অভিনব ঘটনা মোহনবাগানে।
ময়দানে যা কখনও হয়নি, শুক্রবার শতবর্ষপ্রচীন ক্লাবে তাই হল! নজিরবিহীন ভাবে কর্মসমিতির সভায় ডেকে পাঠানো হল সুভাষ ভৌমিককে। নতুন মরসুমের দল তৈরি নিয়ে সেখানে রীতিমতো ব্যাখ্যা দিতে হল বাগানের নতুন টিডিকে।
দল তৈরি বা বিদেশি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সব ক্লাবেই সাধারণত ফুটবল সচিব বা কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসেন কোচেরা। সেটাই রীতি। কিন্তু হঠাৎ কেন এই উলাটপুরাণ? সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু ব্যাখ্যা দিলেন, “এটাই তো পেশাদারিত্ব! ইউ বি-র সঙ্গে সভার পর কর্মসমিতিতেও টিডিকে ডাকা হয়েছিল। উনি দল কী ভাবে করছেন তা বলার জন্য। সব কিছুরই তো কোনও না কোনও দিন শুরু হয়। আমরা শুরু করলাম। সবাই জানুক টিডি কোন ভাবনায় দল গড়ছেন।” কিন্তু ঘটনা হল, চার বছর ট্রফি ঢোকেনি বাগানে। তার উপর সামনে ক্লাবের নির্বাচন। ফলে বাগান কর্তারা কোনও ঝুঁকি এ বার নিতে চান না। এত দিন তিন-চার জন মিলেই দল তৈরি করতেন তাঁরা। কোচ নির্বাচন হত টিম তৈরির পর। ট্রফি খরা কাটাতে এ বার সেই ধারা বদলেছে। টেকনিক্যাল কমিটির তিন সদস্য এবং টিডির পরামর্শ নিয়েই দল তৈরি করে দিচ্ছেন কর্তারা।
এ দিন কর্মসমিতির সভায় উপস্থিত তিন বারের আই লিগ জয়ী কোচ সুভাষ বলেন, “পঁচাশি শতাংশ টিম তৈরি। ভাল টিম করার চেষ্টা করছি। চার্চিলের কিছু ফুটবলার নিতে চাই। কিন্তু চাচির্ল নিয়ে ফেডারেশন কী সিদ্ধান্ত নেয় তার উপর নিভর্র করছে সব কিছু।” বিদেশি নিয়ে সুভাষ সভায় বলে দেন, “আমার কাছে অনেক বায়োডেটা এসেছে। তার মধ্যে একজন সেন্ট্রাল মিডিও এবং ডিফেন্ডার বেছে নেব। এঁদের মধ্যে একজন আইকন ফুটবলার হবে। তবে প্রি সিজন ট্রায়াল দেখে সিদ্ধান্ত নেব।” সুভাষের দলের অন্য দুই বিদেশি অবশ্য আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছে-- কাতসুমি এবং আক্রম। বাগান সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চার বিদেশি নিয়েই আইএফএ শিল্ড শুরু করবে।
আগের বারের টিমের প্রায় অর্ধেক ফুটবলারকে এ বার ছেঁটে ফেলেছে বাগান। এ দিন বাতিল হলেন কিপার সন্দীপ নন্দী। দলে নেওয়া হচ্ছে না রহিম নবি, নির্মল ছেত্রী, সঞ্জু প্রধানদের মতো পরিচিত ফুটবলারকেও। তবে জেজে এবং রাভাননকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। সভায় ঠিক হয়, এ বার নিজেদের মাঠেই কলকাতা লিগের ম্যাচ খেলবে মোহনবাগান। সভার পর সহ-সচিব বললেন, “অসম্পূর্ণ গ্যালারির কাজ শেষ হয়ে যাবে জুলাইতে। আন্তর্জাতিক মানের চেয়ার বসছে। আশা করছি মোহনবাগান দিবসে এর উদ্বোধন করতে পারব।” ক্লাবের ১২৫ বছর পূর্তি উৎসব পালনের জন্য একটি কমিটি তৈরি হয়। চেয়ারম্যান করা হয় রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী ও ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। জলসা থেকে আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ সংগঠন—ভাবনায় অনেক কিছু থাকলেও তা নিয়ে মুখ খোলেননি কেউ-ই। ক্লাবের জার্সি-সহ নানা জিনিসপত্র বিপননের জন্যও একটি কমিটি হয়।