হাতের মুঠোয় আইফোন! ছবি: সংগৃহীত।
অ্যাপলের আইফোন এসই ৪ আমরা ২০২৪ সালেও পেলাম না । দু’বছরেরও বেশি হয়ে গেল নতুন কোনও এসই সিরিজ়ের ফোন আসেনি। কিন্তু চারদিকে অনেক রকম জল্পনা শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, সবুরে এ বার মেওয়া ফলবে। কম দামে আইফোন কে না চান! আর সেই আইফোনে যদি এত উন্নত হয়, তা হলে তো অপেক্ষা করা সার্থক।
নতুন আইফোন এসই ৪-এ আমরা কী কী উন্নত প্রযুক্তি পাচ্ছি? নতুন ডিসপ্লে, উন্নত ক্যামেরা, আরও উন্নত প্রসেসর এবং পরবর্তী কালে আমরা এই আইফোনে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের সুবিধাও পেতে পারি।
এক কথায় বলা যেতে পারে, আইফোন ১৬ সিরিজ়ের থেকেও আইফোন এসই ৪ অনেক বেশি আকর্ষণীয় হতে চলেছে।
জল্পনা সত্যি হলে আইফোন এসই ৪-এ আমরা কী কী পেতে পারি?
অ্যাপলের নিজস্ব ৫জি মোডেম:
এ বার কি ৫জি সংযোগে একটি নতুন যুগ আসবে? অ্যাপল তার নিজস্ব ৫জি মোডেম তৈরি করছে, যার নাম ‘সেঞ্চুরি’। মার্ক গুরম্যানের মতে, আইফোন এসই ৪ এই চিপযুক্ত প্রথম ডিভাইস হতে পারে। এই পদক্ষেপটি অ্যাপলকে বেশ কিছু সুবিধা দেবে।
১. অ্যাপল এত কাল তাদের ফোনে কোয়ালকমের মোডেম ব্যবহার করত। এ বার কোয়ালকমের উপর তাদের নির্ভরতা হ্রাস পাবে।
২. বাস্তব দুনিয়ায় তাদের এই মোডেম তারা পরীক্ষা করতে পারবে এই ফোনের মাধ্যমে। এখনই বহু ফোনে এই মোডেম যে হেতু দেওয়া হচ্ছে না, তাই তাদের উৎপাদন খরচ নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।
৩. এর ফলে অ্যাপলের এই নতুন মডেলের কার্যকরিতা উন্নত হবে।
এটি শুধুমাত্র ৫জি মোডেমের কাজ করবে না। এটি ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস ইত্যাদি ব্যাপারেও সাহায্য করবে।
আইফোন এসই ৪-এর ডিজাইন এবং ডিসপ্লে:
নাইন টু ফাইভ ম্যাকের রিপোর্ট থেকে আমরা জানতে পারছি যে আইফোন এসি ফরে ৬.১ ইঞ্চি একটা ওলেড ডিসপ্লে থাকবে আইফোন ফরটিনের মত। এ বার কিন্তু আগের মতো আর চওড়া মোটা ভেজাল থাকবে না বলে আশা করা যায়। তবে ডিসপ্লেতে ডায়নামিক আইল্যান্ড থাকবে না, থাকবে গত বছরের মতো নচ। দেখতে হবে ওই অনেকটা ২০১৭ সালের আইফোন এইটের মত। ২০২৩ সালের পর আরও বেশ কিছু রিপোর্ট থেকে আমরা এই ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত হতে পারি যে এবার গত আইফোন এসির মত ডিসপ্লেতে এলসিডি থাকছে না।
আইফোন এসই ফোরের স্পেসিফিকেশন এবং বৈশিষ্ট্য:
যে হেতু শেষ আইফোন এসই ২০২২ সেই সময়ের সর্বশেষ আইফোন ১৩-এর মতোই বায়োনিক এ ১৩ প্রসেসর দিয়ে এসেছিল, তাই এ বারও আশা করা যায় আইফোন এসই ৪-এ আমরা আইফোন ১৬ সিরিজ়ের সর্বশেষ সংস্করণ বায়োনিক এ ১৮ প্রসেসার পাওয়া যাবে। তবে বায়োনিক এ ১৮ চিপসেট দেওয়ার আর একটা বড় কারণ অবশ্যই এ বারের ফোনে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স থাকা। অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স চালাতে হলে বায়োনিক এ১৮ প্রসেসর ছাড়া উপায় নেই। এই বছরে আইফোন ১৬ সিরিজ়ের প্রায় সব ফোনেই ব্যাটারির আকার বাড়িয়েছে অ্যাপল। তাই আশা করা যায় ২০২৫ সালের আইফোন এসই সিরিজ়ের ফোনে আমরা তুলনামূলক বড় ব্যাটারি পাব। তা ছাড়া আইফোন এসই ৪-এ যে হেতু জায়গা বেশি পাওয়া যাচ্ছে, তাই আশা করা যায় ব্যাটারি বড়ই থাকবে। ব্লুমবার্গের সর্বশেষ রিপোর্ট থেকেও জানা যাচ্ছে যে, আইফোন এসই ৪-এ অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের প্রযুক্তি থাকবে।
ক্যামেরার সংখ্যা না বাড়লেও মান উন্নত হবে বলে আশা করা যায়। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ফোনে একটিমাত্র ক্যামেরা থাকবে ৪৮ মেগাপিক্সেলের। সামনে থাকবে ১২ মেগাপিক্সেলের ‘ট্রু ডেপ্থ’ ক্যামেরা। একটি ‘ট্রু ডেপ্থ’ ক্যামেরা দেওয়া হবে মূলত ফেসিয়াল রেকগনাইজ়েশনের জন্য।
কিন্তু আইফোন এসই ৪ আসছে কবে?
ব্লুমবার্গের মার্ক গারম্যানের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অ্যাপল তাদের আইফোন এসই ৪ আনতে পারে ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে।
এই নতুন আইফোনের দাম কত হতে পারে?
আইফোন এসই সিরিজ়ের শেষ ফোনের দাম ছিল বেশ কম, ৪২৯ ডলার। কিন্তু তার পর দু’বছরে ফোনের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এই ফোনের প্রতিযোগী পিক্সেল ৮ বা ওয়ান প্লাস ১২-এর মতো ফোনগুলি কিন্তু ৪৯৯ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। তাই আশঙ্কা করা যায় আইফোন এসই ৪-এর দাম সামান্য হলেও বাড়বে। ১২৮ জিবির ফোন আশা করা যায় ৪০ হাজার টাকাতেই পাওয়া যাবে।
এ বার কি মনে হচ্ছে আইফোন কেনার জন্য ২০২৫ সালের মার্চ-এপ্রিল মাস অবধি অপেক্ষা করাই যায়?