থিয়েটার কর্তৃপক্ষ যত বারই সেই দেওয়াল পরিষ্কার করতেন, সে চেষ্টা পুরোটাই জলে যেত। ছবি: রয়টার্স
আমেরিকার পশ্চিম উপকূলের একটি ছোট্ট শহর সিয়াটেল। দর্শনার্থীদের কাছে এই শহরের জনপ্রিয়তা বেশ তুঙ্গে। কারণটা শুনলে অবাক হবেন আপনিও। কোনও শহরের পরিচিতি বাড়ে সেখানকার প্রাচীন কোনও সৌধ, মিনার কিংবা স্থাপত্যের কারণে। আর সিয়াটেল জনপ্রিয়তা লাভ করছে সেখানকার ‘গাম ওয়াল’-এর জন্য। ভাবছেন নিশ্চয়ই ‘গাম ওয়াল’ আবার কী?
সিয়াটেলের পোস্ট অ্যালিস থিয়েটারের ঠিক পাশে হাজার হাজার রঙিন চিউয়িংগাম দিয়ে সাজানো একটি দেওয়াল। ভাবছেন, এ আর আর এমন কী? শুনলে অবাক হবেন, ১৯৯০ সাল থেকে মানুষ সেই দেওয়ালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়েই মুখের চিউয়িংগাম দেওয়ালে গায়ে লাগিয়ে দেন। আর এ ভাবেই চিউয়িংগামের পাহাড় জমেছে সেই দেওয়ালে। আর এখন সেই দেওয়াল দর্শনার্থীদের কাছে এতটাই জনপ্রিয় যে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা সিয়াটেলে এসে ভিড় জমান সেই বিখ্যাত দেওয়ালের সামনে ছবি তুলবেন বলে।
১৯৯০ সাল থেকে যাঁরা সেই থিয়েটারে শো দেখতে আসতেন, তাঁরা শো শুরু হওয়ার আগে সময় কাটানোর জন্য খানিকটা খেলার ছলেই চিউয়িংগাম দিয়ে দেওয়ালে পয়সা লাগাতেন। থিয়েটার কর্তৃপক্ষ যত বারই সেই দেওয়াল পরিষ্কার করতেন, সে চেষ্টা পুরোটাই জলে যেত। কারণ কিছু দিনের মধ্যেই আবার সেই দেওয়াল ভরে যেত চিউয়িংগামে। এখন অবশ্য পয়সা খুব একটা চোখে না পড়লেও রংবেরঙের চিউয়িংগাম দিয়ে সাজানো সেই দেওয়ালই ছোট থেকে বড় সকলের কাছে ছবি তোলার আদর্শ স্থান। শুধু তাই নয়, দর্শনার্থীরা সেই দেওয়াল জুড়ে চিউয়িংগাম দিয়ে ভাষ্কর্যও তৈরি করতে শুরু করেছেন।
ছবি: রয়টার্স
২০১৫ সালে স্থানীয় প্রশাসন সেই দেওয়ালটি পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কাজটি করতে সময় লেগেছিল প্রায় ১৩০ ঘণ্টা। তবে পর্যটকরা আবার উদ্যোগ নিয়ে সেই খালি স্থান ভরাট করেছে চিউয়িংগাম দিয়ে।
২০০৯ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী ‘সিয়াটেল গাম ওয়াল’ বিশ্বের অন্যতম জীবাণুযুক্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে জায়গা করে নেয়। তবে কী এই স্থানে গেলে জীবাণুর সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি? এই প্রশ্ন কিন্তু মাথায় এসেই যায়!