‘ডন’ ফিরতেই যেন বুকে বল। হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর বাংলাদেশে রাজনীতিতে, আলোচনা-চর্চায় আবারও শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন। পদত্যাগ বিতর্কের দু’মাসের মধ্যেই দাবি করলেন তিনিই ‘প্রধানমন্ত্রী’। বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। যার প্রথম লাইনেই লেখা, “বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি (প্রধানমন্ত্রী) জননেত্রী শেখ হাসিনা ডোনাল্ড জে ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অভিনন্দন জানিয়েছেন।”
৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এক রকম পালিয়েই আসেন। ঢাকা থেকে বিশেষ সেনা বিমানে দিল্লিতে। সূত্রের খবর, গত দু’মাস নয়াদিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জ়োনেই আছেন হাসিনা। ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় প্রথম দিন থেকেই দাবি করেন, ‘মা পদত্যাগ করেননি।’ জয়ের বক্তব্য, শেখ হাসিনাকে সরকারিভাবে পদত্যাগ করার সময়ই দেওয়া হয়নি। এরইমধ্যে হাসিনার পদত্যাগ বিতর্কে নতুন করে ইন্ধন জুগিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহবুদ্দিন। দাবি করেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনও প্রমাণপত্র তাঁর কাছে নেই। রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয় বাংলাদেশ। মহম্মদ শাহবুদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে শুরু হয় বিক্ষোভও। এই পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় এবং আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে উল্লেখ নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিল।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন ঘোরতর ট্রাম্প-বিরোধী। ইউনূসের ‘শত্রুতা’ ভোলেননি ট্রাম্পও। সে বার জেতার পর বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের কাছে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, ‘হোয়ার ইজ় দ্য মাইক্রো ফিনান্স গাই ফ্রম ঢাকা?’ এখানেই শেষ নয়। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কর্ণধার যে তাঁকে হারাতে অনুদানও দেন, সে কথাও মনে রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যেই বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান-সহ সংখ্যালঘু নিপীড়নের নিন্দা করতে শোনা যায় ট্রাম্পকে। প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিস এবং জো বাইডেনকে নিশানা করলেও ট্রাম্পের এক্স পোস্ট যে মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্যে করেই ছিল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসতেই স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে ইউনূস।