ভারতের কোথায় কোথায় অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সুযোগ রয়েছে? ছবি: সংগৃহীত।
বেড়ানোর লক্ষ্য, অর্থ এক এক জনের কাছে এক এক রকম। কেউ চান, বেড়াতে গিয়ে হই-হুল্লোড়। কারও আবার পছন্দ প্রকৃতির নির্জনতা। কারও আবার আগ্রহ অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে। কেউ স্বপ্ন দেখেন পাখির মতো আকাশে ওড়ার। উপর থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের। কেউ চান, খরস্রোতা নদীতে নৌকোয় দাঁড় বাইতে। কেউ আবার সমুদ্রের নীচের জগতকে চাক্ষুষ করতে চান। বেড়ানোর সঙ্গে জুড়ে যায়, রোমাঞ্চকর নানাবিধ ক্রীড়াও। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হয় অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। আগ্রহ অনুযায়ী জায়গা বেছে নিতে পারেন।
প্যারাগ্লাইডিং
আকাশ থেকে পার্বত্য উপত্যকা দর্শনের সুন্দর সুযোগ মেলে প্যারাগ্লাইডিংয়ে। বিভিন্ন উচ্চতায় প্যারাগ্লাইডিং করা যায়। রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা না থাকলে যে কেউ এই অ্যাডভেঞ্চার ক্রীড়ার সুযোগ নিতে পারেন। মনে সাহস থাকলে আর পাখির মতো উড়তে চাইলে প্যারাগ্লাইডিং বেছে নিতেই পারেন। হিমাচলপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাখণ্ড-সহ একাধিক রাজ্যের শৈল শহরে প্যারাগ্লাইডিংয়ের সুযোগ মেলে। হিমাচল প্রদেশে বীর বিলিং, কুলু-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্যারাগ্লাইডিং হয়। উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল, পিথোরাগড়েওএই ক্রীড়ার মজা নিতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গে ডেলোতে প্যারাগ্লাইডিং হয়। মহারাষ্ট্রের কামশেতও প্যারাগ্লাইডিংয়ের জন্য জনপ্রিয়। উচ্চতা ও কত ক্ষণ ওড়ানো হবে, তার উপর নির্ভর করে খরচের অঙ্ক। এক জন প্রশিক্ষিত ব্যক্তি প্যারাগ্লাইডিংয়ে সাহায্য করেন। পর্যটক হিসাবে প্যারাগ্লাইডিং করতে হলে, তাঁকে শুধু বসে থাকতে হয়। বাকি কাজ করেন সেই প্রশিক্ষিত ব্যক্তি।
বাঞ্জি জাম্পিং
পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ার রোমাঞ্চ উপভোগের জন্য রয়েছে বাঞ্জি জাম্পিং। তবে এই ক্রীড়ার জন্য প্রচণ্ড সাহসের দরকার। পাহাড়ের উপরে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে পর্যটকের গায়ে দড়ি ক্লিপের সাহায্যে আটকে দেওয়া হয়। তার পর তাঁকে ঝাপ দিতে বলা হয়। মাথা থাকে নীচে। উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশ বাঞ্জি জাম্পিংয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয়। মহারাষ্ট্রের লোনাভালা, কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু ও দিল্লিতে বাঞ্জি জাম্পিং করানো হয়। তবে রক্তচাপের সমস্যা, হার্টের অসুখ ও অন্য কোনও সমস্যা থাকলে এই ক্রীড়া বিপজ্জনক হতে পারে।
বাঞ্জি জাম্পিং। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুবা ডাইভিং
সামুদ্রগর্ভের জীবন, প্রবাল দেখার সুযোগ মেলে স্কুবা ডাইভিংয়ে। অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে ও নির্দিষ্ট কিছু জিনিসপত্র পরিয়ে স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য নামানো হয়। তার আগে অবশ্য প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। লক্ষদ্বীপ, আন্দামান, পুদুচেরি, গোয়া-সহ ভারতের বেশ কয়েকটি জায়গায় স্কুবা ডাইভিং করানো হয়। তবে ভাল প্রবাল দেখা যায় লক্ষদ্বীপ ও আমন্দামানে স্কুবা ডাইভিং করলে। প্রবাল, রকমারি মাছ, বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী দেখলে এই জগৎ যে পৃথিবীরই অংশ, তা বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে।
রিভার র্যাফটিং
খরস্রোতা নদীর বুকে বিশেষ ধরনের ভেলায় ভেসে পড়া, স্রোতের তালে উপরে ওঠা, নীচে নামার রোমাঞ্চ এই খেলায়। উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশ রিভার র্যাফটিংয়ের জন্য জনপ্রিয়। খরস্রোতা গঙ্গায় নদীর ছন্দে দাঁড় নিয়ে ভেসে পড়ার উদ্দীপনার স্বাদ নিতে বহু মানুষ এখানে আসেন। পশ্চিমবঙ্গে সিকিম ও দার্জিলিং-কালিম্পঙে তিস্তার বুকে র্যাফটিং করানো হয়। এ ছাড়াও জম্মু ও কাশ্মীরে, লাদাখে সিন্ধু নদের বুকে, কুর্গে বারাপোল নদী, উত্তরাখণ্ডে যমুনা, হিমাচল প্রদেশের স্পিতি নদী-সহ বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের অ্যাডভেঞ্চার ক্রীড়ার সুযোগ রয়েছে। নদীর বুকে কত ক্ষণ ধরে, কতটা দৈর্ঘ্যে র্যাফটিং হবে, তার উপর নির্ভর করে বোটপিছু খরচ ধার্য থাকে।