প্রতিবেদন: সৌরভ, চিত্রগ্রহণ: শুভদীপ, সম্পাদনা: সুব্রত
দমদমের সেন্ট্রাল জেল মোড়ে ‘সিরাজদৌল্লার কামান’ উদ্ধার নিয়ে হইহই কাণ্ড। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় নবাব আমলের ইতিহাস উদ্ধারের কাজ। যদিও কিছুটা খননের পরই থমকে যায় কাজ। মাটির গভীরে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় বৈদ্যুতিক তার। এখন কাজ বন্ধ। কবে শুরু হবে, তাও নির্দিষ্ট নয়। যার সুযোগ নিয়ে বাদশাহি কামানের সঙ্গে এখন ঘর করছে আবর্জনা। ধ্বংসস্তূপের সংসারে নতুন অতিথি চায়ের কাপ। ইতিহাসের ‘ডাস্টবিন’ হয়ে ওঠা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। অবহেলার এমন নিদারুণ ছবি কি কেবল এটাই? না। কয়েক বছর আগেও দমদমের এই চত্বরে অন্তত ১৩টি কামানের হদিস পাওয়া যেত। এখন চোখে দেখা যায় চারটি। উদাসীনতার চরমতম নিদর্শন দমদমের ‘ক্লাইভ হাউস’। সংরক্ষণের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি, উল্টে ‘আইসিইউ’-তে থাকা ইতিহাসের গায়ে লেগেছে বিপজ্জনক বাড়ির সিলমোহর। এখানেই কি শেষ? লেডি ক্লাইভের থাকার জন্য যে বাড়ি বানিয়েছিলেন রবার্ট ক্লাইভ, যেখানে দীর্ঘ ছ’বছর কাটিয়েছেন ভগিনী নিবেদিতা, যে বাড়িতে বসে বাঘাযতীন তৈরি করেছেন ব্রিটিশ উৎখাতের নীল নকশা— সেই ‘ফেয়ারি হল’ আর নেই। বেঁচে থাকার মধ্যে একমাত্র ৭০ ফুট উচ্চতা নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ১৮৪১-৪২ সালে তৈরি আফগান যুদ্ধের সৌধ।
সভ্যতার বিবর্তনে আধুনিকতা এসেছে। তৈরি হয়েছে ‘কংক্রিটের জঙ্গল’। নবীন এসে মরচে ধরিয়েছে পুরাতনে। সিরাজদৌল্লার ব্যবহৃত সব থেকে বড় কামান এখন খোলা আকাশের নীচে, একা। নবাবের সেই কামান এখন শুধুই লোহার তাল। স্থানীয় ইতিহাসবিদ গৌরকুমার মৌলিক এই কামানের দীর্ঘায়ু কামনা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। দক্ষিণ দমদম পুরসভা সিরাজদৌল্লার কামান উদ্ধার করলেও তা সংরক্ষণে এক প্রকার অসমর্থ। কেন এই সংরক্ষণ প্রয়োজন? কী বলছেন গৌরকুমার মৌলিক? দেখুন আনন্দবাজার অনলাইনের বিশেষ প্রতিবেদন— ইতিহাসবিদের সঙ্গে ইতিহাসের খনিতে।