ঠাকুরপুকুরে ‘পূর্বাশা’ হোম থেকে উদ্ধার করে দশটি শিশুকে পাঠানো হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে থেকে শনিবার তারা গেল সরকারি হোমে।
জোকার ইএসআই হাসপাতালে এ ক’দিন ছিল ওই শিশুরা। সুপার সমীর চৌধুরী বলেন, ‘‘সকলেই অপুষ্টির শিকার। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই। আমরা সব ক’টি শিশুর শারীরিক অবস্থা কেমন তা সিআইডি অফিসারদের জানিয়েছি।’’
এ দিন অ্যাম্বুল্যান্সে করে দশটি শিশুকে হোমে নিয়ে যান সিআইডি অফিসারেরা। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ওই শিশুগুলির মধ্যে একজনকে দেহের গঠন দ্রুত ভাল করার জন্য নানা ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে তার দেহে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। নজর রাখা দরকার।’’
শিশু বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, মাতৃহীন শিশুর শারীরিক ও মানসিক গঠন তৈরিতে নানা সমস্যা দেখা যায়। ওই শিশু বড় হওয়ার পরে নানা সংক্রমণ বা মস্তিকের রোগের শিকার হতে পারে। শিশু বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষের কথায়, ‘‘শুধু মায়ের দুধ নয়, জন্মের পরে মায়ের কাছে থাকাটাও শিশুর পক্ষে জরুরি। শিশু মস্তিকের গঠনের পিছনে মায়ের সান্নিধ্যের ভূমিকা আছে।’’ এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, শিশু সব সময়ে নিশ্চিন্ত আশ্রয় খোঁজে। মায়ের কোলই তার কাছে একমাত্র সেই আশ্রয়। হোমের পরিবেশে যা পাওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করেন অপূর্ববাবু। কারণ, একেকটি শিশুর জন্য একজন করে মহিলা রাখা কার্যত অসম্ভব। তবে তাঁর মতে, ওই শিশুদের সব সময় দেখভালের প্রয়োজন আছে। না হলে ভবিষ্যতে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। শিশু বিশেষজ্ঞ প্রবাল নিয়োগী বলেন, ‘‘চিকিৎসকের সাহায্যে নিয়মিত নজরদারিতে রাখা দরকার ওই শিশুদের। পান থেকে চুন খসলেই কিন্তু বিপদ।’’
শনিবার দুপুরে হুগলির ভদ্রেশ্বরে দর্জি মোড়ের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে এক সদ্যোজাত শিশুকন্যার দেহ। দিল্লি রোডের কাছে একটি রঙের কারখানার পাশে কালো রঙের ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় মানুষদের। পুলিশ এসে ওই ব্যাগ থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার করে।
এ দিনই শিশু পাচার-কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বহরমপুরে দলের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় শিশু পাচার নিয়ে যখন শোরগোল চলছে, মুখ্যমন্ত্রী তখন ৫০০-১০০০ টাকার নোট ফেরতের জন্য পটনা-লখনউ ছুটে বেড়াচ্ছেন। এ থেকেই প্রমাণ হয়, সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির অভাবেই শিশু পাচার ঘটেছে।’’