কলকাতায় ফের কোচিং করানোর জন্য ফিরতে চান। কিন্তু এখনও কোনও প্রস্তাবই পছন্দ হয়নি ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের। বৃহস্পতিবার এক ই-মেল সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ কোচ জানিয়ে দিলেন, “কলকাতার একটি ক্লাব থেকে আমার কাছে কোচিং করানোর প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু সেই প্রস্তাব আমার পছন্দ নয়।” বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বড় অঙ্কের টাকা চাইছেন মর্গ্যান। সে জন্যই প্রস্তাবে খুশি নন।
বাজারে উড়ছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, রাংদাজিদ এবং গোয়ার একটি টিম তাঁকে চাইছে। মেলে প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল কোচ অবশ্য জানিয়েছেন, “কলকাতায় কোচিং করতেই বেশি আগ্রহী আমি।” তা হলে ইস্টবেঙ্গল না মোহনবাগান? মর্গ্যান খোলসা করে কিছু বলেননি। তবে লিখেছেন, “ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তা, ফুটবলার এবং সমর্থকদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। ওই ক্লাবের বহু স্মৃতি আমার কাছে এখনও টাটকা।’’ তা হলে কি ইস্টবেঙ্গল থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে? ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য পুরোপুরি বিষয়টি উড়িয়ে দেননি। “ট্রেভরের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। ওর সঙ্গে কথাও হয়। আমি তো গত বারও ওকে চেয়েছিলাম সবাই জানে। ও এলে আমি খুশি হব। কিন্তু আমাদের ক্লাবে সবই আলোচনার ভিত্তিতে হয়। এখনও সরকারি ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি বর্তমান কোচ আর্মান্দো আই লিগে ভাল ফল করেন তা হলে তো ও-ই থাকবে। না হলে তখন বদলের কথা ভাবতে হবে।” ফুটবল-সচিবের ইঙ্গিতপূর্ণ এই মন্তব্যের পর মনে হচ্ছে যে মর্গ্যান ‘প্রস্তাব পছন্দ হয়নি’ শব্দগুলো ইস্টবেঙ্গলকে উদ্দেশ্য করেই বলা।
জানা গিয়েছে, মর্গ্যানকে আনার ব্যাপারে আর্থিক বিষয়টি অনেক বড় ফ্যাক্টর। লাল-হলুদ ফুটবল সচিব বললেন, “টাকা-পয়সা কম আসছে। সে জন্যই কেউ বেশি টাকা চাইলে সমস্যা।” মর্গ্যানকে না পাওয়া গেলে ইউনাইটেড কোচ এলকো সাতোরির সঙ্গে কথা বলা হবে। এলকোর সঙ্গে করিম বেঞ্চারিফার নামও শোনা যাচ্ছে। করিমকে নাকি বাজিয়েও দেখা হচ্ছে।
গত বছর করিমের জায়গায় মর্গ্যানকে প্রায় নিয়েই ফেলেছিল মোহনবাগান। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পঁচিশ হাজার ডলার ট্রান্সফার ফি দিতে হবে বলে পিছিয়ে যান বাগান কর্তারা। এ বারও বাগানের নজরে আছেন মর্গ্যান। কিন্তু সচিব অঞ্জন মিত্র মুম্বইয়ের হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ভেন্টিলেশনে থাকায় সবুজ-মেরুন কর্তারা এই মুহূর্তে ব্যস্ত। তাই তাঁরা কোচ এবং ফুটবলার নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামানোর অবস্থায় নেই। অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত মুম্বই থেকে ফোনে বললেন, “আমরা সচিবকে নিয়ে ব্যস্ত। তাঁর ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে মর্গ্যানকে কোনও মেল আমরা এখনও পাঠাইনি।”
মর্গ্যান এ দিন আর্মান্দোর বিস্ফোরক মন্তব্যের মধ্যে তাঁকে টেনে আনা নিয়েও মন্তব্য করেছেন। বুধবার আর্মান্দো বলেছিলেন, “মেহতাব মর্গ্যানের ছায়া থেকে বেরোতে পারেনি। মর্গ্যান ওকে ব্লকার হিসেবে খেলাত, ওই জায়গাটার বাইরে খেলতে পারে না।” যার উত্তরে পাল্টা মর্গ্যান বলে দেন, “মেহতাব ইউটিলিটি ফুটবলার। ওকে আমি যে জায়গায় খেলাতাম সেটাই সেরা জায়গা বলে মনে করি। আর্মান্দো কী করবেন তা নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।” আর যাঁকে নিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমানের চাপানউতোর, সেই মেহতাব হোসেন গোয়া থেকে হাসতে হাসতে ফোনে বললেন, “আমার কোনও মন্তব্য নেই।” এ দিকে বুধবার বাংলাদেশ ম্যাচে চোট পেয়ে প্রায় দশ দিনের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেলেন মেহতাব হোসেন। মহমেডান ম্যাচে খেলার তাঁর আর কোনও সম্ভাবনা নেই। এর পরও আই লিগের বেশ কয়েকটি ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।