সমাজের ছুঁৎমার্গকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের স্বপ্নের জীবনে প্রবেশ করলেন কেরলের সমকামী যুগল। ছোটবেলার বন্ধু আদিলা এবং নাসরিন বা নুরা। তাঁদের বিয়ের সাজই এখন ভাইরাল সমাজ মাধ্যমে।
সম্প্রতি তাঁরা নিজেদের জীবন নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। জানিয়েছেন, সেই সময় থেকেই তাঁদের পরস্পরের প্রতি ভাললাগা তৈরি হয়। সেই ভাল লাগাই ধীরে ধীরে ভালবাসা পরিণত হয়। পরবর্তীকালে তাঁরা ঠিক করেন একে অপরের সঙ্গে জীবনসঙ্গী হিসাবেই থাকবেন।
তবে পথটা ততটাও সহজ ছিল না তাঁদের জন্য। শুরুতে বিষয়টি জানাজানি হতে দুই পরিবারই এই সম্পর্কের বিরোধিতা করে। মা-বাবা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও আপত্তি জানান এই সম্পর্কে।
শুধু পারিবারিক ক্ষেত্রেই নয়, একে একে আসতে থাকে বিভিন্ন সামাজিক বিপত্তি। সেই সব কিছুকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে রুখে দাঁড়ান দু’জনে।
পরিস্থিতি ঘোলাটে হতেই তাঁরা দারস্থ হন কেরল হাইকোর্টের। তাঁদের এক সঙ্গে থাকার অনুমতি দেয় আদালত। এর পরে পথ খানিকটা হলেও সহজ হয়।
সম্প্রতি বিয়ের সাজে একটি ফটোশ্যুট করেন তাঁরা। সেই ফোটোশুট মুহূর্তে ভাইরাল হয় সমাজ মাধ্যমে। কখনও কটাক্ষ, কখনও বা বাহবা — এই যুগল তাঁদের সম্পর্কের কথা নিয়ে অকপট। কোনও রকম ভনিতা ছাড়াই প্রকাশ্যে তাঁদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।
সুন্দর লেহঙ্গায় সেজেছিলেন দু’জন। সঙ্গে ছিল মানানসই গয়না। ছবিতেই স্পষ্ট দু’জনের রসায়ন। প্রাইড রঙের কেকও কাটেন যুগল।
তাঁদের এই দৃঢ় পদক্ষেপ বহু মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকে শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠিয়েছেন যুগলকে। অনেকে লিখেছেন, “এই সাহসী যুগল সত্যিই খুব সুন্দর জীবন কাটাবেন।”
তাঁদের এই সাজের পরে আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা বিয়ে করে নিলেন কি না? জানা যায় এখনও পর্যন্ত তাঁরা বিয়ে করেন নি। তবে এরকমই পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এই ফোটোশুট তার দিকেই এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া বলে মনে করছেন নেটিজেনরা।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রচলিত ধ্যান ধারণার বদল ঘটছে। অদম্য সাহস আর ধৈর্য্যের ওপর নির্ভর করেই নিজেদের মতো করে জীবন কাটানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। তথাকথিত সমাজের সমস্ত বেড়াজাল অতিক্রম করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে তৈরি তাঁরা।