প্রতিবেদন ও চিত্রগ্রহণ: সৌরভ, সম্পাদনা: বিজন
পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার গড়জঙ্গল। লাল মাটির রাস্তা ধরে যতদূর চোখ যায়, যে পর্যন্ত গাড়ির চাকা গড়ায়— সবুজ, শুধুই সবুজ। লতায়পাতায়, শাখাপ্রশাখায় একে অপরকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে শাল, সেগুন আর মহুয়া। আলো-আঁধারির লুকোচুরি আর পাখিদের কিচিরমিচিরের মধ্যেই কেকাধ্বনি ময়ূরের। এক সময় এই জঙ্গল ছিল বাঘেদের ‘সেফ জ়োন’। তবে সে সব এখন অতীত। এখন গড়জঙ্গলে সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়াল আর বনশুয়োর।
এই গড়জঙ্গলেই প্রথম দুর্গাপুজো করেছিলেন রাজা সুরথ। মেধস মুনির ‘সাধনস্থল’ হিসাবেও পরিচিতি রয়েছে এই গড়জঙ্গলের। লোকমুখে শোনা যায়, এখানে একটা সময় পর্যন্ত বসবাস ছিল এক কাপালিকের। সাধানায় সিদ্ধিলাভের জন্য তিনি নাকি এখানে নরবলিও দিয়েছেন। পরে অবশ্য কবি জয়দেবের কৃষ্ণভক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন সেই কাপালিক। তারপর থেকেই বন্ধ হয় নরবলি। জনশ্রুতি, কৃষ্ণভক্ত কবি জয়দেব এখানে এসে শ্যাম রূপে দেবীর দর্শন পেয়েছিলেন, সেই থেকেই মন্দিরের নাম শ্যামরূপা মন্দির।
কবি জয়দেবের স্মৃতিবিজরিত এই শ্যামরূপা মন্দিরে এসেছিলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ও। গড়জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা একাধিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে মহাকালী, মহাসরস্বতী এবং মহালক্ষ্মীর মন্দির— যা এখনও প্রাচীনত্বের প্রমাণ বহন করছে।