ঘুরতে যাওয়া শুরুই হয় প্যাকিং থেকে। আর প্যাকিং করার আগে ঠিক ব্যাগ নির্বাচনও দরকার। ঢাউস ব্যাগ নিয়ে যেমন উইকেন্ড ট্রিপে যাওয়া যায় না, তেমনই শুধু একটা হ্যান্ডব্যাগ নিয়েও তো এক সপ্তাহের ট্রিপ হবে না। তাই ট্রিপ অনুসারে কেমন ব্যাগ বাছলে সুবিধে হবে, সেটাই আগে জানা দরকার।
রকমফের
হুইলড লাগেজ: একটা সময় ছিল কুলিকে ডেকে একের পর এক লাগেজ তাঁর মাথায়, হাতে, কাঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। কিন্তু এই চাকাওয়ালা ব্যাগ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে যাত্রাপথ। রাস্তাঘাটে সহজেই চাকার সাহায্যে ভারী ব্যাগ গড়িয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। এই ধরনের ব্যাগের অনেক ভাগ রয়েছে।
রোলিং লাগেজ: বড় লাগেজ ব্যাগ, যাতে চাকা লাগানো থাকে। এই ধরনের ব্যাগ বিভিন্ন আকারেও পেয়ে যাবেন। তাই বিজ়নেস, ফ্যামিলি না কি রোড ট্রিপ... সেই অনুসারে ব্যাগের আকার বেছে নিন।
ট্রাভেল ডাফলস: বেসিক ডাফল ও হুইলড ডাফল— দু’ধরনেরই পেয়ে যাবেন বাজারে। এই ব্যাগে জিনিস ধরেও অনেক বেশি। ক্যারি করাও সহজ। ব্যাগের ভিতরে জিনিসপত্র ঘেঁটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গন্তব্যে পৌঁছে ডাফল ব্যাগ থেকে জিনিস বার করার সময়ে সচেতন থাকতে হবে। বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করলে পুরো ব্যাগ আনপ্যাক করে আবার গোছাতে হবে। ২০-৩০ লিটার থেকে ১০০ লিটার পর্যন্ত ওজনের জিনিসও বহন করতে পারবেন এই ধরনের ব্যাগে।
ট্রাভেলপ্যাক: এ ক্ষেত্রে ব্যাগ কাঁধে নিয়েই চলতে হবে, কারণ চাকা থাকে না। কিন্তু বন্ধুর রাস্তায়, পাহাড়ি পথে, সিঁড়িতেও এই ট্রাভেলপ্যাক পিঠে করে এগিয়ে যেতে পারেন সহজে। বিশেষত, এর মধ্যে অর্গানাইজ়ার, হাইডঅ্যাওয়ে হিপবেল্ট, শোল্ডার স্ট্র্যাপ, বিল্ট-ইন সিকিয়োরিটি, এমনকি লকেবল জ়িপারস থাকে। ফলে ভ্রমণকালীন সব জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা সহজ। তবে চাকা লাগানো ব্যাকপ্যাকও পাওয়া যায়। রোড ট্রিপেও বেশ কাজে লাগে।
মনে রাখবেন
• প্রত্যেক ট্রিপের প্রয়োজন আলাদা। যেমন হাইকিং বা ট্রেকিংয়ে টেন্ট, স্লিপিং ব্যাগ ইত্যাদি অনেক জিনিস বহন করার প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে ব্যাগও তেমন হতে হবে। ৭০- ১০০ লিটার ওজনের জিনিস ধরার ক্যাপাসিটি থাকতে হবে। এই ধরনের ট্রিপে রাকস্যাক বা ট্রাভেলপ্যাক খুব কাজে লাগে।
• আট-দশ দিনের ট্রিপ হলে ৫০-৭৫ লিটার ওজন বহন করার মতো ব্যাগ বাছতে হবে। তবে হুইলড লাগেজ খুব সহায়ক। হুইলড ডাফলও নিতে পারেন।
• উইকেন্ড ট্রিপ বা তিন-চার দিনের জন্য ঘুরতে গেলে ক্যারি-অন বা বেসিক ডাফল নিয়ে নিতে পারেন।
• বেড়াতে যাওয়ার সময়ে যা জিনিস লাগে, ফেরার সময়ে তার চেয়ে লাগেজ বেড়েও যেতে পারে। যদি এমন কোনও জায়গায় যান, যেখান থেকে অনেক কিছু কেনাকাটা করার সম্ভাবনা রয়েছে, তা হলে ফোল্ডেড ব্যাগ রাখুন সঙ্গে। ফিরতি পথে কাজে লাগবে।
• কিছু ব্যাগ থার্মোপ্লাস্টিক ইউরেথিন দিয়েও তৈরি হয়। ফলে ওয়াটারপ্রুফ হয় এবং স্থায়িত্বও বাড়ে। এই ধরনের ব্যাগের দামও বেশি। আবার কিছু ধরনের ব্যাগ হয় সফ্ট-সাইডেড। এই ধরনের ব্যাগে লাগেজ বেশি ভরা হলেও সমস্যা হয় না। কারণ এই ব্যাগের ইলাস্টিসিটি বেশি। আবার আর এক ধরনের ব্যাগ হার্ড সাইডেড। এই ধরনের ব্যাগে খুব বেশি লাগেজ ভরা না গেলেও এই ব্যাগে জিনিসপত্র অনেক বেশি সুরক্ষিত। কারণ অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে কভার করা থাকায় ভাল প্রোটেকশন পাওয়া যায়। এ বার আপনার প্রয়োজন অনুসারে বেছে নিন।
• কিছু ব্যাগে দু’টি ও কিছু ব্যাগে চারটি চাকা থাকে। চার চাকা থাকায় তা নিয়ে যাতায়াত করাও সহজ। এ ছাড়াও ব্যাগে ল্যাপটপ কমপার্টমেন্ট, ট্যাবলেট স্টোরেজ থাকে। কিছু ব্যাগে রিমুভেবল ডেপ্যাক থাকে। গন্তব্যে পৌঁছে বড় লাগেজ রেখে এই ডে-প্যাক নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন।
যে ব্যাগই নিন, ফিরে তা আনপ্যাক করে পরিষ্কার করাও জরুরি।