ভারতের শুরুটা দুর্দান্ত হল! এ ধরনের বড় টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ যে কোনও দলের জন্য সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। আর এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের গ্রুপে যে রকম শক্তিশালী সব প্রতিপক্ষ রয়েছে, তাতে প্রতিটা জয়-ই ফারাক গড়ে দেবে। সবচেয়ে বড় কথা, জিতে শুরু করতে পারলে এক ঝটকায় দলের উপর থেকে চাপ অনেকখানি কমে যায়। ভারতের ক্ষেত্রে শুক্রবারের জয়টা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে টিমকে টুর্নামেন্টে জাঁকিয়ে বসতে সাহায্য করবে। পরের চ্যালেঞ্জগুলো ঠান্ডা মাথায় মোকাবিলা করতে পারবে ধোনিরা।
এমনিতে পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে ধারাবাহিক দলগুলোর একটা। এই ফর্ম্যাটের বিশ্বকাপেও ওদের রেকর্ড বরাবর ভাল। সেই টিমকেই শুক্রবার সব বিভাগে উড়িয়ে দিল ভারত।
ধোনিদের সামনে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটা কথা মনে রাখা জরুরি, এই ফর্ম্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু পাকিস্তানের চেয়ে শক্তিশালী। তার উপর এখানে সব ক’টা প্রস্তুতি ম্যাচ ওরা দারুণ খেলেছে। দলটার ভারসাম্যও ভাল। তবু বলতেই হচ্ছে, বল যেখানে ঘুরছে, তেমন পিচে ধোনির দলের সঙ্গে টক্কর দেওয়া সহজ হবে না। গত বছর ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কথাই ধরুন। বল স্পিন করেছিল এবং টুর্নামেন্টে ভারত একটাও ম্যাচ হারেনি। আসলে ঘূর্ণি পিচে ভারতীয় বোলিং আক্রমণ নিয়মিত উইকেট তুলে নিয়ে ধারালো হয়ে ওঠে। প্রতিপক্ষের মনে আতঙ্ক ধরিয়ে দেওয়া যায়। বাংলাদেশের পিচেও বল ঘুরছে। যে কারণে এই টুর্নামেন্টে ভারতের সম্ভাবনা নিয়ে আমি আশাবাদী।
ওয়েস্ট ইন্ডিজেও অবশ্য সুনীল নারিন আর বদ্রীর মতো স্পিনার আছে, যারা এখানকার পিচ আর পরিবেশে বল করা উপভোগ করবে। কিন্তু ভারতকে চাপে ফেলতে চাইলে শুধু তাতে-ই হবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অন্য খেলা খেলতে হবে। অনেক কিছু নির্ভর করছে ভারতীয় বোলারদের বিরুদ্ধে গেইলদের ব্যাটিং কত দূর সফল হতে পারে, তার উপর। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে অমিত মিশ্র ছন্দে আছে। সঙ্গে ওর বোলিংয়ে যত বৈচিত্র আছে, তাতে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারে। পাকিস্তান ম্যাচের মতো রবিবারও অমিত বিপজ্জনক হয়ে উঠলে অবাক হব না। তবে পাক ব্যাটিং লাইন আপের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পার্থক্য স্যামির টিমে গেইল-সহ বেশ কয়েক জন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান আছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে তিন স্পিনার খেলানোটা ধোনির দারুণ সিদ্ধান্ত ছিল। মেনে নিচ্ছি, ওর এই অদ্ভুত সিদ্ধান্তের পিছনে যুক্তিটা আমি নিজেও প্রথমে ধরতে পারিনি। কিন্তু উইকেটে বল যদি শুক্রবারের মতো ঘোরে, তা হলে তিন স্পিনারের কম্বিনেশন কিন্তু আবার ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। ধোনির ক্যাপ্টেন্সি দারুণ হচ্ছে। কখনও কখনও বিশ্রাম ব্যাপারটা আপনাকে চাঙ্গা করে দেয়। ক্রিকেটের পরিবেশ থেকে দূরে থাকাটা সাহায্য করে। ধোনিরও সেটাই হয়েছে। এশিয়া কাপ না খেলে বিশ্রাম নেওয়ায় নিজেকে যেন নতুন করে অবিষ্কার করার সময় আর সুযোগ পেয়েছে ও। তা ছাড়া ধোনি বরাবরই সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে খেলতে বেশি পছন্দ করে। অনেক বেশি সক্রিয়ও। আগেই লিখেছিলাম যে, প্রস্তুতি ম্যাচগুলোয় ভারতের খেলার মধ্যে অনেক ক’টা ইতিবাচক ব্যাপার দেখেছি। ধোনিরা এ ভাবে খেলে যেতে পারলে বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠবে!