দুই সুন্দরীর গ্ল্যামার যুদ্ধে বারুদ ফরাসি ওপেন

এক জনের নামের সঙ্গে ‘টেনিসের গ্ল্যামার রানি’ শব্দগুলো জুড়ে গিয়েছে পাকাপাকি। অন্য জনের হাসি থেকে জামার ফ্রিলসবেতেই মজে টেনিস বিশ্ব! এই দুই সোনালি চুল রূপসীর মুখোমুখি কোর্ট-যুদ্ধ নিয়ে অস্ট্রেলীয় ওপেন যে উত্তাল হবে, তাতে আর আশ্চর্যের কী?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২৬
Share:

এক জনের নামের সঙ্গে ‘টেনিসের গ্ল্যামার রানি’ শব্দগুলো জুড়ে গিয়েছে পাকাপাকি। অন্য জনের হাসি থেকে জামার ফ্রিলসবেতেই মজে টেনিস বিশ্ব! এই দুই সোনালি চুল রূপসীর মুখোমুখি কোর্ট-যুদ্ধ নিয়ে অস্ট্রেলীয় ওপেন যে উত্তাল হবে, তাতে আর আশ্চর্যের কী?

Advertisement

বিপণন গুরুরা যে ধরনের মেগা ম্যাচের প্রার্থনায় মানত করে থাকেন, মঙ্গলবারের কোয়ার্টার ফাইনালে মারিয়া শারাপোভা বনাম ইউজিনি বুশার্ড গ্ল্যামার-বিস্ফোরণ ঠিক সেটাই হতে চলেছে!

মাত্র সতেরো বছর বয়সে উইম্বলডন জিতে সাড়া ফেলেছিলেন শারাপোভা। যতটা তাঁর তীক্ষ্ন টেনিস প্রতিভার জন্য সম্ভবত তার চেয়েও বেশি গ্ল্যামারে। আর এ ব্যাপারে কানাডার বুশার্ড যেন রুশ-সুন্দরীর সুযোগ্য উত্তরসূরি! টেনিস এবং ফ্যাশন বোধ, দু’য়েই তুখোড়। গত বছর অস্ট্রেলীয় ওপেনের শেষ চারে পৌঁছে নজর কাড়ার পর ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনালে দারুণ লড়ে হারেন শারাপোভার কাছেই। এর পর উইম্বলডনে রানার্স আপ। ‘জিনি’ হার্টথ্রব হয়ে যান সংবাদমাধ্যমের।

Advertisement

উত্থানের কাহিনিতে এত মিল থাকলেও এ দিন দু’জনে শেষ আটে উঠলেন একদম দু’রকমের পারফরম্যান্স করে। শারাপোভা চিনের শুয়াই পেং-এর চ্যালেঞ্জ অবলীলায় ৬-৩, ৬-০ ঝেড়ে ফেলে বললেন, “দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রায় হারতে হারতে জিতে দ্বিতীয় জীবন পাই। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা তাই স্পেশ্যাল অনুভূতি।” সেখানে রোমানিয়ার ইরিনা-ক্যামেলিয়া বেগুর বিরুদ্ধে বুশার্ড প্রথম সেট ৬-১ জিতেও দ্বিতীয় সেটে ছন্দ হারিয়ে বসেন। শেষে জেতেন ৬-১, ৫-৭, ৬-২। এবং স্বীকার করেন, “স্পষ্ট বুঝছি আরও অনেক প্র্যাক্টিস করতে হবে। আজকের পারফরম্যান্সে আমি হতাশ। কারণ কোর্টে নেমে প্রতিবার নিখুঁত টেনিসই খেলতে চাই।” সঙ্গে জানান মাঝের টয়লেট ব্রেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে রীতিমতো ধমকে বলেছিলেন, “জিনি, জঘন্য খেলছ। এটা বরদাস্ত করা যায় না।” সেই ধমকেই কাজ হয়, দাবি করেছেন উনিশ বছরের কন্যা।

