bibhutibhushan bandopadhyay

Writer Home Trip: সপ্তাহান্তের ছুটি কাটানোর ঠিকানা হোক প্রিয় সাহিত্যিকের বাসভবন

কেমন হয় যদি প্রিয় সাহিত্যিকের বাড়ি দেখতে গিয়ে ঘুরে আসা যেত কিছু দর্শনীয় স্থান? রইল তেমনই তিন কালজয়ী সাহিত্যিকের বাড়ির ঠিকানা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২২ ১৯:১৫
Share:

বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির বাইরের দেওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

ভ্রমণ ও সাহিত্য বাঙালির যাপনের সঙ্গে মিশে গিয়েছে অবিচ্ছেদ্য ভাবে। কিন্তু কখনও ভেবেছেন, কেমন হত যদি প্রিয় সাহিত্যিকের বাড়ি দেখতে গিয়ে ঘুরে আসা যেত কিছু দর্শনীয় স্থানও? রইল তেমন তিন জনপ্রিয় সাহিত্যিকের বাড়ির ঠিকানা, যা দেখতে গেলে প্রাণ জুড়োবে সাহিত্যপ্রেমী হিসাবে। আবার মিটবে ভ্রমণের পিপাসাও।

Advertisement

১। বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি: পড়শি রাজ্য ঝাড়খন্ডের ঘাটশিলায় ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। সুবর্ণরেখা নদীর ধারে অবস্থিত এই শহর আজও টানে বাঙালির মন। ঘাটশিলাতে একই সঙ্গে মেলে পাহাড়, বনভূমি ও নদীর স্বাদ।

বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়র বাড়ির নাম ‘গৌরী কুঞ্জ’। বর্তমানে বাড়িটি সরকারের তরফে সংরক্ষণ করা হয়েছে। গৌরীকুঞ্জ উন্নয়ন সমিতির তত্ত্বাবধানে স্থানীয় পাঁচ শিল্পী সাদা দেওয়ালে পটচিত্রের আদলে ফুটিয়ে তুলছেন বিভূতি-জীবনকথা। এখানে চালু রয়েছে একটি পাঠশালাও। তা ছাড়াও সর্পিল পথ বেয়ে উঠতে পারেন ফুলডুংরী পাহাড়। দেখতে পারেন ২১ ফুট উঁচু ধারাগিরি জলপ্রপাত। নৌকা বিহার করতে পারেন শাল-পিয়ালের জঙ্গলে ঘেরা বুরুডি জলাশয়ে। এ ছাড়াও ঘুরে দেখতে পারেন রঙ্কিণীদেবীর মন্দির, পঞ্চপাণ্ডব পাহাড়, চিত্রকূট পাহাড়, রাতমোহনা ও গালুডিহি ব্যারেজ।

Advertisement

কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেসে সবচেয়ে তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাওয়া যায় ঘাটশিলা। তা ছাড়াও স্টিল এক্সপ্রেস, ইস্পাত এক্সপ্রেস ও টাটানগর যাওয়ার অন্যান্য ট্রেনেও যাওয়া যেতে পারে ঘাটশিলা।
কোথায় থাকবেন
ঘাটশিলাতে সব দামের হোটেল পাওয়া যায়। অভাব নেই বাঙালি খাবারদাবারের দোকানেরও।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

২। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাড়ি: কলকাতা শহরের অদূরেই কোলাহলমুক্ত পরিবেশে দিন দু’য়েক সময় কাটাতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন দেউলটি। এখানে সামতাবেড় গ্রামে শেষ জীবনে প্রায় এক যুগ কাটিয়েছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ঘুরে দেখতে পারেন শরৎচন্দ্রের লেখার ঘর, তাঁর ব্যবহার করা জিনিসপত্র।
কী দেখবেন
শরৎচন্দ্র ‘রামের সুমতি’ লিখেছিলেন এই বাড়িতে বসেই। দোতলা বাড়িটির সর্বত্রই তাঁর স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। ধানের গোলা, কাঠের বারান্দা উঠোন সব জায়গাই ঘুরে ফিরে দেখতে পারেন পর্যটকরা। সংরক্ষণ করা হয়েছে লেখকের ব্যবহৃত জিনিসপত্রও। একটি ঠাকুরঘরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি। এই মূর্তিটি নাকি চিত্তরঞ্জন দাশ উপহার দিয়েছিলেন লেখককে। এখনও প্রত্যেক দিন পুজো হয় এই ঠাকুরঘরে। শরৎচন্দ্রের বাড়ি ছাড়াও প্রাচীন বঙ্গজীবনের বেশ কিছু স্বাক্ষর আজও পাওয়া যাবে এখানে। রয়েছে শ্রীরাধা ও মদনগোপালের প্রাচীন আটচালা মন্দির। মন্দিরের গায়ে আছে টেরাকোটার কাজ। ১৬৫১ সালে মঙ্গলাহাটের জমিদার মুকুন্দপ্রসাদ রায়চৌধুরী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কেউ কেউ বলেন এই দেউলের নামেই এই জায়গার নামকরণ। তবে অনেকেই কেবল আলস্য মাখা সবুজ গ্রামের মধ্যে রূপনারায়ণের রূপ দেখবেন বলেই চলে আসেন এখানে। করেন নৌকা বিহার।


কী ভাবে যাবেন
হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে যেতে চাইলে ধরতে হবে পাশকুড়া লোকাল, নামতে হবে দেউলটি স্টেশনে। সড়কপথে কলকাতা থেকে দেউলটির দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। সড়কপথে দ্বিতীয় হুগলি সেতু হয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরতে হবে, এর পর ৬ নং জাতীয় সড়ক ধরে কোলাঘাটের দিকে কিছুটা গেলেই মিলবে দেউলটি মোড়।
কোথায় থাকবেন
দেউলটিতে বেশ কিছু রিসর্ট আছে। ছুটির সময়ে আগে থেকে বুক করে যাওয়াই বাঞ্ছনীয়। অফিস পিকনিক বা কনফারেন্স করার সু-বন্দোবস্তও আছে এখানে।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত সংগ্রহশালা। ছবি: সংগৃহীত

৩। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি: সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি, ৫১ পীঠের অন্যতম ফুল্লরা দেবীর মন্দির, আর গল্পের সেই হাঁসুলি বাঁক সব কিছুর দেখা একই সঙ্গে মিলবে এই লাভপুরে। শান্তিনিকেতনে ঘুরতে এলেও ঘুরে যেতে পারেন এখান থেকে। বোলপুর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে এই গঞ্জ।

কী দেখবেন
লাভপুরে ঢুকতে গেলে প্রথমেই মিলবে ফুল্লরা দেবীর মন্দিরের বিশাল প্রবেশদ্বার। কথিত আছে, এখানে সতীর অধোরোষ্ঠ বা নিচের ঠোঁট পড়েছিল। মন্দির দর্শনের সঙ্গে সঙ্গে তারাশঙ্করের বাড়ি তো রয়েছেই। বাড়ির ডানদিকে রয়েছে বৈঠকখানা, বাঁ দিকে রয়েছে শয়নকক্ষ। এখানেই জন্মেছিলেন তারাশঙ্কর। দেখতে পাবেন তাঁর কম বয়সের লেখা, শেষ বয়সের আঁকা ছবি ও বংশ তালিকা। বাড়ির সঙ্গে রয়েছে তাঁর পারিবারিক মন্দিরের সারি ও দুর্গামন্দিরও। তিন কিলোমিটার দূরেই রয়েছে বক্রেশ্বর, আর বক্রেশ্বরের বাঁক। সতীর আরেক পীঠ কঙ্কলিতলাও খুব বেশি দূর নয়।

কী ভাবে যাবেন
শান্তিনিকেতন থেকে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে আসাই ভাল। মূল রাস্তার থেকে হাঁসুলি বাঁক প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে, তাই নিজস্ব গাড়ি না থাকলে অসুবিধা হতে পারে।
কোথায় থাকবেন
থাকার ব্যবস্থাও অধিকাংশই শান্তিনিকেতন ও বোলপুরে। এখানে বিশেষ থাকার ব্যবস্থা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement