আগে থেকে পরিকল্পনা করলে বাবা-মাও পেতে পারেন লাদাখ ভ্রমণের স্বাদ ছবি: সংগৃহীত
লাদাখের কথা শুনলে প্রথমেই মাথায় আসে দুর্গম পার্বত্য উপত্যকার কথা। প্রতি বছর রোমাঞ্চের জন্য এখানে ছুঁটে যান অসংখ্য মানুষ। অথচ বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে লাদাখ যাওয়ার কথা খুব বেশি মানুষ ভাবেন না। মূলত প্রকৃতির দুর্গম রূপই এর কারণ। ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন আগে থেকে পরিকল্পনা করলে বাবা-মাও পেতে পারেন লাদাখ ভ্রমণের স্বাদ।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। চিকিৎসকের পরামর্শ
এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে লাদাখের প্রকৃতি চরমভাবাপন্ন। তাই বয়স্ক মানুষদের জন্য কঠিন হতে পারে লাদাখ যাত্রা। যাতে ভ্রমণ কোনও বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়, তার জন্য যাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিন। হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা কিংবা শ্বাসকষ্ট থাকলে কী করণীয় তা জেনে নিন চিকিৎসকের থেকে।
২। কোন পথে যাবেন
সমতল থেকে অধিক উচ্চতায় গেলে ‘অল্টিটিউড সিকনেস’ দেখা দিতে পারে। তাই উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। মানালির রাস্তায় লেহ না গিয়ে শ্রীনগর হয়ে যেতে পারলে কিছুটা সুবিধা হতে পারে। লেহতে পৌঁছে অন্তত একটা গোটা দিন বিশ্রাম নিতে হবে। আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে প্রথমে যান নুব্রা ভ্যালি। তার পর যথাক্রমে প্যাংগং ও সো মোরিরি। তবে যাওয়ার পথে যদি বেশি বয়সের মানুষদের অল্টিটিউড সিকনেসের লক্ষণ দেখা দেয় তবে সফর বাতিল করাই বিচক্ষণতার পরিচয় হবে। তবে ওষুধ-পত্র খাওয়ানোর আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়াই ভাল। বিমানে গেলে অন্তত দু’দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে।
৩। পোশাক
শুধু মোটা উলের পোশাক নয়। বিভিন্ন স্তরের জন্য বিভিন্ন পোশাক নিন। অর্থাৎ ভিতরে পরার জন্য পাতলা পোশাক ও বাইরের জন্য ভারী পোশাক নিতে হবে। বিশেষ করে বাইরে পরার জন্য হওয়া আটকায় এমন পোশাক নেওয়া বাঞ্ছনীয়। হাত ও পায়ের মোজা এবং কান ও গলা ঢাকা পোশাকও নিতে হবে সঙ্গে। মনে রাখবেন, লাদাখের আবহওয়া চরমভাবাপন্ন, দিন ও রাতের উষ্ণতার মধ্যে বিস্তর ফারাক।
৪। থাকার জায়গা
লাদাখে খোলা আকাশের নীচে তাঁবুতে থাকার অভিজ্ঞতা খুবই আকর্ষণীয়। কিন্তু বয়স্ক মানুষদের জন্য বিষয়টি মোটেই আরামদায়ক নয়। হোটেলে থেকে ভ্রমণ করাই সে দিক থেকে বেশি সহজ হতে পারে। তাঁবুতে যদি থাকতেই হয়, তবে প্যাংগং হ্রদের পার্শ্ববর্তী তাঁবুতে থাকাই ভাল। এখানে বেশ কিছু বিলাসবহুল তাঁবু রয়েছে। বয়স্ক মানুষদের জন্য সাধারণ তাঁবুর থেকে এই তাঁবুগুলি বেশি সুবিধাজনক।
৫। চিকিৎসা
চিকিৎসকের অনুমতি পেলে কিছু সাধারণ ওষুধপত্র নিয়ে নিতে পারেন সঙ্গে। বমি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও পেটের সমস্যার মতো সাধারণ সমস্যার ওষুধ অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। কোল্ড ক্রিম ও সানস্ক্রিন লোশন নিতে ভুলবেন না। তবে শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে লেহ মেমোরিয়াল হাসপাতালে যেতে পারেন। এটি সোনম নরবু মেমোরিয়াল হাসপাতাল নামেও পরিচিত। এই হাসপাতালটি আপতকালীন সমস্যার জন্য খুবই উপযোগী। পাশাপাশি দরকারে যেতে পারেন সেনাবাহিনীর হাসপাতালেও।