লিগ টেবলে দু’দলই প্রথম পাঁচে। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সামনে রবিবারের মহারণ জিতে লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সামনে তেমনি সিটিকে টপকে যাওয়ার হাতছানি। তবে রবিবাসরীয় ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বির আগে পাঁচটা প্রশ্নের দিকে নজর রয়েছে সবার।
ম্যান ইউকে জেতানোর ক্ষমতা রয়েছে ওয়েন রুনির?
শেষ বার ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বিতে রুনির গোল দু’বছর আগে। যদিও সেই ডার্বিতে ১-৪ বিধ্বস্ত হয়েছিল ইউনাইটেড। তারও বছর খানেক আগে জোড়া গোলে রেড ডেভিলস-কে জিতিয়েছেন ডার্বিতে। তবে মাঝে তাঁর গোল খরা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। সে সব কাটিয়ে ৩০ বছরের ইংরেজ তারকা চলতি মরসুমে ফের ফর্মে। ১৫ ম্যাচে দেশ আর ক্লাব মিলিয়ে ৮টা গোল করেছেন। এর মধ্যে এভার্টনের বিরুদ্ধে গোলও আছে। যেটা ১১ মাসে ইউনাইটেডের জার্সিতে তাঁর প্রথম অ্যাওয়ে গোল। ইউনাইটেড ম্যানেজার লুই ফান গল ক্যাপ্টেনকে নিয়ে আশাবাদী। বলেছেন, ‘‘রুনি সবার জন্য এক উদাহরণ। শুধু সতীর্থদের নয়, অন্য ক্লাবের প্লেয়ারদের কাছেও।’’ বলা হচ্ছে, রুনি খারাপ ফর্মে টিমের বোঝা হলেও ভাল ফর্মে থাকলে এখনও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ধরেন। এই যুদ্ধেও ম্যান ইউ তাই ভরসা করতেই পারে বিশ্বস্ত সেনাপতির উপর।
সের্জিও আগেরো আর দাভিদ সিলভার অভাব কী ভাবে পূরণ করবে সিটি?
চোটের ধাক্কায় কাবু আক্রমণের এই দুই ভরসা ছাড়া দু’ম্যাচ খেলে দুটোতে জিতেছে সিটি। সাতটা গোল বিপক্ষের জালে জড়িয়ে দুটো গোলও খেতে হয়েছে। তবে বলা হচ্ছে জিতলেও তাঁদের অভাব কেউই পুরোপুরি পূরণ করতে পারেনি। সিটির কোচ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির হাতে অবশ্য একাধিক বিকল্প হাজির। ফের্নান্দো, ফের্নান্দিনহোকে ডিপে ঠেলে দিয়ে ইয়াইয়া টোরে-কে ফরোয়ার্ডে তুলে এনে মিডফিল্ডে ভারসাম্য আনা বা ডান দিকের উইংয়ে জেসাস নাভাসকে নিয়ে আসা। তবে মনে করা হচ্ছে, অনেক কিছু নির্ভর করছে সিটির ফরোয়ার্ড উইলফ্রেড বনির উপর। আইভরি কোস্টের ফরোয়ার্ড ২১ ম্যাচে চার গোল করেছেন সিটির জার্সিতে। চোট-আঘাতের সমস্যা কাটিয়ে এ বার কতটা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন সেটাই দেখার। তবে আরও একটা জল্পনা রয়েছে। অনিশ্চিত সিলভাকে ডার্বিতে ফিরিয়ে একটা চমক দিতে পারেন পেলেগ্রিনি।
ম্যান ইউ-র মিডফিল্ড কী হতে পারে?
ফান গলের সবচেয়ে বড় সুবিধে মিডফিল্ডে তাঁর হাতে বিকল্প রয়েছে। সেটা আবার বিপদের কারণও হয়ে উঠতে পারে। কেন না বলা হচ্ছে, চলতি মাসেই আর্সেনাল ম্যাচে মাইকেল ক্যারিককে মাঝমাঠে নামিয়ে কেলেঙ্কারি করে ফেলেছিলেন ডাচ কোচ। আর্সেনাল ক্যারিকের ‘শামুকের গতির’ পুরো ফায়দা তুলে ৩-০ হারিয়েছে ইউনাইটেডকে। পাশাপাশি ফুটবল বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, অ্যান্ডার হেরেরাকে সামনে রেখে, বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগার আর মর্গ্যান শেনেইডারলিনের ত্রিভুজ ফান গলকে মাঝমাঠে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ দিতে পারে। ফান গল হেরেরার উপর সেই ভরসা রাখতে পারেন কি না তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।
মেম্ফিস ডিপে কি সুযোগ পাবেন প্রথম একাদশে?
পিএসভি আইন্দোভেন থেকে ২৫ মিলিয়ন পাউন্ডে ম্যান ইউতে সই করেছিলেন গত গ্রীষ্মে। রেড ডেভিলস সমর্থকদের তাঁর উপর ভরসাও ছিল প্রচুর। কিন্তু ইউরোপের অন্যতম উঠতি তরুণ প্রতিভা বলা হলেও মেম্ফিস ডিপে এখনও নিজের জায়গা প্রথম একাদশে মজবুত করতে পারেননি। তাঁকে নিয়ে ম্যান ইউ সমর্থকরা নতুন নায়ক হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখলেও ফান গল অবশ্য তাঁর ফর্ম নিয়ে বলছেন, ‘‘টিমের দর্শনের সঙ্গে অনেকেই খাপ খাওয়াতে পারছে না। সেটা এখন দেখা যাচ্ছে। দলে সই করার আগে এটা বোঝার উপায় ছিল না। দি মারিয়া, ফালকাওর ক্ষেত্রেও এটা হয়েছে।’’
ভিনসেন্ট কোম্পানি শুরু থেকে সিটির দলে থাকবেন?
এ মরসুমে সিটি মোট ১১৭০ মিনিট খেলেছে। যার মধ্যে ক্যাপ্টেন কোম্পানি ছিলেন ৫২৭ মিনিট। যিনি মাঠে থাকা অবস্থায় সিটি গোল খেয়েছে এক। আর তাঁর অনুপস্থিতিতে বারো। বোঝাই যাচ্ছে কোম্পানির থাকাটা সিটির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে চোট থেকে ফিরে আসা কোম্পানির প্রথম একাদশে থাকা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন পেলেগ্রিনি। বলেছেন, কোম্পানির জায়গায় খেলা নিকোলাস ওটামেন্ডি আর মানগালা দু’জনই ভাল খেলছেন। তাই প্রথম একাদশ এখনই বলা মুশকিল। ডার্বিতে কোম্পানিকে নিয়ে কি ছক মাথায় রয়েছে পেলেগ্রিনির সেটাই দেখার।