দুর্গাপুজোর সময় যখন বাঙালি মাতৃ আরাধনায় ব্যস্ত, ঠিক সেই সময় দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, ডুয়ার্স, তরাই-সহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় ফুলপাতি উৎসব। ফুল-পাতা— অর্থাৎ প্রকৃতিকে মাতৃরূপে আরাধনা করেন পাহাড়ের মানুষ। একসঙ্গে ৯ দেবীর পুজো করা হয়। ফুলপাতি উৎসবে শুধুমাত্র দেবদেবীরাই আরাধ্য নন— ফুল ও পাতার পুজো করে প্রকৃতির কাছে শান্তি প্রার্থনা করা হয়। ১৭০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে নেপালিদের মধ্যে এই প্রথা চলে আসছে। বিশ্ব জুড়ে যেখানে নেপালিরা আছেন, এই সময়ে সেখানেই তাঁরা মেতে ওঠেন ফুলপাতি উৎসবে। ইতিহাস অনুযায়ী, নেপালের প্রথম রাজা পৃথ্বী নারায়ণ শাহের দরবারে ফুলপাতি উৎসবের সূচনা। রাজা পৃথ্বী নারায়ণ প্রজাদের দুঃখ-দুর্দশা ঘোচাতে এই পুজো শুরু করেন গোটা দেশে। তার পর থেকেই দুর্গাপুজোর সময় ১০ দিন ধরে চলে এই উৎসব।সপ্তমীর দুপুরে পাহাড়ের প্রতিটি ঘরে পুজো শেষে গোটা দার্জিলিং শহর জুড়ে বার হয় শোভাযাত্রা। শেরপা, প্রধান, রাই-সহ বিভিন্ন উপজাতি নিজস্ব ঘরানার পোশাক পরে নিজেদের সংস্কৃতির প্রদর্শন করেন। মাথায় মঙ্গল ঘট নিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন পথ পেরিয়ে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরেন।তিন দিন এ ভাবেই চলবে উৎসব। দশমীতে চাল-সিঁদুরের মাধ্যমে শেষ হয় ফুলপাতি উৎসবের। চাল-সিঁদুর কপালে লাগিয়ে মুখমিষ্টির মাধ্যমে বিজয়া দশমীর ধাঁচেই শেষ হয় উৎসব।