ডিসেম্বর। বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের পর থেকেই বছর শেষের এই মাস বাংলাদেশের কাছে স্বাধীনতা উদ্যাপনের মাস। ইতিহাসের বদল না হলে এ বারও হয়ত তাই-ই হবে। তবে অগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে ঘটনার ঘনটায় পাল্টাচ্ছে পরিস্থিতি। ঢাকায় এখন তাপমাত্রা ওই সতেরো ডিগ্রির আশেপাশে হবে। আকাশ বেশিরভাগ সময়ই মেঘলা। কলকাতায়ও তাই। তবে যে ভাবে দুই দেশের রাজ নেতাদের বাক্যের বিস্ফোরণ ঘটছে তাতে পারদ চড়ছে। বাংলাদেশ এবং ভারত, দুই দেশেই ক্রমশ বাড়ছে উত্তাপ।
গত সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিসেনা পাঠানোর আর্জি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর চলতি সপ্তাহের শুরুতেই তিনি বললেন, “কারও এতো হিম্মত নেই, যে বাংলা, বিহার, ওড়িশা সব নিয়ে নেবেন। এটা ভাববার কোনও কারণ নেই, আমরা বসে বসে ললিপপ খাব।” যথারীতি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উড়ে এল পাল্টা মন্তব্য। মমতার ‘ললিপপ’ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা রুহুল রিজভি নিয়ে এলেন ‘আমলকি’ প্রসঙ্গ। এরই মধ্যে ঢাকায় গিয়ে বৈঠক সেরে এলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী। বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মহম্মদ জসমউদ্দিন-সহ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও বৈঠক হয় তাঁর। সে দেশের সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। সঙ্গে বিক্রম মিস্রী স্পষ্ট করে এসেছেন, নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে অতীতের সুসম্পর্কই বজায় রাখতে চায়।
নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছে ঢাকা। ভারতে বসে হাসিনার একের পর এক মন্তব্য দেওয়াকে ভাল চোখে দেখছে না ইউনূসের অন্তর্বতীকালীন সরকার। সূত্রের খবর, দুই দেশের আমরা সর্বস্ব আলোচনায়, বিক্রম মিস্রীকে সে কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মহম্মদ জসিমউদ্দিন। অন্যদিকে আবার ভারত থেকে ভিসা সেন্টার সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের বিদেশ সচিব বৈঠক করেন সোমবার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় নিজেদের পদক্ষেপের কথা জানাল বাংলাদেশ। মুহাম্মদ ইউনূসের মন্ত্রক থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, ৫ অগস্ট থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত, সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দায়ের হয়েছে ৮৮টি মামলা। গ্রেফতার ৭০। এই খবর প্রকাশ করেছে প্রথম আলো।