শাঁখার সাথে জড়িয়ে আছে হাজার হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
বাঙালি বিয়ে মানেই হাজারো আচার-অনুষ্ঠান। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মেও অনেক বদল এসেছে। এখন আর কেউই আগেকার মতো খুব বেশি নিয়ম নীতি পালন করেন না। তবে কিছু নিয়ম বাদ পড়লেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম আজও একই ভাবে বাঙালি বিয়ের অনুষ্ঠানে পালিত হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল বিয়ের আগের দিন বা বিয়ের দিন সকালে কনের শাঁখা-পলা পরা। এই শাঁখার সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজার হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য। শাঁখা-পলাকে বাঙালি এয়োস্ত্রীরদের চিহ্ন হিসাবে ধরা হয়। তবে কেউ কেউ আবার এই শাঁখা-পলাকেও এখন ফ্যাশনের অন্তর্গত করেছেন।
তবে হালফিলে ক’জন বিবাহিত মহিলা নিয়মিত শাঁখা-পলা পরেন বলুন? শাঁখা পরা অনেকের কাছেই বেশ সমস্যার। কারণ কাজ করতে গেলে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পশ্চিমি পোশাকের সঙ্গে অনেকেই শাঁখা-পলা পরেন না। অগত্যা আলমারিতেই থাকে সারা বছর। অনেকেই শুধু বিয়ের দিন ছাড়া দশমীর দিন সিঁদুর খেলার সময় বা লক্ষ্মীপুজোর দিন কিংবা পরিবারের কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে শাঁখা পরেন। আবার সেগুলি যত্ন করে তুলে রেখে দেন। কিন্তু যাঁরা বছরভর সনাতনী সাজ পছন্দ করেন, শাঁখা-পলা তাঁদের সাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আনুষঙ্গিক। তাই নতুন ধরনের শাঁখার হদিস সম্পর্কে জানতে পড়ে দেখতে পারেন এই প্রতিবেদনটি।
জোড়া শাঁখা:
জোড়া শাঁখা পরার চল সম্প্রতি শুরু করেছেন বলিউড অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। মুম্বইয়ের একটি গণপতি প্যান্ডেল দর্শন করার সময় রানি সালোয়ার-কুর্তার সঙ্গে পরেছিলেন জোড়া শাঁখা। এমন ভাবে পরেছিলেন তিনি, তাতে মনে হচ্ছিল, যেন ওগুলি শাঁখা-পলা নয়, সাধারণ সাদা-লাল চুড়ি! চাইলে আপনিও এই ভাবেই পরতে পারেন। এতে শাঁখাও পরা হবে। সঙ্গে ফ্যাশনও।
মোটা শাঁখা:
টলিউড অভিনেত্রী পাওলি দাম যথেষ্ট ফ্যাশন সচেতন। তাঁর হাতেই এই ধরনের শাঁখার ডিজাইন দেখা যায়। এই ধরনের শাঁখা বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। একটা সময় সরু শাঁখার চল ছিল প্রচুর। বর্তমানে শুরু হয়েছে মোটা শাঁখার ফ্যাশন। এই ধরনের শাঁখা আপনি পলার সঙ্গে পরতে পারেন বা পলা ছাড়াও পরতে পারেন কয়েকগোছা সরু চুড়ি দিয়ে।
প্লাস্টিকের শাঁখা:
যাঁরা শাঁখা বাধাঁনো পরতে পছন্দ করেন কিন্তু শাঁখা বেড়ে যাওয়ায় ভয়ে তুলে রাখেন আলমারিতে, তাঁদের জন্য সেরা প্লাস্টিকের শাঁখা। দেখলে মনেও হবে না যে, এটি খাঁটি সোনায় বাঁধানো নয়। তবে এই ধরনের শাঁখায় সোনার জলের আস্তরণ করা থাকায়, চট করে রং উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হস্তিমুখী বা ময়ুরমুখী নকশার শাঁখা:
এই ধরনের নকশার শাঁখা সনাতনী সাজের সঙ্গে বেশ মানানসই। এই নকশার শাঁখা আপনি চাইলে নিজের মতো করেও ডিজাইন দিয়ে বানাতে পারেন। বা পছন্দ হলে দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন। সোনার জল করা বা সম্পূর্ণ সোনার তৈরি — দু’ধরনের শাখাই বাজারে সহজলভ্য।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।