— প্রতীকী চিত্র।
গত বছর পুজোর আগে কায়দা করে চুল সোজা করিয়েছিলেন। মাস দুয়েক চুল বেশ ভাল ছিল। চুলের জেল্লা, মসৃণ ভাব সকলের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই সময়ে। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই শুরু হল সমস্যা। কোনও কারণ ছাড়াই মুঠো মুঠো চুল হাতে উঠে আসছে। নামী-দামি তেল মেখে, বিভিন্ন ‘ট্রিটমেন্ট’ করিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, তাপ দিয়ে চুলের প্রোটিনের বন্ড এক বার নষ্ট হয়ে গেলে তা কোনও ভাবেই আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এর পর থেকেই চুলের যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির শুরু হয়।
চুলে অতিরিক্ত তাপ লেগে ডগা ফেটে যেতে পারে। চুলেরও নিজস্ব চক্র আছে। সেই চক্রের একেবারে শেষ পর্যায়ে থাকা চুলের উপর কায়দা করলে ক্ষতির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। কারণ, অতিরিক্ত তাপে চুলের স্থিতিস্থাপকতা বা ‘ইলাস্টিসিটি’ নষ্ট হয়। চুলের গোড়া আলগা হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় অনেকেরই মনে হতে পারে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে কী করা যেতে পারে? চুল নিয়ে গবেষণা করেন জ্যামিন লিম। তাঁর মতে, শুধু কায়দা করলেই যে চুলের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়, তা নয়। চুল শুকোতে নিয়মিত ব্লো ড্রাই করলেও কিন্তু একই ভাবে চুলের ক্ষতি হতে পারে। চুলের প্রতিটি স্ট্র্যান্ড কেরাটিন নামক একটি প্রোটিন দিয়ে তৈরি। স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে আলফা হেলিক্স নামক যৌগ। মাত্রাতিরিক্ত তাপ এই যৌগটি নষ্ট করে দেয়। ফলে চুলের স্বাভাবিক জেল্লা তো নষ্ট হয়েই, সঙ্গে ফলিকলেও এর প্রভাব পড়ে।
কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন চুলের ক্ষতি হয়েছে?
১) কেটারিন ট্রিটমেন্ট কিংবা ব্লো ড্রাই করার পরে চুল অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। চুলের স্বাভাবিক জেল্লা ধরে রাখে কিউটিকল। তা-ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
২) চুলের ডগা ভেঙে যাওয়া, চুল নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত তাপের কারণে।
৩) সামান্য হাওয়া দিলেই চুল উষ্কখুষ্ক হয়ে পড়াও কিন্তু এই ক্ষতির লক্ষণ। কোঁকড়ানো চুল বশে রাখা সমস্যার হলেও সোজা চুলে এমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
৪) যথেষ্ট তেল মাখার পরেও যদি সমানের চুলে জট পড়তে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, তা অতিরিক্ত তাপ লাগার ফলে হচ্ছে।
৫) সাধারণ ভাবে ৫০ থেকে ১০০টি চুল প্রতি দিন মাথা থেকে ঝরে পড়তেই পারে। কিন্তু অনেক সময়ে পরিমাণটি বেড়ে ২০০ থেকে ৩০০-তে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত তাপ লাগার ফলে এই পরিমাণ চুল ঝরে পড়া স্বাভাবিক।