মদনদেবের অভিশাপ না কি পিটুইটারির খেল?
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব শুরুর আগে এই প্রশ্নেই জেরবার বিশ্ব ফুটবলের তাবড় তাবড় বিশ্লেষকরা।
কেন জেরবার? দেখা যাচ্ছে, বিশ্বকাপ শুরুর আগে যে সব শিবিরে যৌনতা নৈব নৈব চঃমার্কা অদৃশ্য পোস্টার টাঙিয়ে দিয়েছিলেন এ ব্যাপারে কঠোর মনোভাবের কোচেরা, সেই সব ‘কাম-গন্ধ নাহি’-র আওতায় থাকা ফুটবলারই দেশে ফিরে গিয়েছেন গ্রুপ লিগ পর্যায় বা শেষ ষোলোর পরেই।
উদাহরণ-স্কোলারি, ফান গল, জোয়াকিম লো, দিদিয়ের দেশঁ, —কেউই ফুটবলারদের যৌনতা নিয়ে খড়গহস্ত হননি। ফুটবলারদের হোটেলে স্ত্রী এবং বান্ধবীদের থাকা নিয়ে আপত্তি নেই এদের কারও। স্কোলারি কেবল বিশ্বকাপের গুরুত্ব বুঝে ছোট্ট একটা সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন নেইমার, দানি আলভেজদের, “যৌন সংসর্গে আপত্তি নেই। কিন্তু উদ্দাম সংসর্গ নয়।” স্কোলারির যুক্তি ছিল, ভাইটাল ম্যাচের আগের রাতে উদ্দাম সংসর্গে প্রথম একাদশের ফুটবলার জখম হয়ে ম্যাচে অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। প্রায় একই রকম সতর্কবার্তা ছিল ফ্রান্স এবং কোস্টারিকার কোচের তরফেও।
যাক সে কথা, দেখা যাচ্ছে এই ব্রাজিল, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, কোস্টারিকা, ফ্রান্স এই পাঁচ দলই চলে গিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে সমীক্ষকরা পর্যবেক্ষণ চালাননি, আর্জেন্তিনা, বেলজিয়ামের ফুটবলারদের নিয়ে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নাইজিরিয়া, সুইৎজারল্যান্ড শিবিরও যৌনতামুক্ত ছিল না। যারা প্রত্যেকেই গিয়েছে শেষ ষোলোয়।
উল্টোদিকে, রাশিয়ার কোচ ফাভিও কাপেলো, স্পেনের কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কি, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার কোচ সুসিচ, চিলির কোচ জর্জ সাম্পাওলি, মেক্সিকোর কোচ মিগুয়েল হেরেরা বিশ্বকাপের সময় যৌন সংসর্গ থেকে সরিয়ে রেখেছিলেন ফুটবলারদের। এই চার কোচই ফুটবলারদের নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছেন। এরা আবার তুলে আনছেন মহম্মদ আলির দর্শন। যিনি লড়াইয়ের ছ’সপ্তাহ আগে থেকেই যৌনতাকে জীবন থেকে সরিয়ে রাখতেন।
সমীক্ষক এবং বিশ্লেষকদের বক্তব্য, যৌনতা ফুটবলারদের চাপমুক্ত এবং ফুরফুরে মেজাজে রাখে। আর এদের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি বলে সাফল্যও আসেনি। সে রকম ভাবেই উঠে এসেছে চেলসির এডিন জেকোর নাম। তাঁর মডেল বান্ধবী আমরা সিলাজিক ব্রাজিলে আসতে পারেননি কোচের ফতোয়ায়। সমীক্ষকদের দাবি জিকোর দেশে তাই ছন্দে দেখা যায়নি জেকোকে। সব সময়ই মুখ ব্যাজার করে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
তবে এ ব্যাপারে গবেষকরাও দু’ভাগ। কেউ বলছেন যৌনতায় দেহ-মন তৃপ্ত হওয়ায় এনডরফিন-সহ বেশ কিছু হরমোন ক্ষরিত হয়, যা শরীরকে চাপমুক্ত ও চাঙ্গা রাখে। তবে বিরুদ্ধবাদীরাও রয়েছেন। যারা বলছেন, বিশ্বকাপের আসরে যৌনতা পারফরম্যান্স কমিয়ে দিতেও সক্ষম।
তবে যুক্তি ও পাল্টা যুক্তির মারপ্যাঁচের মধ্যে শেষ আটে যাওয়া ফুটবলারদের দিল খুশ পাশে বান্ধবী বা স্ত্রীর সান্নিধ্য পাওয়ায়। যৌনতা, বিশ্বকাপ দু’টোই একসঙ্গে চেটেপুটে উপভোগের সপ্তম স্বর্গে ফান পার্সি, নেইমাররা।
ফাইনালের নির্ভুল ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। সেই নেলি এ দিন ফ্রান্স বনাম জার্মানি ম্যাচের ভবিষ্যৎ
বাতলাতে নেমে এক শটে বল পাঠাল ফ্রান্সের গোলে। ছবি: এএফপি।