‘বাস্তুঘুঘু’ সরানোর উদ্যোগ

গেমসে কেন খারাপ ফল, সভা ডাকল ক্রীড়া দফতর

জাতীয় গেমসে বাংলার ফল আশানুরূপ নয় কেন, বিওএ কর্তাদের কাছে জানতে চায় রাজ্য সরকার। সে জন্য সোমবার সভা ডাকল ক্রীড়া দফতর। সেখানে বিভিন্ন খেলার কর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে সমস্যাটা ঠিক কোথায়? কেন ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যের চেয়েও বাংলার ফল খারাপ? এ রাজ্যের খেলাধুলায় যা অভিনব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৩০
Share:

জাতীয় গেমসে বাংলার ফল আশানুরূপ নয় কেন, বিওএ কর্তাদের কাছে জানতে চায় রাজ্য সরকার। সে জন্য সোমবার সভা ডাকল ক্রীড়া দফতর। সেখানে বিভিন্ন খেলার কর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে সমস্যাটা ঠিক কোথায়? কেন ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যের চেয়েও বাংলার ফল খারাপ? এ রাজ্যের খেলাধুলায় যা অভিনব।

Advertisement

‘ভারতের অলিম্পিক’ জাতীয় গেমসে গত বছর বাংলা পেয়েছিল উনিশতম স্থান। ক্রীড়া কর্তাদের অভিযোগ ছিল অন্য রাজ্য প্রচুর পুরস্কার অর্থ দেয় বলে এ রকম হচ্ছে। সেই দাবি মেনে হরিয়ানা, মণিপুর কেরল, পঞ্জাবের মতো সোনা পেলে পাঁচ লাখ, রুপো পেলে তিন লাখ এবং ব্রোঞ্জ পেলে দু’লাখের নিয়ম চালু হয়েছে এ বার। তাতেও সর্বভারতীয় র্যঙ্কিংয়ে পনেরোর বেশি উঠতে পারেনি রাজ্য। জুটেছে মাত্র চারটি সোনা। এর মধ্যে দুটো ব্যক্তিগত। নেটবলের মতো অচেনা খেলা থেকে সোনা এসেছে দলগত বিভাগে। সবথেকে হতাশ করেছে টেবল টেনিস, শু্যটিং, জিমন্যাস্টিক্স, ফুটবলের মতো খেলা। বিওএ প্রেসিডেন্ট অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বললেন, “আমার কেরলে গিয়ে মনে হয়েছে অনেক খেলোয়াড়ই মন দিয়ে বাংলার জন্য খেলেনি। চেষ্টা করেনি নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার।”

রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রক এখন মন্ত্রীহীন। ক্রীড়া সচিব রাজেশ পাণ্ডেই তাই সভা ডেকেছেন। তবে সেখানে ক্রীড়া দফতরের দেখভালের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অবশ্য থাকবেন। অরূপবাবু বললেন, “কেন খারাপ ফল হল সেটা তো জানতে চাইবই। যারা ভাল ফল করেছে তাদের সম্পর্কেও জানতে চাইব।” ক্রিকেট এবং ফুটবলের বাইরে অন্য প্রায় সব খেলার অভিভাবক বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন বা বিওএ। কিন্তু বহু দিন ধরে সেখানে ‘বাস্তুঘুঘুর বাসা’। বছরের পর বছর কর্তারা অ্যাসোসিয়েশনগুলোর পদ দখল করে রাখায় প্রতিটি সংস্থাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ। দল গঠনে যাঁর প্রভাব পড়ে। ফলও খারাপ হয়। প্রকৃত প্রতিভাও উঠে আসে না। যেমন টেবল টেনিসেই তিনটি সংস্থা রাজ্যে। খো খো, জিমন্যাস্টিক্স, সাঁতারের মতো খেলায় নানা ঝামেলা। বিওএ কর্তারা ভোটের জন্য ‘বৃদ্ধ’ কর্তাদের ঘাঁটাতে সাহস করেন না। মৌচাকে ঢিলও মারতে চান না। কিন্তু এ বার সেটা বদলাচ্ছে। বিওএ প্রেসিডেন্ট খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাদা বলেই সম্ভবত। ফলে সোমবার ক্রীড়াদফতরের কাছে প্রস্তাব আকারে যা তুলে দেওয়া হচ্ছে তাতে মৌচাকে ঢিল পড়তে পারে। বিওএ সচিব চন্দন রায়চৌধুরী বলছিলেন, “সব সংস্থার প্রধানদেরই ওই সভায় ডেকেছে ক্রীড়া দফতর। ১৪টির মতো প্রস্তাবের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে এক হয়ে যাতে চলতে পারে সব সংস্থা সেটা দেখতে সরকারকে অনুরোধ করেছি।” দানা গিয়েছে ক্রীড়া দফতরের দেখভাল করা মন্ত্রীও চাইছেন সংস্থাগুলো এক হয়ে কাজ করুক।

Advertisement

বিওএ সূত্রের খবর, সভায় যে যে প্রস্তাবগুলো রাখা হবে তার মধ্যে আছে এক) বিভিন্ন খেলার জাতীয় এবং রাজ্য ইভেন্টগুলো কোথায়, কখন হবে তার একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করা। দুই) প্রত্যেক খেলার যে যে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ আছে তাদের নাম ক্রীড়া দফতর, স্পোর্টস কাউন্সিল এবং বি ও এ-কে জানাতে হবে। যাতে তাদের বিশেষভাবে সাহায্য করা যায়। তিন) রাজ্য সংস্থাগুলো গত বছরগুলোতে সেই খেলার উন্নতির জন্য কী করেছে তা বিস্তারিত ভাবে জানাক। চার) পারফরম্যান্স অনুযায়ী সাহায্যের নিয়ম চালু। পাঁচ) খেলোয়াড়দের জন্য আরও চাকরির সুযোগ।

এ সব বিষয় আলোচনা করা ছাড়াও কবে জাতীয় গেমসের পদকজয়ীদের মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে। পুরসভার নির্বাচনের ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কথা সামনের সপ্তাহেই। ফলে নির্বাচন না মিটলে পুরস্কারের অনুষ্ঠান হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement