শুয়ে বা বসে ঘুমালেই হবে না, জানতে হবে নিয়মও। ছবি: সংগৃহীত।
ট্রেনের দুলুনির সঙ্গে ঘুমের একটা সম্পর্ক রয়েছে। তবে দূরপাল্লার ট্রেনে তো ঘুমোতেই হবে। দিনরাতের সফরে ঘুমোনোর জন্যই নানা আরামের ব্যবস্থা। লোকাল ট্রেনে দিনের যে কোনও সময় ঢুলে ঢুলে ঘুমোনোয় কোনও বাধা নেই, কিন্তু দূরপাল্লায় শুয়ে ঘুমের নিয়ম আছে। সময় বেঁধে দেওয়া রয়েছে ভারতীয় রেলের পক্ষে। আর সেটা না মানলে জরিমানা হয়তো দিতে হবে না, কিন্তু সহযাত্রীদের সঙ্গে বিচ্ছিরি ঝঞ্ঝাটে জড়াতে হতে পারে।
রেলের যা নিয়ম তাতে দিনের বেলায় ঘুমের সুযোগই নেই। তাই বলে কি দুপুরে ঘুমোনো যায় না! যেতেই পারে, কিন্তু সে ক্ষেত্রে কোনও বগির একটি কুপের সকলকেই শুয়ে পড়তে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে জোর করা যায় না। ভারতীয় রেলের নিয়ম অনুযায়ী, রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত স্লিপার ক্লাসের কোনও বার্থ শোয়ার জন্য ব্যবহার করা যায়। এসি থ্রি টিয়ার বগির ক্ষেত্রেও নিয়ম এক। আগে রাত ৯টায় শোওয়া গেলেও ২০১৭ সালে নিয়ম বদলে হয়ে যায় রাত ১০টা।
যাত্রীদের জেনে রাখা দরকার, রাত ১০টার পরে টিকিট পরীক্ষকও বিরক্ত করতে পারেন না। টিটিই (ট্রাভেল টিকিট এগজামিনার)-দের উপর নির্দেশ থাকে যাতে টিকিট পরীক্ষার কাজ তাঁরা রাত ১০টার মধ্যে মিটিয়ে ফেলেন। তবে রাত ১০টার পরে যে ট্রেন ছাড়লে বা যাত্রীরা ট্রেনে উঠলে সে ক্ষেত্রে টিকিট পরীক্ষার এই সময়সীমা কার্যকর নয়।
দূরপাল্লার ট্রেনে সফর করার সময়ে সবচেয়ে সমস্যা হয় মিডল বার্থের যাত্রীদের। লোয়ার বার্থের যাত্রী ঘুম থেকে উঠে পড়লে তাঁদেরও নেমে পড়তে হয়। চোখে ঘুম লেগে থাকলেও। আবার সারা দিনে লোয়ার বার্থের যাত্রীরা না শুলে মিডল বার্থে বিছানা পাতাই সম্ভব নয়। সেই দিক থেকে অবশ্য আপার বার্থের যাত্রীদের কোনও চিন্তা থাকে না। ঘুম পেলেই ঘুমোনো যায়। একই ব্যাপার সাইড আপার বার্থের ক্ষেত্রেও। তবে সাইড লোয়ার বার্থে সেই স্বাধীনতা নেই।
ভারতীয় রেলে ঘুমোনোর যে নিয়ম, তাতে রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সাইড আপার বার্থের যাত্রী লোয়ার বার্থে বসার দাবি করতে পারেন না। সাইড আপার ও লোয়ার বার্থে আরএসি-তে যাঁদের টিকিট থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাইড আপার বার্থের যাত্রীরা চাইলে লোয়ার বার্থে বসতে দিতেই হবে।
রেলের ঘুমোনোর এই নিয়মে অবশ্য কোথাও জরিমানার কথা বলা নেই। কেউ মানা বা না মানা, সবটাই নির্ভর করছে সহযাত্রীদের সঙ্গে বোঝাপড়ার উপরে। তবে রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, অসুস্থ ব্যক্তি, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে তাঁদের সুবিধা অনুযায়ী বাকি যাত্রীরা যেন সহযোগিতা করেন। সে ক্ষেত্রে শোয়ার সময় সংক্রান্ত নিয়ম ভেঙেই যাত্রীদের সহযোগিতা করা উচিত।