উগা ওপারাকে নিয়ে ডামাডোল কাটতে না কাটতেই ইস্টবেঙ্গলে শুরু হয়ে গেল নতুন এপিসোড—এডে চিডি বিতর্ক!
শনিবার ম্যাচ শুরুর আগে ওয়ার্ম আপের সময় হঠাৎ দেখা যায় দলের সঙ্গে নেই লাল-হলুদের নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার। ঘটনাটা বেশ অপ্রত্যাশিতই। টিম লিস্টে ১৮ জনের মধ্যেও নেই চিডির নাম! তীব্র গুঞ্জন ছড়ায়, হঠাৎই নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার কি ‘বিদ্রোহী’ হলেন?
চিডির ও আর্মান্দোর মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে, কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। মাঝে মাঝে তা প্রকাশ্যেও এসে পড়েছে। তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, এ দিনের এই ঘটনা কি চিডি ও কোচের এই মনোমালিন্যরই জের?
কর্তারা বলতে শুরু করেন, চিডির পুরনো চোটের জায়গায় হঠাৎ ব্যথা বাড়ায় এ দিন নিজেই ডার্বি খেলতে চাননি। “সকালে মেসেজ করে চিডি আমাকে জানায়, ও একশো শতাংশ দিতে পারবে না। এর পরও ম্যাচটা খেলার জন্য চিডিকে বারবার অনুরোধ করি। ও রাজি হয়নি। কোনও ফুটবলার চোট বলে নিজেই খেলতে না চাইলে আমি কী করতে পারি?” সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা বলার সময় শান্ত আর্মান্দোর চোখেমুখে ক্ষোভের আগুন।
যে ফুটবলার ম্যাচের আগের দিন রাতেও ফুটছিলেন ডার্বিতে গোল করার জন্য, রাত পোহাতে না পোহাতেই তাঁর চোটের ব্যথাই বা নতুন করে বাড়ল কী ভাবে? চিডির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
চিডির এ হেন আচরণের পর কি কোনও শাস্তি হবে? উগা ওপারা কোচকে না জানিয়ে দেশে চলে গিয়েছিলেন। তার পরও কোনও শাস্তি হয়নি তাঁর। বরং প্রায় এক মাস পর দলের সঙ্গে মাত্র এক দিন অনুশীলন করেই ডার্বির আঠারো জনের দলে নাম লিখিয়ে ফেলেন। এ দিন ম্যাচের পর অবশ্য দেখা গেল চিডির উপর বেশ বিরক্ত লাল-হলুদের অধিকাংশ কর্তাই। শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, “না খেলতে পারলেও দলের পাশে থাকতে চিডির মাঠে আসা উচিত ছিল।” এর সঙ্গেই দেবব্রতবাবুর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “ওর চোটের জায়গায় স্ক্যান করে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। শুক্রবার প্র্যাকটিসও করেছে। ওর চোটের কী অবস্থা, আগে দেখি। তার পর সিদ্ধান্ত নেব।”
চিডি নেই। তাই জেমস মোগার ওপরই এ দিন ভরসা করেছিলেন আর্মান্দো। গোল করে কোচের মান রাখেন তিনি। তবে ড্র হয়ে যাওয়ায় তিনি হতাশ। গুরপ্রীত সিংহ যে ভাবে গোল হজম করেছেন, তাতে তাঁকে কিছুটা ক্ষুব্ধ মনে হল। ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় কোচের কাছে ক্ষোভ উগরে দিতেও দেখা গেল মোগাকে। এত কিছুর পরও আই লিগ হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে, মানতে রাজি নন মোগা। উল্টে বলেন, “এখনও অনেক ম্যাচ বাকি। আমাদের আশা আছে।” মোগার মত একই কথা বলছেন অর্ণব মণ্ডল ও দলের অন্যান্য ফুটবলাররাও।
পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচ অবশ্য ফুটবলারদের মতো অলীক স্বপ্ন দেখতে নারাজ। বরং বাস্তবের জমিতে দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, “এখন চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য নয়, লিগে ভাল জায়গার জন্য লড়াই আমাদের।”