এই গরমে কোন জঙ্গলে গেলে বাঘ দেখতে পাবেন? ছবি: সংগৃহীত।
জঙ্গলপ্রেমী মূলত দু’প্রকার। এক দল, গরমে আর যাই হোক না কেন, জঙ্গলমুখো হবেন না! তাঁদের জন্য শরৎ, শীত, হেমন্ত, বসন্তই জঙ্গল ভ্রমণের সেরা সময়। আর অন্য দলটির পায়ের তলায় সর্ষে। বছরের যে কোনও সময়েই তাঁরা জঙ্গল ভ্রমণে যেতে প্রস্তুত। পারলে বর্ষাকালেও তাঁরা বন্যপশুদের প্রজনন দেখতে ছোটেন। তবে, বিষয় যদি বাঘ হয়, তা হলে অন্য কথা। সামনে থেকে জাতীয় পশুর হুঙ্কার শোনার জন্য যে কোনও ধরনের প্রতিকূলতাই জয় করে ফেলতে পারেন পর্যটকেরা। তবে, ভ্রমণপিপাসুদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এই গরমে তো চিড়িয়াখানায় গেলেও বাঘের দর্শন মেলে না। তবে, ভারতে এমন কিছু জাতীয় উদ্যান রয়েছে যেখানে গেলে প্রায় সারা বছরই বাঘের দেখা মেলে। জানেন, সেগুলি কোথায়?
১) রণথম্ভোর:
দেশে যে কয়েকটি জাতীয় উদ্যান রয়েছে তার মধ্যে রাজস্থানের রণথম্ভোর অন্যতম। অনেকেই বলেন, বাঘমামার দর্শন পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। যে হেতু এখানে বাঘের সংখ্যা বেশি, তাই সময় বুঝে গেলে তাদের দেখা পাবেনই। এখানে মূলত দু’টি সাফারি হয়। একটি ভোরে, অন্যটি বিকেলে। সাফারির জন্য রয়েছে জিপসি গাড়ি এবং বাস। তবে, যাওয়ার আগে অবশ্যই অনলাইনে বুকিং করে রাখতে হবে।
২) বান্ধবগড়:
মধ্যপ্রদেশে সাতপুরা পাহাড়ের কোলে অবস্থিত বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান। এখানেও বেশ ভাল সংখ্যক বাঘ রয়েছে। বাঘ দেখার জন্য এখানে বিভিন্ন পয়েন্ট রয়েছে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে সেই পয়েন্টগুলি থেকে বাঘ দেখা যায়। রণথম্ভোরের মতো এখানেও সকাল এবং বিকেল— দু’টি সাফারি হয়। তবে, বর্ষাকালে বেশির ভাগ জঙ্গল বন্ধ থাকে। তার আগে ঘুরে আসতে পারলেই ভাল। আগে থেকে অনলাইনে সাফারি বুক করে না রাখলে সুযোগ পাওয়া মুশকিল।
ছবি: সংগৃহীত।
৩) কানহা:
মধ্যপ্রদেশের সবচেয়ে বড় অভয়ারণ্য হল কানহা জাতীয় উদ্যান। এখানে চারটি পয়েন্ট রয়েছে। যে দু’টি পয়েন্ট থেকে বাঘ দেখার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, সেগুলি হল— কিসলি এবং মুক্কি। আগে থেকে এই দুই প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা করে রাখতে পারলে বাঘের দর্শন নিশ্চিত। কানহা জাতীয় উদ্যানে গাড়ি এবং হাতি— দু’রকম সাফারির ব্যবস্থা রয়েছে।
৪) টাডোবা:
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর জেলায় অবস্থিত টা়ডোবা জাতীয় উদ্যান। তার ভিতর রয়েছে টাডোবা-অন্ধেরি ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পটি। এখানে বাঘ দেখার সেরা সময় গরমকাল। তীব্র গরমে মাঠঘাট, নদী-নালা শুকিয়ে খটখটে হয়ে যায়। তাই বনের পশুদের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ওয়াটার হোল তৈরি করা থাকে। সময়ে-অসময়ে সেখানে জল খেতে বা গা ডুবিয়ে বসতে আসে বাঘমামা। তখন সহজেই তাদের দর্শন পাওয়া যায়। এখানেও সকাল এবং বিকেলে সাফারি হয়। জিপ এবং বাস, এই দুই ধরনের গাড়িতে সাফারি করার ব্যবস্থা রয়েছে।
৫) পান্না:
মধ্যপ্রদেশের আরও একটি জাতীয় উদ্যান হল পান্না। বলাই বাহুল্য, এই জঙ্গলের মূল আকর্ষণ বাঘ। মাডলা এবং হিনৌলতা— বাঘ দেখতে হলে এই দু’টি প্রবেশদ্বার দিয়ে যাওয়াই ভাল। এখানেও বাঘের সংখ্যা বেশ ভালই। ‘কোর এরিয়া’তে পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে, যেটুকু অংশে সাফারি করায় ছাড় রয়েছে সেখানেও বাঘ দেখা যায়। ভোরে এবং বিকেলে— এই দু’টি সময়ে সাফারি হয়। হুড খোলা জিপে চড়ে বাঘসাফারি করতে যেতেই পারেন এই জাতীয় উদ্যানে।