ব্যারাকপুর কমিশনারেটের সামনে বিজেপির বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
কাঁকিনাড়ায় গুলি, বোমাবাজি ও সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ১৪ জন। এলাকায় এখনও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। কমব্যাট ফোর্স ও র্যাফ টহল দিচ্ছে রাস্তায়। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই এলাকা থমথমে। শুক্রবারের ছবিটাও এক। অল্প কিছু সংখ্যক দোকানপাট খুললেও, রাস্তায় লোকজন খুব একটা নেই। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
এ দিকে, এই সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সাংসদ অর্জুন সিংহের নেতৃত্বে শুক্রবার ভাটপাড়া থানা ও ব্যারাকপুর কমিশনারেট ঘেরাও করে বিজেপি। ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ার ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন অর্জুন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশই গুলিতেই কাঁকিনাড়ায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। বিজেপি সূত্রে খবর, বিকেলে দু’জনের মৃতদেহ নিয়ে এলাকায় মিছিল করবে তারা। এই দুটো ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়।
বৃহস্পতিবার দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কাঁকিনাড়া। গুলিতে মৃত্যু হয় রামবাবু সাউ (১৭) এবং ধর্মবীর সাউ (৪০) নামে দু’জনের। বোমা ও গুলির আঘাতে বেশ কয়েক জন আহত হয়ে এখনও হাসপাতালে ভর্তি। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশের ছোড়া গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই দু’জনের। যদিও পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। নিজস্ব চিত্র।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সরিয়ে দেওয়া ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরীকে। গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত করা না যায়, সে কারণে বনগাঁ এবং ব্যারাকপুর মহকুমায় ইন্টারনেট-পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঁকিনাড়ায় নিহত দুই, জারি ১৪৪ ধারা, বন্ধ ইন্টারনেট, পুলিশ ও বিজেপির চাপান-উতোর
আরও পড়ুন: মারলে পাল্টা মার: দিলীপ, বিজেপিরই দ্বন্দ্ব বললেন জ্যোতিপ্রিয়
ভোটের পর থেকেই ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া এলাকায় অশান্তি বেড়েই চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি দিনই ওই এলাকায় বোমাবাজি হয়। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই সেই অশান্তি চরমে ওঠে। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমন ঘটনা বার বার ঘটলেও পুলিশ তা রুখতে কোনও পদক্ষেপই করেনি।
একই অভিযোগ তুলে বিজেপির দাবি, তৃণমূল বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এনে এলাকায় অশান্তি পাকাচ্ছে। বৃস্পতিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে ভাটপাড়ার সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বলছেন ঠিকই। কিন্তু পুলিশ যদি নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করে তা হলে দু’দিনেই এলাকা ঠান্ডা হয়ে যাবে।” পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল ও পুলিশই এলাকায় অশান্তির সৃষ্টি করছে।