৩৭ মিনিটে রওনা দিয়ে ১২টা ৪১ মিনিটে পৌঁছয় এসএসকেএমে
• দু’জনেই ভেন্টিলেশনে

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুলকারটি খুব জোরে চলছিল। সামনের দিক থেকে আসা একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সটান নয়ানজুলিতে পড়ে সেটি উল্টে যায়।

পুলিশ জানায়, পড়ুয়াদের সকলেই অল্পবিস্তর আহত। নোংরা জল, পাঁক পেটে চলে যায় অনেকের। স্থানীয় বাসিন্দারা চালক ও শিশুদের উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠান। ১৩ জন পড়ুয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ঋষভ, দিব্যাংশু, শিশুশ্রেণির অমরজিৎ সাহা, পুলকার-চালক পবিত্র দাসকে আইসিইউয়ে ভর্তি করানো হয়। ঋষভের বাবা সন্তোষ সিংহ শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর। পরে পবিত্রকেও এসএসকেএমে পাঠানো হয়।

শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশের থেকে তিনি জেনেছেন, পুলকারটি খুব জোরে চলছিল। অভিভাবকেরা তাঁকে জানান, সকাল পৌনে ৬টা নাগাদ পুলকারটি প্রথম পড়ুয়াকে তোলে। এ দিন আধ ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাই গাড়ি দ্রুতগতিতে চলছিল।

হুগলির (গ্রামীণ) এসপি তথাগত বসু বলেন, ‘‘গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হবে। অতিরিক্ত গতির জন্যই দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে।’’ পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে গাড়িটির ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement