আমেরিকা বিশাল বড় দেশ। নিজেদের সময়, সুবিধা বুঝে এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে শুরু করে দিন। ছবি- সংগৃহীত
ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারে বাঙালি সব সময়েই দু’পা এগিয়ে। তা হিল্লিদিল্লি তো অনেক হল। এ বার একটু বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা। অনেকের মুখেই শুনেছেন বিদেশ যাওয়া না কি খুব একটা ঝক্কির নয়। তবে দিঘা, পুরী বা দার্জিলিঙের মতো আজ বললেই কাল রওনা দেওয়া যায় না। অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হয়। বিদেশ বলতে গোটা পৃথিবীর অনেকটাই। তবে বন্ধুবান্ধবেরা কর্মসূত্রে এক সময়ে শিকাগোতে ছিল বেশ কিছু বছর। তাদের মুখে সেখানকার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কথা শুনে, স্বচক্ষে এক বার দেখে আসতে সাধ হয়। যাতায়াত, থাকা, খাওয়া তো না হয় হল। কিন্তু সেখানে গেলে কোথায় কী দেখবেন, তার একটি তালিকা কিন্তু রাখতে হবে হাতের কাছে। ছুটিও তো বেশি নেই। তাই সে সব বুঝে এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে শুরু করে দিন। আমেরিকা বিশাল বড় দেশ। একবারে সব তো দেখে আসা সম্ভব নয়। নিজেদের ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে হবে তাই একটু বুঝেশুনে। যাতে যাতায়াতে বেশি সময় নষ্ট না হয়ে যায়।
শিকাগোর সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ভিজুয়াল আর্টস, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, থিয়েটার এবং সঙ্গীত। ছবি- সংগৃহীত
প্রথম বার আমেরিকা ঘুরতে গেলে কোন পাঁচটি শহর বেছে নিতে পারেন?
১) শিকাগো, ইলিনয়
আমেরিকার এই শহটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মিলেনিয়াম পার্ক, নেভি পিয়র, ম্যাগনিফিশিয়েন্ট মাইল, শিকাগো আর্ট ইনস্টিটিউট, মিউজিয়াম ক্যাম্পাস, উইলিস (সিয়ার্স) টাওয়ার, বিজ্ঞান ও শিল্প জাদুঘর এবং লিঙ্কন পার্ক চিড়িয়াখানা। শিকাগোর সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ভিজুয়াল আর্টস, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, থিয়েটার এবং সঙ্গীত। বিশেষত জ্যাজ় এবং ব্লুজ়। এখানে অবশ্য অনেকগুলি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এবং শিকাগোতে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়। চাইলে সেখানেও ঘুরতে যাওয়া যায়।
ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত ‘হাই টেক’ সিটি হল হান্টস্ভিলে। ছবি- সংগৃহীত
২) হান্টস্ভিলে, অ্যালাবামা
ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত ‘হাই টেক’ সিটি হল হান্টস্ভিলে। মন্টে সানো পাহাড়ের বিভিন্ন রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে গেলে এক বার আসতেই হবে এই শহরে। এ ছাড়াও রয়েছে মন্টে সানো স্টেট পার্ক, শান্ত প্রকৃতির কোলে রয়েছে জাপানি গার্ডেন, যা বসন্তে বা গ্রীষ্মে রডোডেনড্রন ফুলে ভরে থাকে। সাত বছর বা তার চেয়ে বড় বাচ্চাদের জন্য রয়েছে আমেরিকার স্পেস এবং রকেট সেন্টার। যেখানে রকেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহাকাশযান চোখের সামনে দেখতে পাবে তারা। একেবারে খুদে হলে, তাদের ভাল লাগবে এই শহরের বোটানিক্যাল গার্ডেন। আর আপনি যদি শিল্পচর্চা করতে ভালবাসেন, তবে হান্ট্সভিলে মিউজ়িয়াম অফ আর্ট থেকে এক বার তো ঘুরে আসতেই হবে।
শহর থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে অক্সবো রিজিয়োনাল পার্ক। ছবি- সংগৃহীত
৩) পোর্টল্যান্ড
পশ্চিম মিসিসিপি নদীর তীরে গড়ে ওঠা সবচেয়ে পুরনো চিড়িয়াখানা রয়েছে এই শহরেই। যেখানে ২৩০টি প্রজাতির অন্তর্গত দু’হাজার প্রাণীর আবাস। এ ছা়ড়াও শহর থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে অক্সবো রিজিয়োনাল পার্ক। এই জায়গাটি সাঁতার এবং ‘ওয়াটার স্পোর্ট্স’-এর জন্য বিখ্যাত। আর দেখবেন বিভিন্ন জলপ্রপাত।
সপরিবার ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ জায়গা হল সান ডিয়াগো। ছবি- সংগৃহীত
৪) সান ডিয়েগো, ক্যালিফোর্নিয়া
সপরিবার ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ জায়গা হল সান ডিয়াগো। এ শহরের উপকূল বরাবর রয়েছে একাধিক সমুদ্রতট। যেখানে বসেই বেশির ভাগ সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। তবে নানা ধরনের জলক্রীড়ার ব্যবস্থাও আছে। এ ছাড়াও বিশাল সমুদ্রের তলার জগৎটা ঠিক কী রকম, তা জানতে গেলে এক বার ঘুরে আসতে হবে লা জোলা আন্ডারওয়াটার পার্ক অ্যান্ড কোভ থেকে। এ ছাড়াও রয়েছে সান ডিয়েগো চিড়িয়াখানা, বালবোয়া পার্ক, স্প্যানিশ ভিলেজ আর্ট সেন্টার। হাতে কয়েকটা দিন সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকেও।
সংস্কৃতির পীঠস্থান হল আমেরিকার হিউস্টন শহর। ছবি- সংগৃহীত
৫) হিউস্টন, টেক্সাস
সংস্কৃতির পীঠস্থান হল আমেরিকার এই শহরটি। হান্ট্সভিলের মতো এখানেও রয়েছে একটি মহাকাশকেন্দ্র। রয়েছে জলের তলায় ডাউনটাউন অ্যাকোয়ারিয়াম। বাচ্চাদের জন্য মিউজ়িয়াম, মিউজ়িয়াম অফ ফাইন আর্ট্স। হাতে সময় নিয়ে একে একে সব জায়গা থেকেই এক বার ঢুঁ মেরে আসা যায়।