দুই শিবিরেই এখন স্লোগান ‘চলো মুম্বই’

আইএসএলের শুরুতে প্রথম জনের দল ছুটছিল টাট্টু ঘোড়ার মেজাজে। আর দ্বিতীয় জন তখন লিগ টেবলে তিন পয়েন্টের জন্য খাবি খাচ্ছেন। দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে ছবিটা অবশ্য সম্পূর্ণ অন্য! সিংহের গুহায় সিংহ শিকার করতে এসে এ বার দ্বিতীয় জনের টিম একদম চনমনে মেজাজ আর ফর্মে। আর প্রথম জন তখন জয়ের জন্য উপোসি। ফুটবলারদের চোট-আঘাত সমস্যায় জর্জরিত। দু’জনের সম্পর্কেও চোরাস্রোত সেই দীপাবলির রাত থেকে। মাণ্ডবী তীরে আটলেটিকো দে কলকাতা বনাম গোয়া ম্যাচে উত্তপ্ত পরিস্থিতির পর!

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share:

আইএসএলের শুরুতে প্রথম জনের দল ছুটছিল টাট্টু ঘোড়ার মেজাজে। আর দ্বিতীয় জন তখন লিগ টেবলে তিন পয়েন্টের জন্য খাবি খাচ্ছেন।

Advertisement

দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে ছবিটা অবশ্য সম্পূর্ণ অন্য! সিংহের গুহায় সিংহ শিকার করতে এসে এ বার দ্বিতীয় জনের টিম একদম চনমনে মেজাজ আর ফর্মে। আর প্রথম জন তখন জয়ের জন্য উপোসি। ফুটবলারদের চোট-আঘাত সমস্যায় জর্জরিত।

দু’জনের সম্পর্কেও চোরাস্রোত সেই দীপাবলির রাত থেকে। মাণ্ডবী তীরে আটলেটিকো দে কলকাতা বনাম গোয়া ম্যাচে উত্তপ্ত পরিস্থিতির পর!

Advertisement

চুয়াল্লিশ দিন পরে সেমিফাইনালের আগের সন্ধ্যাতেও যে তার আগুন ওঁদের মনে ধিকিধিকি জ্বলবে তা কে জানত?

যতই শান্তির জল ছেটানোর মতো ওই ঘটনার মধ্যমণি গোয়ার রবার্ট পিরেস বলে যান, “কীসের প্রতিশোধ! আমরা তাকিয়ে মুম্বইয়ের দিকে।” দু’দলের দুই কোচের কথাবার্তায় কিন্তু গরগরে রাগটা উপরে না থাকলেও ভেতরে টেনশনের চোরাস্রোত তো আছেই।

তেলে সান্তানার অন্যতম প্রিয় ছাত্র জিকো যখনই সুযোগ পাচ্ছেন, খোঁচা দিয়ে যাচ্ছেন। “আমরা স্রেফ ফুটবল খেলতে চাই। গত ম্যাচে যেমন ব্রুনো ওদের ফিকরুকে না ছুঁয়েও লাল কার্ড দেখল। পেনাল্টিও পেল ওরা...,” বলার সময় একটা হালকা ব্যঙ্গের ছোঁয়া থাকল। আর আন্তোনিও লোপেজ হাবাস? রাফায়েল বেনিতেজের একদা সহকারির টেনশন অন্য কারণে। চোট-আঘাতে। জিজ্ঞেস করলে চোয়াল শক্ত হচ্ছে, উত্তর আসছে, “আমার দলে কার কার চোট রয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত বলব না। এখনও চব্বিশ ঘণ্টা সময় আছে। সব দেখে সেরা দলটাই নামাব।”

রবিবার কারা এগিয়ে তা নিয়ে বলতে গিয়েও দুই কোচ দুই মেরুতে। জিকো যখন রসিকতা বললেন, “এই কৃত্রিম ঘাসের মাঠে ওরা কিন্তু সাতটা ম্যাচ খেলেছে! আর সেমিফাইনালে তো ওরা সাত জন নিয়ে খেলবে না! আমাদের এগিয়ে থাকার প্রশ্ন আসে কী ভাবে?” হাবাস কিন্তু একই প্রশ্নে গাম্ভীর্যের ঘেরাটোপ থেকে বেরোতে নারাজ। “আমি ঘরে চুপচাপ বসে থাকার চেয়ে চাপ নিতেই বেশি পছন্দ করি। সেমিফাইনালে কেউ ফেভারিট নয়।”

আর খেলার ধরন? পূর্বাভাসে অমিল সেখানেও। জিকো বলে গেলেন, “প্রত্যেক দলের একটা নিজস্ব ঘরানা তো থাকবেই। মোদ্দা কথা হল, ম্যাচটা জিততে হবে।” হাবাস তখন একই প্রশ্নের উত্তরে সামরিক বাহিনীর জেনারেল সুলভ খারুশ ভঙ্গিতে বলে দিলেন, “প্রতি ম্যাচেই আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করি। কোনও দিন তা কাজে দেয়। কোনও দিন তা দেয় না। কাল তো সামনে কঠিন প্রতিপক্ষ।”

কলকাতা আর গোয়ার কোচ যখন এ রকম দুই মেরুতে বসে অঙ্ক কষছেন ফাইনালের পাড়ের কড়ি জোগাড় করার, তখন দু’দলের দুই মার্কি ফুটবলার গার্সিয়া আর রবার্ট পিরেস কিন্তু দেওয়াল লিখনটা পড়ে নিয়েছেন ভাল করেই। তাদের দর্শনেই যা একমাত্র গোয়া-কলকাতার মিলের খোঁজ পাওয়া গেল।

কলকাতা অধিনায়ক গার্সিয়া যখন দার্শনিকের মতো গড়গড় করে বলে গেলেন, “সেমিফাইনালে তো কঠিন প্রতিপক্ষই থাকবে। থাকবে চাপও। এ জায়গা থেকে হয় এগবো না হলে বাড়ি চলে যাব। দেয়ার ইজ নো টুমরো। আমাদের লক্ষ্য২০ ডিসেম্বরের ফাইনাল।”

গোয়া অধিনায়ক রবার্ট পিরেসের গলার রিংটোনও একই। বললেন, “সামনে আর দু’টো ম্যাচ। গোল করে জিততেই হবে। ফাইনাল ডেস্টিনেশন ইজ মুম্বই।”

সহ-প্রতিবেদন: তানিয়া রায় ও সোহম দে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement