সাংবাদিক বৈঠকে মমতা।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনে কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ভাতা বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের আওতায় আগে বাংলার কৃষকরা বছরে পাঁচ হাজার টাকা পেতেন। এ বার তা বেড়ে ১০ হাজার টাকা করা হল। ছ’মাস অন্তর পাঁচ হাজার টাকা করে পাবেন কৃষকরা। বৃহস্পতিবার থেকেই জেলায় জেলায় কৃষকদের হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হবে, সাংবাদিক বৈঠকে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, ক্ষেতমজুর ও বর্গাদারদের আগে বছরে ন্যূনতম দু’হাজার টাকা করে দেওয়া হত। সেই ভাতাও বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করলেন মমতা।
কেন্দ্রকে বিঁধে মমতা বলেন, ‘‘দিল্লি সীমান্তে গত ৬ মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চলছে, তাও কেন্দ্রের সে বিষয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই। কেন্দ্রের কৃষক প্রকল্পে টাকা পান না চাষিরা। কেন্দ্রের কৃষি প্রকল্পে ন্যূনতম দু’একর জমি থাকলে তবেই টাকা পাওয়া যায়। কেন্দ্র ক্ষেতমজুর ও বর্গাদারদের টাকা দেয় না। বাংলাই ব্যতিক্রম। এখানে সবাই ভাতা পায়। যাঁদের এক-দু’কাটা জমি, তাঁরাও বছরে চার হাজার টাকা পাবেন। এখানে কৃষকদের আয় তিনগুণ বেড়েছে। কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ভাতা বৃদ্ধিতে রাজ্যের অন্তত ৬০ লক্ষ চাষি উপকৃত হবেন। শুধু চাষিরাই নন, অন্তত ৬২ লক্ষ ক্ষেতমজুর ও বর্গাদার এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন।’’
আগেই রাজ্যের কৃষক প্রকল্পের আওতায় আসতে গেলে জমির নথি দেখাতে হত চাষিদের। বৃহস্পতিবার মমতা জানান, ‘‘এখন আর জমির নথি দেখানোর প্রয়োজন পড়ে না। হলফনামা পেশ করলেই হয়।’’
কাজের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন-
১। কৃষক বার্ধক্যভাতা ৭৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে।
২। উপকৃত কৃষকের সংখ্যা ৬৬ হাজার থেকে বেড়ে ১ লক্ষ হয়েছে।
৩। শস্য বিমার প্রিমিয়াম বাবদ ৭০০ কোটি টাকা দেয় রাজ্য সরকার।
৪। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকদের ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে সরকার।
৫। রাজ্যে ১৮৬টি কৃষক মান্ডি তৈরি হয়েছে।
৬। ৫০ লক্ষের বেশি জমি স্বাস্থ্য কার্ড দেওয়া হয়েছে।
৭। কম খরচে কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়ার দেওয়া হয়।
৮। ৫০ হাজার একর পতিত জমিতে এখন কৃষিকাজ, মাছচাষ এবং পশুপালন হয়।
৯। ইয়াস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ২ লক্ষ কৃষককে নোনা স্বর্ণ ধান দেওয়া হয়েছে।
১০। ঘূর্ণিঝড়ের বিপর্যয়ের পর দুয়ারে ত্রাণ চালু হয়েছে।