ফাইল ছবি
চিকিৎসার গাফিলতিতে এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় বেহালার একটি হাসপাতাল, তার সুপার এবং দুই চিকিৎসককে মোট ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দিল কলকাতা (দক্ষিণ) জেলা ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন। প্রেসিডেন্ট শশীকলা বসু এবং সদস্য ধীরাজকুমার দে-র বেঞ্চের নির্দেশ, ওই টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে মৃতার ছেলে পাবেন। এ ছাড়াও, দুই চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মামলার খরচ বাবদ আরও ১৫ হাজার টাকা মৃতার ছেলেকে দিতে হবে। সুনীতা জয়সওয়াল নামে ওই মহিলা বিধবা ছিলেন। সে সময় তাঁর ছেলে নাবালক হওয়ায় সুনীতার বোন নীতা সিংহ ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিলেন।
নীতার আইনজীবী সুরজিৎ খাঁড়া এবং প্রদীপ দাস জানান, সুনীতার পেটে অ্যাপেনডিসাইটিসের যন্ত্রণা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৫ মে বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। ২৭মে তাঁর মাইক্রো-সার্জারি করা হয়। অস্ত্রোপচার শেষে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। ২৮ মে অবস্থার আরও অবনতি হলে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসক সুনীতার পরিবারকে জানান, অস্ত্রোপচারের সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে তিনি সম্পূর্ণ অচেতন ছিলেন। ৯ জুন পর্যন্ত একবালপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। আর্থিক কারণে সুনীতাকে ৯ জুন ঠাকুরপুকুরের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ২০১৩ সালে ১৪ জুন সেখানেই মারা যান সুনীতা। এর পরেই হাসপাতাল, অস্ত্রোপচারকারী সার্জেন এবং অ্যানাস্থেটিস্টের বিরুদ্ধে মামলা করেন নীতা।
মৃতার বোন পরিবারের সদস্য না-হলে মামলা করা যায় না, এই যুক্তি দেখিয়ে বিবাদী পক্ষ জেলা, রাজ্য এবং জাতীয় কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু সেই যুক্তি টেকেনি। জেলা কমিশনে শুনানিতেও নিজেদের পক্ষে নানা যুক্তি দেখিয়েছিলেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা। কিন্তু কমিশনের পর্যবেক্ষণ, অস্ত্রোপচার শেষে কেন রোগীকে নিরাপদে সচেতন অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়নি, তার ব্যাখ্যা হাসপাতাল এবং চিকিৎসকেরা দেননি। অ্যাপেনডিসাইটিসের যন্ত্রণা ছাড়া অন্য কোনও সমস্যা না থাকা
সত্ত্বেও সুনীতা মারা যাওয়ায় অ্যানাস্থেটিস্টের গাফিলতিকেই দায়ী করেছে কমিশন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।