যুবরাজকে সচিন, তোমার এখনও অনেক কিছু দেওয়া বাকি ক্রিকেটকে

যে ভাবে যুবরাজ সিংহের দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সমালোচনার বুলেট ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসেছে তাতে চুপ করে থাকতে পারলেন না সচিন তেন্ডুলকরও। যুবরাজের পাশে থাকার জন্য তিনি বেছে নিলেন সোশ্যাল সাইটকে। কিংবদন্তি ক্রিকেটার ফেসবুকে লিখেছেন, “অনিশ্চয়তাই ক্রিকেটকে এত উত্তেজক খেলা করেছে। ক্রিকেটার হিসেবে সাফল্যের পর প্রশংসাটা আমরা উপভোগ করি। কিন্তু খারাপ সময়ে সমর্থকদের কাছ থেকে সমর্থন এবং উৎসাহ পাওয়াটাকে আমরা আরও প্রশংসার চোখে দেখি।”

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৮
Share:

ঘরে ফেরার পালা। মুম্বই বিমানবন্দরে যুবরাজ সিংহ। সোমবার। ছবি: পিটিআই

যে ভাবে যুবরাজ সিংহের দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সমালোচনার বুলেট ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসেছে তাতে চুপ করে থাকতে পারলেন না সচিন তেন্ডুলকরও।

Advertisement

যুবরাজের পাশে থাকার জন্য তিনি বেছে নিলেন সোশ্যাল সাইটকে। কিংবদন্তি ক্রিকেটার ফেসবুকে লিখেছেন, “অনিশ্চয়তাই ক্রিকেটকে এত উত্তেজক খেলা করেছে। ক্রিকেটার হিসেবে সাফল্যের পর প্রশংসাটা আমরা উপভোগ করি। কিন্তু খারাপ সময়ে সমর্থকদের কাছ থেকে সমর্থন এবং উৎসাহ পাওয়াটাকে আমরা আরও প্রশংসার চোখে দেখি।” সচিন আরও লিখেছেন, “২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বা ২০১১ বিশ্বকাপে যুবির অবদান আমরা সব সময় উপভোগ করব। রবিবার সন্ধেটা যুবির পক্ষে কঠিন গিয়েছে এবং ওর সমালোচনাও হতে পারে। কিন্তু তার জন্য ওকে শূলে চড়ানো বা ও শেষ হয়ে গিয়েছে এটা বলা ভুল।”

রবিবার শ্রীলঙ্কার কাছে ভারতের হারের পর কিছু সমর্থকের কাছে খলনায়ক হয়ে ওঠেন যুবরাজ। পঞ্জাবের তারকার ২১ বলে মাত্র ১১ রান করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে। সমালোচনার বন্যা বয়ে যায় টুইটার, ফেসবুকে। কিছু সমর্থক চণ্ডীগড়ে যুবরাজের বাড়িতে হামলাও চালায়। ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

সচিন এ দিন লিখেছেন, “যুবরাজের হার না মানা মনোভাবের আমি একজন ভক্ত। ওর এই অদম্য স্পিরিটই ওকে মাঠ ও মাঠের বাইরে অনেক চ্যালেঞ্জ সামলাতে সাহায্য করেছে। ওর মানসিক দৃঢ়তা আর লড়াই করার ক্ষমতাটা আমি জানি। জানি, ও আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে, আরও একবার সমালোচকদের ভুল প্রমাণ করবে।” শেষে যুবিকে উদ্দেশ্য করে সচিনের বার্তা, “যুবি এক দিন খারাপ গেলেও সেটা বছরের পর বছর তোমার অবদান আর দারুণ সব মুহূর্ত উপহার দেওয়াটা তুচ্ছ করতে পারবে না। আজ হয়তো তুমি কিছুটা চাপে আছো কিন্তু এখনও তোমার ক্রিকেটকে অনেক কিছু দেওয়ার বাকি রয়েছে।”

সচিনের মতো যুবরাজের সমর্থনে সতীর্থরা তো বটেই, এগিয়ে এসেছেন বলিউড তারকা ও সাধারণ মানুষও। হরভজন সিংহ রবিবার রাতেই যুবির সমর্থনে টুইট করেন, ‘‘সবাই যে ভাবে যুবরাজকে দোষ দিচ্ছে দেখে ধাক্কা লেগেছে। এই লোকটাই দুটো বিশ্বকাপ জিতেছে। ভারতের বিরল ম্যাচ উইনারদের অন্যতম।’ কিছুক্ষণ পরেই হরভজনের ফের টুইট, ‘‘প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ থেকে ন্যাটওয়েস্ট, ২০০৭ টি-টোয়েন্টি থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ। এমন একজন প্লেয়ার দেখান তো যে বড় ম্যাচে প্রচুর পারফর্ম করেছে। একটা দিন খারাপ যাওয়ায় আমরা সবাই কত তিক্ত কথা বলছি। ও কিন্তু মাঠে একা ছিল না। আরও ১০ জন ছিল।’’

সোমবার যুবরাজের বাবা যোগরাজ সিংহও প্রায় একই কথা বলেন, “একা যুবরাজকে দোষ দেওয়া উচিত নয়। যখন টিম হারে, সব দিক থেকেই সমালোচনার ঢেউ এগিয়ে আসে। জীবনের মতো ক্রিকেটেও ওঠা-নামা রয়েছে। যখন এক জন প্লেয়ার খারাপ ফর্মে থাকে তার মানসিক অবস্থা এমনই হয়ে যায় যে ভাবতে শুরু করে, যদি সে রান না করতে পারে টিমের বাইরে চলে যাবে বা টিম হেরে যাবে।” যোগরাজ আরও বলেন, “১৯৮৩ বিশ্বকাপ জেতার পর ভিভ রিচার্ডস স্বয়ং ভারতীয় ড্রেসিংরুমে এসে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমাদের থেকে ভাল ক্রিকেট খেলেছ। তাই জয়টা তোমাদের প্রাপ্য।’ এই মানসিকতা থাকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

বলিউড কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চন যুবরাজের নাম না করে ব্লগে লেখেন, “শ্রীলঙ্কার কাছে হারটা হতাশাজনক ঠিকই, কিন্তু আমাদের টিম যে ভাবে ফাইনালে উঠেছে তাতে গর্বিত। দিনটা আমাদের ছিল না।” আর এক বলিউড তারকা রাহুল বোস টুইটে যুবরাজের বাড়িতে হামলার সমালোচনা করেন। ‘‘যুবরাজের বাড়িতে পাথর ছোড়া হয়েছে। লজ্জাজনক ঘটনা। প্রত্যেক খেলোয়াড়ই মাঠে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের সবারই ভাল বা খারাপ দিন আসতে পারে।” এ ছাড়া, চিত্র পরিচালক মধুর ভান্ডারকর, অভিনেতা রীতেশ দেশমুখ-সহ বলিউডের অনেকেই যুবরাজের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement