ঘিঞ্জি গলিতে তেতলা বাড়ির একতলার ঘুপচি ঘরে টিভিতে চলছে আইপিএলের ম্যাচ। বড় টেবিল ঘিরে বসে জনা বারো যুবক। ধোপদুরস্ত পোশাক। কানে মোবাইল। ফোনে কথা বলার ফাঁকে ঘনঘন লিখে চলেছে কাগজে। টেবিলের ছড়ানো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।
রাজস্থান রয়্যালস আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ম্যাচ ঘিরে জমিয়ে চলছে জুয়ার আসর। আচমকা পুলিশ দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিল পুরো দলটাই। তার পরেই পড়ি-কি-মরি করে দৌড়। দু’জন চম্পট দিলেও পুলিশের জালে ধরা পড়ে ন’জন। তদন্তকারীরা জেনেছেন, আইপিএল বেটিং চক্রে জড়িত ‘জুনিয়র কলকাতা’ সম্প্রতি এই শহরে এসেছে। তবে তার সঙ্গে শনিবার জুয়ার আসরে ধৃত বা পলাতকদের সম্পর্ক আছে কি না, সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
পুলিশি সূত্রের খবর, শনিবার রাজস্থান রয়্যালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর খেলা শুরুর পরে পরেই পুলিশের গুন্ডা দমন শাখায় খবর আসে, পোস্তার ১ নম্বর বৈশাখ স্ট্রিটের একটি বাড়িতে ক্রিকেট-জুয়ার আসর বসেছে। ১৫ গোয়েন্দার একটি দল সেখানে হানা দিয়ে ন’জনকে ধরে। ধৃতদের সকলেই ব্যবসায়ী। পাওয়া গিয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা, বেটিং শিট, ১১টা মোবাইল, সেটটপ বক্স। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের মধ্যে মোতি জৈনের বাড়ি কোচবিহারে। তার কথাবার্তায় অসঙ্গতি রয়েছে। তাকে জেরা করে আরও তথ্য মিলবে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
পুলিশের দাবি, জয়পুর, মুম্বই, হায়দরাবাদের বিভিন্ন চক্রের সঙ্গে তাদের নিয়মিত লেনদেন হয় বলে ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে। এক তদন্তকারী বলেন, “দুবাই বেটিং চক্রের সঙ্গে ধৃতদের যোগাযোগ আছে কি না, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে এই বিষয়ে কিছু সূত্র মিলেছে।”
গত বছর মে মাসেও আইপিএল চলাকালীন কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় হানা দেন গোয়েন্দারা। সেই সময় অজিত সুরেখা নামে বেটিং চক্রের এক চাঁই-সহ আট জন ধরা পড়ে। গোয়েন্দারা জানান, এ বারেও আইপিএল-কে ঘিরে বড়বাজার, পোস্তা, একবালপুর এবং হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনায় বেটিং চক্র সক্রিয়।