উত্তরবঙ্গের অজানা ৫ ঠিকানা ঢুঁ মারতেই পারেন এই গরমে। ছবি: সংগৃহীত।
গরম পড়লেই মনটা কেমন যেন পাহাড়-পাহাড় করে! অল্প খরচে হিমেল স্বাদ উপভোগ করতে উত্তরবঙ্গের দিকে পা বাড়ান অনেকেই। কিন্তু দার্জিলিং বা কার্শিয়াঙের অতি চেনা জায়গাগুলির ভিড় এড়াতে অনেকেই। বদলে খোঁজ করেন স্বল্প পরিচিত নিরিবিলি কোনও পর্যটন কেন্দ্রের। শহুরে কোলাহল এড়িয়ে কয়েকটি দিন পাহাড়ে কাটাতে চান? আপনার জন্য রইল তিনটি অচেনা পাহাড়ি গ্রামের হদিস।
অহলধারার রূপে মুগ্ধ হবেন আপনি। ছবি: সংগৃহীত।
অহলধারা
দার্জিলিং জেলার কার্শিয়াংয়ের ছোট্ট জনপদ অহলধারা। সেল্পু পাহাড়ে অবস্থিত একটি পাহাড়ি চূড়া। অহলধারা ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে কার্শিয়াঙের ৩৬০ ডিগ্রি ‘ভিউ’ দেখতে পাবেন আপনি। এক দিকে পাইনের বন, অন্য দিকে দিগন্তবিস্তৃত পাহাড়। সমতলে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে তিস্তা। মুঠোফোন পকেটে রেখে দু’চোখ ভরে উপভোগ করতে পারেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রাতের নিস্তব্ধতাও যেন প্রাণ ভরিয়ে দেয়। অহলধারা থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতেও বেশ লাগে। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অনন্য রূপও চাক্ষুষ করতে পারবেন আপনি।
রাংভাং নদীর উপর ঘুমন্ত এক গ্রাম তাবাকোশি। ছবি: সংগৃহীত।
তাবাকোশি
মিরিক থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে রয়েছে তাবাকোশি। উত্তরকন্যার কোলে লুকিয়ে থাকা যে সব পাহাড়ি গ্রামে এখন পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে, তার মধ্যে অন্যতম এই তাবাকোশি। রাংভাং নদীর উপর ঘুমন্ত এক গ্রাম এই তাবাকোশি। এখানে গেলে পাহাড়ের সৌন্দর্যের সঙ্গে চোখে পড়বে পাইন আর বার্চের সমাহার। কিন্তু জঙ্গলের চেয়েও তাবাকোশিতে বেশি মন কাড়বে সবুজে সবুজে মোড়া চা বাগান। তাবাকোশি থেকে জোড়পোখরি, লেপচাজগৎ, পশুপতি মার্কেট, গোপালধারা চা বাগানে ঢুঁ মারতে পারেন।
গরমের ছুটিতে ঢুঁ মারতে পারেন পাবংয়ে। ছবি: শাটারস্টক।
পাবং
কালিম্পং থেকে কমবেশি ২৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে নির্জন পাহাড়ি গ্রাম পাবং। হোমস্টে বা হোটেলে বসে চোখের সামনে রাঙা সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে মন জুড়িয়ে যায়। নিরিবিলিতে ২-৩ দিনের ছুটি কাটানোর পক্ষে উপযুক্ত জায়গা হল পাবং। হোমস্টের বারান্দা থেকে তাকালেই চোখে পড়বে পাহাড়ের অপরূপ শোভা। এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন নেওরা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক।
ছিমছাম সবুজে মোড়া বাগোড়া পক্ষীপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ছবি: সংগৃহীত।
বাগোড়া
কার্শিয়াঙের কাছেই রয়েছে বাগোড়া নামে এক গ্রাম। কার্শিয়াঙ থেকে বাগোড়া যেতে সময় লাগে প্রায় আধ ঘণ্টা মতো। ছিমছাম সবুজে মোড়া বাগোড়া পক্ষীপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এটি কার্শিয়ং সাব-ডিভিশনের অন্তর্গত। কাঞ্চনজঙ্ঘার সঙ্গে মেঘ ও রোদের খেলা দেখতে দেখতেই কেটে যাবে সময়। ফুরসত পেলে হাঁটতে যেতে পারেন ঘন পাইন বনে। এখানে বিমানবাহিনীর একটি ভিউ পয়েন্ট রয়েছে। হেঁটে হেঁটেই ঘুরে আসা যায় সেটি। তা ছাড়া কয়েক কিলোমিটারের দূরত্বে রয়েছে চিমনি, ডাওহিল ও ফরেস্ট মিউজ়িয়াম।
ঋষিহাট
কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা দেখতে পাবেন ঋষিহাট থেকে। ছবি: সংগৃহীত।
দার্জিলিং জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম ঋষিহাট। গরমের ছুটিতে ঢুঁ মারতে পারেন এই ঠিকানায়। একেবারে নিরিবিলি পরিবেশ। অল্প কয়েকজন পাহাড়ি মানুষের বাস এই গ্রামে। ছোট ছোট কাঠের ঘরবাড়ি। বিলাসবহুল হোটেল কিছু নেই, রয়েছে খানকতক হোমস্টে। ঘরোয়া পরিবেশে থাকা-খাওয়া। অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি আর ভাল লাগা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন সকলে। এমনই সুন্দর এখানকার পরিবেশ। কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা, চা-বাগানের সবুজালি রূপ, আর পাহাড়ের রূপ-রস-গন্ধ উপভোগ করার আদর্শ ঠিকানা এই গ্রামটি।