সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ল চুরির ঘটনা।
মাসখানেক আগে একবার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর থেকে শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চুরি যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করেছিল ক্যানিং থানার পুলিশ। ঘটনার পরে এক মাস কাটতে না কাটতেই সোমবার সকালে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল থেকে ফের সদ্যোজাতকে চুরির ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। তবে এ বারও দিনের দিন উদ্ধার করা গিয়েছে শিশুটিকে। গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলাকে।
হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, নাজমা খাতুন নামে এক মহিলা শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যায় ঘুটিয়ারিশরিফে তল্লাশি চালিয়ে নাজমার বাড়ি থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করে ক্যানিং থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় নাজমাকে।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রের খবর, জীবনতলা থানার ঘুটিয়ারিশরিফের বাসিন্দা রূপাইয়া নাথ নামে এক অন্তঃসত্ত্বা সোমবার সকালে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। চিকিৎসকেরা জানান মহিলার যমজ সন্তান। দ্বিতীয় সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় সকাল ১০টা নাগাদ।
প্রথম সন্তান জন্মানোর পরে তাঁকে এক মহিলার কাছে রাখতে দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই মহিলা নিজেকে রূপাইয়ার দিদি বলে পরিচয় দিয়েছিল। নাম বলেছিল, নাজমা খাতুন। কী জন্য সে শিশুটিকে চুরি করেছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বেলা ১০টা নাগাদ হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে মহিলা সদ্যোজাতকে নিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানির পরে নড়েচড়ে বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ক্যানিং থানার পুলিশ রূপাইয়ার স্বামী হাসান মোল্লা-সহ দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ থেকে শিশু চুরির ঘটনায় পরিকাঠামোর গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার। যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সুপার বলেন, ‘‘আগের শিশু চুরির ঘটনায় হাসপাতালের ভিতরের কোনও বিষয় ছিল না। তবে এই ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। আসলে আমাদের হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ থেকে শুরু করে নিরীক্ষণ বিভাগে জায়গা অপ্রতুল। সে কারণে অনেক সময়েই প্রসূতি মায়েরা এক সঙ্গে বেশি ভর্তি হলে সমস্যা হয়। বিষয়টি কী ভাবে সামলানো যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এ দিনের ঘটনায় যাঁদের যাঁদের কর্তব্যে গাফিলতি চোখে পড়বে, তাঁদের শো-কজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ এ সবের পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে বলেও জানিয়েছেন সুপার।