‘ধোনির মস্তিষ্কের অভাব মনে হয় টের পাবে ভারত’

ওপার বাংলা থেকে বাংলাদেশের এক নম্বর অলরাউন্ডার আনন্দবাজারকে ফোনে যা যা বললেন...

Advertisement

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:৫৭
Share:

শাস্তির জন্য নেই প্রথম দু’ম্যাচে। প্র্যাকটিসে তবু খোশমেজাজে সাকিব আল হাসান। সোমবার। ছবি: এএফপি।

গত এশিয়া কাপের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট। নির্বাসনের কবলে পড়ে এ বার প্রথম দুটো ম্যাচে নেই, কিন্তু তাতে কী? সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ নিয়ে আগাম হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বাকি এশিয়াকে। ভারত ম্যাচ, ধোনির অনুপস্থিতি, বাংলাদেশের সম্ভাবনা সব নিয়ে সোমবার সন্ধেয় ওপার বাংলা থেকে বাংলাদেশের এক নম্বর অলরাউন্ডার আনন্দবাজারকে ফোনে যা যা বললেন...।

Advertisement

প্রশ্ন: দু’বছর পর আবার একটা এশিয়া কাপ। জায়গা একই, বাংলাদেশ। গত টুর্নামেন্ট তো আপনাদের কাছে এখনও সুখস্মৃতি।
সাকিব: হ্যাঁ। গত এশিয়া কাপ আমাদের জন্য খুব ভাল গিয়েছিল। পাকিস্তানের কাছে ফাইনালটা অল্পের জন্য হেরে গিয়েছিলাম। দু’রানে। ভাবলে এখনও আফসোস হয়। কিন্তু টুর্নামেন্টের বাকি দুই হেভিওয়েট ভারত এবং শ্রীলঙ্কা, দু’টো টিমকেই আমরা হারিয়েছিলাম।

প্র: কিন্তু এ বার তো পরিস্থিতিটা আলাদা।
সাকিব: কী রকম?

প্র: এ বার আপনাদের টিমকে খুব ভাল কেউ তেমন বলছে না। বাংলাদেশের লোকজনই বলছে, গত বারের চেয়ে এ বারের টিমটা একটু দুর্বল। তামিম ইকবাল নেই। মাহমুদুল্লাহ নেই। আপনি নিজে নির্বাসনের জন্য প্রথম দু’টো ম্যাচে নেই। বাংলাদেশকে টানবে কে?
সাকিব: জানি, নেই। কিন্তু আমাদের টিমে এ বার প্রচুর তরুণ ক্রিকেটার আছে। তবে তামিমের না থাকাটা ভাইটাল। বাংলাদেশকে ও অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে। কিন্তু যারা আছে, তারা জানে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কী ভাবে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সটা বার করে আনতে হয়। বাংলাদেশ কিন্তু সেরা ক্রিকেটটাই খেলবে।

প্র: কিন্তু গত বারের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট যিনি, সেই সাকিব আল হাসান নির্বাসনের জন্য প্রথম দু’টো ম্যাচে নেই। আক্ষেপ হচ্ছে না?
সাকিব: যদি ব্যক্তিগত দিক থেকে জিজ্ঞেস করেন, হচ্ছে। হতাশ লাগছে প্রথম দু’টো ম্যাচ নামতে পারব না ভেবে। কিন্তু টিমের দিক থেকে দেখলে, আমার জায়গায় একটা নতুন ছেলে খেলবে। সে-ও ভাল করতে পারে।

প্র: আপনাদের প্রথম ম্যাচটাই তো আবার ভারতের সঙ্গে।
সাকিব: হ্যাঁ। গত বার তো ভারতকে আমরা হারিয়েছিলাম। ঠিকঠাক খেললে, এ বারও সেটা অসম্ভব কিছু নয়।

প্র: গত বার এশিয়া কাপে ভারতকে হারানোর রাতটা মনে আছে? ওই ম্যাচটা হারাতেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় ঘটে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার।
সাকিব: নিশ্চয়ই। ওই ম্যাচটা আমাদের জন্য খুব ভাইটাল ছিল। তা ছাড়া ম্যাচটা ঐতিহাসিক হয়ে যায় কারণ, ওই ম্যাচে সচিন তেন্ডুলকরের শততম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিটা হয়। সে দিন টিম হোটেলে ফেরার পর অনেক রাত পর্যন্ত সেলিব্রেশন চলেছিল। ড্রেসিংরুমেও একচোট হয়েছিল।

প্র: এ বার ভারত আছে। কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নেই।
সাকিব: আমার মনে হয় সেটার প্রভাব পড়বে। ধোনির মতো ক্যাপ্টেন, ওর মতো মস্তিষ্ক, থাকা না-থাকায় একটা তফাত তো হয়-ই। মাঠে ধোনির উপস্থিতি একটা বড় ব্যাপার।

প্র: বিরাট কোহলির উপর চাপ পড়ে যেতে পারে? অধিনায়কত্বের চাপে কোনও ভাবে ব্যাটসম্যান বিরাটের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন?
সাকিব: নাহ্। ধোনির পরিবর্ত অধিনায়ক হিসেবে বিরাট সব দিক থেকেই যোগ্য। ব্যাটিং, ক্যাপ্টেন্সি দু’টোর চাপ ও সামলে নেবে। তা ছাড়া অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছে বিরাট।

প্র: সাম্প্রতিকে ভারত বিদেশে ভাল করেনি। না টেস্টে, না ওয়ান ডে-তে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড সব সফরেই হেরেছে। ভারতের স্পিন বোলিং নিয়েও প্রবল সমালোচনা চলছে। বাংলাদেশের উইকেটে অশ্বিনরা সম্মান ফেরাতে পারবেন?
সাকিব: দেখুন, এশিয়া কাপের পিচ যা হয়েছে শুনেছি, তাতে ব্যাটসম্যানদের উপরই ম্যাচের অনেক কিছু নির্ভর করবে। বোলারদের গুরুত্ব নেই, এমন নয়। ওদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশের পিচ সাধারণত ব্যাটসম্যানের ফেভারে যায়। আর ভারতের দুর্বলতা নিয়ে এত কথা বলছেন। আমি তো মনে করি টুর্নামেন্টের ফেভারিট ইন্ডিয়া আর পাকিস্তান।

প্র: আর আপনারা?
সাকিব: ও ভাবে হয় না। ফেভারিটরা সব সময় ট্রফি জিতবে, কোনও মানে নেই। গত বার আমাদের কে ফেভারিট ধরেছিল? কিন্তু আমরা অসাধারণ খেলে ফাইনালে উঠেছিলাম। এ বারও কে আছে, কে নেই তা ভেবে বিচার করা ঠিক হবে না। ক্ষমতা অনুযায়ী খেললে বাংলাদেশ এ বারও বাকিদের চমকে দেবে। আর আমাদের দেশে বিশ্বকাপের পরই যে টুর্নামেন্টকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেটা এশিয়া কাপ। বাড়তি তাগিদটা আপনাআপনিই চলে আসে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement