Daughter-Mother Relationship

হোয়াট্‌সঅ্যাপেই যোগাযোগ মা-মেয়ের, ১৭ বছর পর মাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তরুণী

দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই মায়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তরুণী। ১৭ বছরের বিচ্ছেদ। ১৭ বছর পর মায়ের আদর পেয়েছেন তিনি। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে আশ মিটছে না মায়েরও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:১৩
Share:

—প্রতীকী ছবি।

মা এবং কন্যার মাঝে শুধুমাত্র একটি দরজা। দরজার চেন টেনে খুলতে পারলেই মায়ের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন তরুণী। কিন্তু সেই সামান্য চোখের দেখাটুকুর জন্যও যেন আর তর সয় না। অস্থির হয়ে বার বার দরজায় ধাক্কা দিয়ে চলেছেন তিনি। দরজা আটকানোর জন্য একটি বিশেষ ধরনের চেনের ব্যবস্থা করা রয়েছে। সেই চেনই আর খুলছে না। দরজার এক দিকে আঠারো বছরের তরুণী এবং অন্য দিকে তাঁর মা। এক সময় তরুণীর মনে হচ্ছিল, দরজাটি কোনও ভাবে ভেঙে পড়ে যাক। দু’দিক থেকে অনবরত চেষ্টার পর সেই চেন খুলল। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তরুণী। ১৭ বছরের বিচ্ছেদ। ১৭ বছর পর মায়ের আদর পেয়েছেন তিনি। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে আশ মিটছে না মায়েরও। ১৭ বছর ধরে যেন শুধুমাত্র মেয়েকে আদর করবেন বলেই অপেক্ষা করেছিলেন তিনি। আজ আর তাঁর নতুন করে কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই।

Advertisement

আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা ভিক্টোরিয়া ও’লিয়ারি। সৌদি আরবের এক বাসিন্দাকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর কন্যাসন্তান ফতিমার জন্ম দেন ভিক্টোরিয়া। জন্মের পর ফতিমাকে নিয়ে সৌদি আরব চলে যান ভিক্টোরিয়ার স্বামী। ঠাকুরমা-ঠাকুরদা নাতনিকে দেখতে চেয়েছেন। তাই কয়েক দিনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, এমনটাই ভিক্টোরিয়াকে বলেছিলেন তাঁর স্বামী। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও ফতিমাকে নিয়ে আর আয়ারল্যান্ড ফিরে যাননি ভিক্টোরিয়ার স্বামী। এমনকি ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। মেয়েকে দেখার জন্য ছটফট করতেন ভিক্টোরিয়া। বার বার সৌদি আরবে ছুটে যেতেন। কিন্তু ফতিমার দেখা পেতেন না। হোয়াটস্‌অ্যাপ এবং স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমেই ফতিমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করতেন তিনি। অনলাইন মাধ্যমে মেয়েকে টাকাও পাঠাতেন ভিক্টোরিয়া।

২০২৩ সালে ১৮ বছর বয়সে পা দেন ফতিমা। তার পর আইনের সাহায্য নিয়ে মায়ের কাছে ফিরে যান তিনি। ১৭ বছর পর আবার মা-মেয়ের মিলন হয়। এক রেডিয়ো শোয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ভিক্টোরিয়া বলেন, ‘‘ফতিমা আমার সঙ্গে হোটেলে দেখা করতে এসেছিল। দরজায় বার বার ধাক্কা দিচ্ছিল ও। চেন আটকে যাওয়ায় দরজা খুলছিল না। এক সময় মনে হচ্ছিল যে দরজা ভেঙে ফেলি। ১৭ বছর পর ফতিমাকে যখন জড়িয়ে ধরলাম, তখন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এই মুহূর্তটুকুর জন্যই কত দিন ধরে অপেক্ষা করেছি আমরা দু’জন।’’ ভিক্টোরিয়ার বাবা-মা এই ১৭ বছর ধরে ভিক্টোরিয়ার পাশে ছিলেন বলেই তিনি মনের জোর পেয়েছেন। নাতনিকে কাছে পেয়ে তাঁদের আনন্দাশ্রুও ধরে রাখা যাচ্ছিল না বলে জানান ভিক্টোরিয়া।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement