জাপানের চাই
বিশ্বকাপ আর ৪৩ দিন দূরে। এবং মাসদেড়েক আগে থাকতেই ব্রাজিলের হোটেলগুলোতে বিভিন্ন দেশের ফুটবল ফেডারেশনের কিম্ভূত সব অনুরোধ আসা শুরু হয়ে গেল!
দিদিয়ের দেশঁ-র ফ্রান্স দল তাদের প্রতিটা ঘরের বাথরুমে ‘বার সাবান’ নিষিদ্ধ করে দিতে বলেছে। শুধু লিকুইড সাবানের বোতল। সাবানের ‘বার’ নৈব নৈব চ কেন? রিবেরি-রা টিম হোটেলের বাথরুমের মেঝেতে পা পিছলে পড়ে বিশ্বকাপটা বরবাদ করতে চান না!
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জন্য ব্রাজিলের প্র্যাকটিস মাঠ, হোটেল, রাস্তাঘাট সর্বত্র চার জন নিরাপত্তারক্ষী সর্বদা মোতায়েন রাখতে ফিফার কাছে অনুরোধ করেছে পতুর্গাল। পর্তুগালের বাকি দলের জন্য থাকবে মাত্র দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। সিআর সেভেন বলে কথা! এক জন মহাতারকার চার বডিগার্ড। বাকি ২২ ফুটবলারের নিরাপত্তার জন্য মাত্র দু’জন রক্ষী!
ফ্রান্স তাদের টিম হোটেলের বাথরুমে সাবানের ‘বার’ যতই বাতিল করে দিক না কেন, ইকুয়েডরের ফুটবলারদের পা পিছলে আছাড় খাওয়ার ব্যাপারে কোনও তোয়াক্কা নেই যেন! কারণ, তাদের ফেডারেশন হোটেল কর্তৃপক্ষকে বলে দিয়েছে, “আমাদের প্রতিটা ফুটবলারের ঘরে রোজ দিন কলার কাঁদি রাখবেন। ইকুয়েডর ফুটবলাররা কলা খেতে বড্ড ভালবাসে।”
জাপান, অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে কি না তা নিয়ে যতই সন্দেহ থাক, মেগা টিমগুলোর মতো সুবিধে-অসুবিধের ফিরিস্তি জানাতে কিন্তু পিছপা নয় এশিয়া থেকে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া এই দু’দেশ। যেমন জাপান ফুটবলার পিছু একটা করে বাথটাবের আর্জি জানিয়ে রেখেছে উদ্যোক্তা ব্রাজিলের কাছে। যাতে জাপানি প্লেয়াররা ঝটপট ক্লান্তি কাটিয়ে তরতাজা হয়ে উঠতে পারেন। অস্ট্রেলিয়া দলের বরং দাবি একেবারেই মামুলি। স্যর ডনের দেশের ফুটবল টিম চায়, বিশ্বকাপের সময় প্রতিদিন যেন তাদের টিম হোটেলের ঘরে-ঘরে সংবাদপত্র দেওয়া হয়। এক দিনও বাদ না পড়ে।
ফরাসি-অনীহা
বিশ্বকাপে নিজেদের দলের জন্য ‘যেন থাকেই’-এর শেষ নয় এখানেই। সংগঠক ব্রাজিলের কাছে কোনও দেশের জাতীয় ফুটবল দল চেয়েছে হোটেলের ঘরে হাই-স্পিড ইন্টারনেট, কেউ চেয়েছে নিজ দেশের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রসারণ, কেউ বা আবার বিশ্বের নামী অন্তত দশটা দৈনিক সংবাদপত্র।
আরও আছে। আলজিরিয়া ফুটবল সংস্থা থেকে ব্রাজিলে অনুরোধ গিয়েছে, তাদের ফুটবলারদের প্রতিটা ঘরের টেবিলে কোরান থাকা চাই অবশ্যই। সুয়ারেজ-কাভানির উরুগুয়ের আবার চাই টিম হোটেলের ঘরে নিঃশব্দ এয়ারকন্ডিশনার। ঘর ঠান্ডা রাখতে গিয়ে এতটুকু নৈশব্দ্য ভঙ্গ হলে চলবে না!
বিশ্বকাপে প্রতিবার সবচেয়ে মিডিয়া-হাইপ নিয়ে যারা খেলতে যায়, সেই ইংল্যান্ড দলের কোনও আব্দার নেই? না, এখনও রয় হজসনের দল কিছু ফাঁস করেনি। তবে তা নিয়েও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোয় ঠাট্টা-মস্করা চলছে। জনৈক ফুটবলপ্রেমীর টুইট, ‘ওয়েন রুনির হোটেলের ঘরে কোনও যুবতী হাউসকিপারের প্রবেশ নিশ্চয়ই নিষিদ্ধ করে দেবেন ইংল্যান্ড কোচ হজসন!’