‘জিনি’র সঙ্গে শারাপোভার তুলনা চলে আসে বারবার। যা নিয়ে বিশ্বের দু’নম্বর মাথা ঘামাতে বারণ করছেন নিজের থেকে সাত বছরের ছোট বুশার্ডকে। শারাপোভার কথায়, “বহু দিন পর্যন্ত আনা কুরনিকোভার সঙ্গে আমার তুলনা হত। এখনও মাঝে মাঝে লোকে মিল খোঁজে। শুরুতে খারাপ লাগত কারণ আমি অন্য কারও মতো হতে চাইনি। পরে বুঝি এগুলো খেলা আর খেলার সঙ্গে যুক্ত বাণিজ্যের অঙ্গ।”

বরং বুশার্ডের আক্রমণাত্মক খেলার স্টাইলটা ভাবাচ্ছে শারাপোভাকে। ২০০৮-এর চ্যাম্পিয়ন এ বার মেলবোর্ন পার্কে এসেছেন ব্রিসবেনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এবং যে ফর্মে আছেন তাতে ছ’নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামটা চলে আসতেই পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। শারাপোভা নিজেও কোনও রকম ঢিলে দিচ্ছেন না। বুশার্ডের সঙ্গে এ পর্যন্ত কোর্টের তিন সাক্ষাতের প্রতিটা জিতলেও এখানে রণকৌশল সাজাতে মনে রাখছেন শুধু গত বছরের ফরাসি ওপেন। “ও অসম্ভব আক্রমণাত্মক প্লেয়ার। লাইনের খুব কাছ থেকে খেলে আর প্রতিটা পয়েন্টে আধিপত্য রাখা পছন্দ করে। ধরেই নিয়েছি কোয়ার্টার ফাইনালে কঠিন লড়াই। ফরাসি ওপেনে আমাকে যথেষ্ট চাপে ফেলেছিল। লড়ে ম্যাচে ফিরেছিলাম,” বলেছেন শারাপোভা।

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

বিশ্বের সাত নম্বর বুশার্ডও বারুদের খোঁজে রোলাঁ গারোর দিকেই তাকাচ্ছেন। এবং চ্যালেঞ্জ ছোড়ার সুরে বলেছেন, “ওই ম্যাচটায় জয়ের কাছাকাছি গিয়েও পারিনি। তবে মারিয়াকেও যে চাপে ফেলতে পারি এটা জানি। ফরাসি ওপেনের পর থেকে আমি কিন্তু অনেক উন্নতি করেছি। নিজের শট খেলে ওকে আক্রমণ করব। সে ভাবে খেলাতেই বেশি মজা।” শারাপোভার সঙ্গে সম্মুখ সমরকে অনেকেই ‘মজা’ বলবেন না। তবে তারুণ্যের একটা অন্য আত্মবিশ্বাস থাকে। সেটাতেই ভর দিচ্ছেন জিনি। “বিশ্বাস করি আমার মধ্যে একটা বাড়তি গিয়ার রয়েছে। চাপের মুখে সেটাই লড়ে যাওয়ার শক্তি দেয়। ওটার সাহায্যেই গত বছর অনেক বড় ম্যাচ জিতেছি। তাই বিশ্বাস করি মারিয়ার বিরুদ্ধে আমার সুযোগ রয়েছে।” বদলা চান, বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

শারাপোভার জন্য এ দিনের নেহাতই একপেশে ম্যাচেও অবিরাম গলা ফাটিয়েছেন গ্যালারির ‘মাশা’ ভক্তরা। শারাপোভার পাশপাশি গ্যালারির সেই চাপও মঙ্গলবার সামলাতে হবে বুশার্ডকে। তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ‘জিনি আর্মি’র সদস্যসংখ্যাও রোজ বাড়ছে। যারা মাঝেমাঝেই তাঁদের নায়িকাকে শক্তি জোগাতে তারস্বরে বেসুরো গান গেয়ে থাকেন। সেই দলটার কাছে বুশার্ডের অনুরোধ, “টেলর সুইফ্টের গান একটু প্র্যাক্টিস করে আসুন প্লিজ। আমি পিছিয়ে পড়ছি দেখলেই গাইবেন। শুনে উদ্দীপ্ত হব!”

শারাপোভা অনুরাগীরা কি পাল্টা কোনও রেওয়াজ সেরে রাখছেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement