অর্কিড পার্কের এমন পরিবেশেই মিলবে থাকার সুযোগ। ছবি: রবিন রাই।
পাহাড়ি হাওয়া যখন বাগান ছুঁয়ে যায়, তখন একসঙ্গে মাথা দুলিয়ে ওঠে হাজারখানেক অর্কিডের ফুল। কেঁপে ওঠে শক্ত পাতাও। কোনও অর্কিডের রং সাদা, কোনটা কমলা, নীল। বাগানের মাঝখানে এসে দাঁড়ালে চারদিকে শুধু অর্কিডের মাথাই দেখা যায়। মংপুর এমন একটি বাগানকেই পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগী হয়েছে জিটিএ। বাগানের ভিতরে তৈরি হয়েছে রাত্রিবাসের কটেজও।
গত বছরের এপ্রিল মাসে উদ্বোধন হয়েছিল দার্জিলিঙের মংপুর এই সিমবিডিয়াম অর্কিড পার্ক। জিটিএ-এর তৈরি এই পার্কের ৫ কিলোমিটারের মধ্যেই রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত ভবন এবং সংগ্রহশালা। বিশ্বকবির নানা স্মৃতি জড়িয়ে থাকায় বাঙালি পর্যটক তো বটেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছেও মংপু অন্যতম গন্তব্য। সে কারণেই অর্কিড পার্ক তৈরির জন্য মংপুকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল বলে জিটিএ কর্তৃপক্ষের দাবি। উদ্বোধনের পরে পর্যটকদের থেকে সাড়া পেয়ে এবার পার্কের আকর্ষণ আরও বাড়াতে উদ্যোগী জিটিএ।
পার্কে মোট অর্কিডের সংখ্যা ২৩ হাজার। অস্ট্রেলিয়া এবং সিকিম থেকে আনা ১৫০ ধরনের অর্কিড রয়েছে পার্কে। ৫ একর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা রঙের অর্কিড। বাগানের মাঝেই রয়েছে একটি কটেজ সেখানে চার জন রাত্রিবাস করতে পারবেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। খরচ পড়বে দিনপ্রতি দেড় হাজার টাকা। পর্যটকদের চাহিদা মতো খাবারের ব্যবস্থাও কর্তৃপক্ষের তরফে করা হবে বলে জানানো হয়েছে। অর্কিড ছাড়াও শাক সব্জি চাষও বাগানের একদিকে শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পর্যটকরা চাইলে সেই শাকও মেনুতে পেতে পারেন বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন।
কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, বাগানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সঙ্গে ট্রেকিংয়েরও সুযোগও রয়েছে। বাগানটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন দার্জিলিং সিঙ্কোনা কর্তৃপক্ষ। দায়িত্বপ্রাপ্ত জিটিএ সদস্য স্যামুয়েল গুরুঙ্গ বলেন, “পার্ক উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। বর্তমানে পার্ক তথা বাগানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনা হয়েছে। কটেজ তৈরি হয়েছে। আরও বেশি সংখ্যক পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করা যায় কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।”
বাগানে ঢোকার জন্য পর্যটকদের ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিতে হয়। পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সতীশ রাই বলেন, “৬ মাস আগে পার্কের ভিতরে কটেজ তৈরি হয়েছে। প্রতিমাসেই বেশ কয়েকদিন বুকিং থাকছে। প্রথম দিকে পর্যটকদের সংখ্যা বেশি ছিল না। তবে এখন ভিড় বাড়ছে। ভবিষ্যতে পর্যটক টানতে কটেজের সংখ্যা বাড়ানো সহ আরও কিছু পদক্ষেপ করা হবে।”