খড়্গপুরের বাড়িতে সাফল্যের স্মারক নিয়ে সৌম্য চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
প্রোন রাইফেল শ্যুটিংয়ে রাজ্য স্তরের রূপো জয়ের পরে এ বার জাতীয় স্তরে যাচ্ছেন রেলশহরের সৌম্য চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার কালীপুজো উপলক্ষে খড়্গপুরের সুভাষপল্লির বাড়িতে এসে জাতীয়স্তরে সোনা জয়ের আশা রাখছেন বলে জানালেন নর্থ ক্যালকাটা রাইফেল ক্লাবের এই সিনিয়র শ্যুটার। এ বারই প্রথম রাজ্য স্তরে রুপো পেয়েছেন তিনি। গত ৩ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন’ আয়োজিত ৪৭তম স্টেট শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছিল। এর আগে জুনিয়রে সোনা জিতেছেন বছর পঁচিশের সৌম্য।
২০০৫ সাল থেকে রাইফেল শ্যুটিং শুরু করেন সৌম্য। বাবা বারীন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী মোটর পার্টসের ব্যবসায়ী। মা তাপসীদেবী গৃহবধূ। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকে টিভি দেখে শ্যুটিংয়ে প্রতি আগ্রহ বাড়ে সৌম্যর। পরিবারকেও পাশে পান। ২০০৫ সালে মেদিনীপুরে রাইফেল শ্যুটিং ক্লাবে অলিম্পিক শ্যুটার জয়দ্বীপ কর্মকারের বাবা শান্ত কর্মকারের কাছে তাঁর হাতেখড়ি হয়। সেই সময় প্রোন, এয়ার ও ত্রিপি শ্যুটিং অভ্যাস চলত। সেই বছরই জেলা থেকে মনোনীত হয়ে রাজ্য জুনিয়রে সোনা পান তিনি। পরের বছর ফের রাজ্য স্তরের জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে জেতেন ব্রোঞ্জ। এরপর বেঙ্গালুরুতে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ার জন্য বন্ধ ছিল অনুশীলন। ২০০৯ সালে ফিরে এসে ফের পূর্বাঞ্চলীয়স্তরের জুনিয়র খেলায় ব্রোঞ্জ পান সৌম্য। কিন্তু শিরদাঁড়ার সমস্যায় দু’বছর খেলতে পারেননি।
২০১১ সালে মেদিনীপুর ছেড়ে নর্থ ক্যালকাটা রাইফেল ক্লাবে যোগ দেন তিনি। এখন কলকাতাতেই থাকেন। এশিয়াড খেলোড়ার কুহেলি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে চলে অনুশীলন। ২০১২সাল থেকে পর পর দু’বছর জাতীয়স্তরে উত্তীর্ণ হয়েছে সৌম্য। তবে পিঠে সমস্যা থাকায় আপাতত প্রোন রাইফেলই খেলছেন তিনি। এ বছর সরাসরি রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ সৌম্য ৫০ মিটার প্রোন রাইফেলে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে রুপো জয় করেছেন। আয়োজক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেবকুমার সামন্ত বলেন, “আমাদের ৫৫টি ইভেন্টে খেলা হয়েছিল। তার মধ্যে প্রোন মেল সিনিয়রে সৌম্য রুপো পেয়েছে। তবে গত বছরই জাতীয়স্তরে উত্তীর্ণ হওয়ায় সৌম্যকে আর প্রাক্ জাতীয়স্তরে খেলতে হবে না। সরাসরি জাতীয়স্তরে খেলতে পারবেন তিনি।”
সৌম্যর সাফল্যে খুশি খড়্গপুরবাসী থেকে পরিজনেরা। তাঁর মা তাপসীদেবী বলেন, “অনুশীলনের চাপে বাড়িতে আসতে পারে না। কালীপুজো উপলক্ষে এসেছে। আশা করব জাতীয়স্তরে জিতবে।” খড়্গপুরের বাড়িতে চার দিকে সাঁটানো অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ান অভিনব বিন্দ্রার ছবি। সৌম্যর কথায়, “আমার মা-বাবার সমর্থন সাফল্যের কারণ। কোচদের পরিশ্রমও রয়েছে। ইচ্ছে আছে অভিনবের পর্যায়ে পৌঁছনোর। তার আগে এখন লক্ষ্য জাতীয় স্তরে সোনা।”