অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।
দাবি করলেন, দূর মেলবোর্নে বসে ক্রিসমাসের দিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর ফোন যথেষ্ট আশ্চর্য করে দেয় তাঁকে। স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচির অন্যতম ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হওয়ার প্রস্তাব পেয়ে ভাল লাগার সঙ্গে বিস্ময়টাও সমপরিমাণে ছিল। মেলবোর্ন সময় রাত্তির ন’টা নাগাদ এবিপি-কে ফোনে সাক্ষাত্কার দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
প্রশ্ন: সবাই বলেছে বাপি বাড়ি যা হয়ে গেছে।
সৌরভ: কেন?
প্র: কারণ, এটা তো শুধু হাই প্রোফাইল মনোনয়ন নয়। বিরাট রাজনৈতিক বিবৃতিও যে সৌরভ আমাদের সঙ্গে!
সৌরভ: আমার মনে হয় না। আমি এর মধ্যে কোনও বিবৃতি খুঁজতে রাজি নই।
প্র: তা হলে আপনি কী ভাবে দেখছেন?
সৌরভ: বিরাট সম্মান, যা পেয়ে আমি রোমাঞ্চিত। কিন্তু এর মধ্যে রাজনীতির রং আছে অন্তত আমার বিশ্বাস হয় না। আমার সঙ্গে তো মিস্টার বচ্চন আছেন। সলমন খান, সচিন (অক্টোবরে সচিনের নাম ঘোষণা করেছিলেন মোদী) ওরাও আছে।
প্র: মিস্টার বচ্চন তো বহু দিনই বিজেপি ঘনিষ্ঠ। সলমনও তাই।
সৌরভ: হতে পারে। সচিন তো নয়। সচিনের তো ভারতরত্ন পাওয়া, রাজ্যসভায় মনোনয়ন— সবই কংগ্রেস আমলে। এটা রাজনৈতিক পোস্টিং হলে সচিনকে হয়তো ভাবা হত না। ওর থাকাটা আরও বেশি করে বোঝাচ্ছে স্বচ্ছ ভারতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হিসেবে নির্বাচনটা নিছকই সম্মান।
প্র: এর মানে এটা নয় যে পশ্চিমবঙ্গের আগামী নির্বাচনে সৌরভ বকলমে বিজেপিরই মুখ?
সৌরভ: একেবারেই না। আবার বলছি আমার মনোনয়ন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক।
প্র: তা মোদীর সঙ্গে তো কিছু দিন আগেও আপনি না কি দিল্লিতে দেখা করে এসেছেন?
সৌরভ: না না। আমার সঙ্গে ওঁর আগেও আলাপ ছিল যখন উনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তখন দেখাও করেছি ওঁর সঙ্গে।
প্র: শোনা গেছিল আমদাবাদে আপনাকে স্কুল খুলতে বলেছিলেন মোদী!
সৌরভ: উনি বলেছিলেন একটা এডুকেশন হাব খুলতে। কিন্তু পারিনি সব কিছু সামলে। কলকাতাতেই আমার স্কুল এখনও চালু করতে পারিনি।
প্র: প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তো মিট করেছেন?
সৌরভ: না। আর সামনাসামনি দেখা হয়নি। আজ ওঁর ফোন পেয়েও কিছুটা আশ্চর্য হয়ে যাই। তার আগে অবশ্য পিএমও মেসেজ পাঠিয়েছিল যে উনি কথা বলতে চান।
প্র: মোদী কি জানতেন আপনি মেলবোর্নে?
সৌরভ: না আমাকে পিএমও থেকে আমার ইন্ডিয়ার নাম্বারেই ফোন করা হয়েছিল। তার পর প্রাইম মিনিস্টার গাড়ি থেকে আমাকে ফোন করলেন। উনি বারাণসীতে মিটিংয়ে যাচ্ছিলেন তখন। বললেন আমার সম্মতি আছে কি না? তা হলে উনি সভায় অ্যানাউন্স করবেন।
প্র: স্বচ্ছ ভারত ক্যাম্পেন মানে আপনার কাজের ধরন কী হবে?
সৌরভ: সেটা উনি বললেন পিএমও থেকে আমাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্র: এমনিতেই আপনি কাজে কাজে ধ্বস্ত। আটলেটিকো-ব্যবসা-দাদাগিরি-সিএবি-কর্পোরেট বক্তৃতা-কমেন্ট্রি। তার মধ্যে স্বচ্ছ ভারতের সময় কোথায়?
সৌরভ: মনে হচ্ছে কমেন্ট্রিটা ছাড়তে হবে।
প্র: যাক তা হলে আর একবার জিজ্ঞেস করে নিচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার মনোনয়নের আলাদা কোনও তাত্পর্য নেই?
সৌরভ: আমার তো মনে হয় না কোনও তাত্পর্য আছে বলে। খবরটা জানাজানি হওয়ার পর অসংখ্য ফোন পাচ্ছি ইন্ডিয়া থেকে। এত অল ইন্ডিয়া টিভি চ্যানেল থেকে ফোন পেলাম। কিন্তু কেউ আপনার মতো জিজ্ঞেস করেনি, যে এটা রাজনৈতিক পোস্টিং কি না?
প্র: তা হলে কী জিজ্ঞেস করল?
সৌরভ: ওরা সম্মান হিসেবেই দেখছে।